শিরোনাম

South east bank ad

গ্রামীণ ব্যাংকে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন

 প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ব্যাংক

গ্রামীণ ব্যাংকে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন

গ্রামীণ ব্যাংকের পর্ষদ গঠনে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন এসেছে। সরকার তার মালিকানা ২৫ থেকে কমিয়ে এনেছে ১০ শতাংশে, বেড়েছে ঋণগ্রহীতাদের (শেয়ারহোল্ডার) মালিকানা। ব্যাংকের এমডির বয়স বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকটির ১৩ সদস্যবিশিষ্ট নতুন পরিচালনা পর্ষদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যিনি গ্রামীণ অর্থনীতি কিংবা নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হবেন অথবা এসব বিষয়ে গবেষণায় অভিজ্ঞ হবেন। তিনি হবেন গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ডের একজন মনোনীত পরিচালক।

গ্রামীণ ব্যাংক আইন, ২০১৩ সংশোধন করে সরকার এসব পরিবর্তন এনেছে। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর গেজেট প্রকাশ হয়েছে সোমবার।

নতুন অধ্যাদেশে পর্ষদের বাকি দুটি মনোনীত পদের একটি নির্ধারিত হয়েছে নারী সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদের (সিএ) জন্য এবং অন্যটি একজন নারী অধিকারবিষয়ক গবেষক বা আইনজীবী কিংবা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নারী নেত্রীর জন্য। এ তিন মনোনীত পরিচালককে মনোনয়ন দেবেন বাকি নয়জন নির্বাচিত পরিচালক, যারা সবাই গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণগ্রহীতা (শেয়ারহোল্ডার)। আরেকটি পদে সরকার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে একজন পরিচালক নিয়োগ দেবে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে সরকারের সদস্য বা পরিচালক ছিলেন এতদিন তিনজন।

আগে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিয়োগের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকলেও নতুন অধ্যাদেশ পাস হওয়ার পর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন পর্ষদ সদস্যদের মধ্য থেকে। এমনকি দায়িত্বে অক্ষম হলে চেয়ারম্যানের স্থলাভিষিক্ত কাউকে মনোনয়নের ক্ষমতাও থাকছে না সরকারের হাতে। পর্ষদ সদস্যদের এ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

নতুন আইন অনুসারে, ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকার ৯০ শতাংশ মালিকানা এখন ঋণগ্রহীতা বা শেয়ারহোল্ডারদের হাতে যাবে, যেটি এতদিন ছিল ৭৫ শতাংশ। আর সরকারের অংশীদারত্ব নেমে আসবে ১০ শতাংশে, যা আগে ছিল ২৫ শতাংশ।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, পরিচালকদের মেয়াদ আগেও তিন বছর ছিল, এখনো তা-ই আছে। একজন পরিচালক পরপর দুই মেয়াদে পরিচালক থাকতে পারবেন। তিন বছরের বিরতি দিয়ে আবার তাদের পরিচালক হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। অধ্যাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির বয়সও সর্বোচ্চ ৬৫ বছর করা হয়েছে, এতদিন যা ছিল ৬০ বছর।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুই সপ্তাহ পর গত ২০ আগস্ট গ্রামীণ ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান একেএম সাইফুল মজিদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তার পরিবর্তে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের শিক্ষক আবদুল হান্নান চৌধুরীকে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। আবদুল হান্নান চৌধুরী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েই গ্রামীণ ব্যাংক আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেন, যা এতদিন পর অধ্যাদেশ আকারে জারি হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ গ্রামীণ ব্যাংক (অধ্যাদেশ) সংশোধনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়। অনুমোদনের কথা জানিয়ে ওইদিন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের জানান, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে রাজনৈতিকভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। তখন গ্রামীণ ব্যাংককে তার দর্শন থেকে অনেকাংশে সরিয়ে সরকারি নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়। আগে গ্রামীণ ব্যাংক কেবল ভূমিহীনদের জন্য কাজ করত। এখন ইউনিয়ন ও পৌরসভা উভয় পর্যায়েই বিত্তহীনদের নিয়ে কাজ করবে।

BBS cable ad

ব্যাংক এর আরও খবর: