শিরোনাম

South east bank ad

ভল্টের টাকায় সিন্ডিকেটের সুদ বাণিজ্য, অসহায় ঋণগ্রহীতা

 প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ব্যাংক

ভল্টের টাকায় সিন্ডিকেটের সুদ বাণিজ্য, অসহায় ঋণগ্রহীতা

ব্যাংকের ভল্টের টাকায় অবৈধ বাণিজ্যের সুযোগ নেই। তবে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা গড়ে তুলেছেন সিন্ডিকেট। দিচ্ছেন উচ্চ সুদের ঋণ। এমন পরিস্থিতিতে বেকায়দায় পড়েছেন ভুক্তভোগী ঋণগ্রহীতা।

জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টম হাউজ শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী অবৈধ এ কর্মকাণ্ডে নিজেদের জড়িয়েছেন। তবে ঋণগ্রহীতা বিপাকে পড়তেই ভল্টের টাকায় অবৈধ ঋণ বাণিজ্যের বিষয়টি ফাঁস করেন।

দেশের একটি গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর নাম সুজা উদ্দিন। তিনি রাজধানীর উত্তরার একজন তরুণ ব্যবসায়ী। হঠাৎ ব্যবসায় পুঁজির সংকটে পড়লে উপায় খুঁজতে গিয়ে এক আত্মীয়ের শরণাপন্ন হন। পরে এ থেকে উত্তরণের সমাধান মিলে যায়। সোনালী ব্যাংক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টম হাউজ শাখার এক কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় হয়। ব্যাংকের সুরক্ষিত ভল্ট থেকে অতিগোপনে বেআইনিভাবে ৫৫ লাখ টাকা বের করে সুজার হাতে তুলে দেন ঐ কর্মকর্তা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুজা উদ্দিনকে ঋণ দেওয়ার সময় শর্ত জুড়ে দেয় সেই সিন্ডিকেট। এক মাস পর সুদ-আসল মিলিয়ে তাকে ফেরত দিতে হবে ৭০ লাখ টাকা। এমন শর্তে রাজি হয়ে অস্বাভাবিক চড়া সুদে এই টাকা নেন সুজা।

ভুক্তভোগী সুজা উদ্দিন বলেন, ব্যবসায় মন্দার কারণে সময়মতো টাকা দিতে পারিনি। এখন প্রতিদিন চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ যোগ করা হচ্ছে। এ হারে সুদ দিয়ে টাকা পরিশোধে অপারগতা জানালে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তারা যেন এ অবৈধ ব্যবসা করতে না পারে, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।

গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, বিমানবন্দরের সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশন (এসি) সার্ভিসিংয়ের কাজ করেন উত্তরার একজন ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন এই চক্রের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনে জড়িত। সব মিলিয়ে তার লেনদেনের অঙ্ক ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এই ঠিকাদারের মাধ্যমেই উত্তরার তরুণ ব্যবসায়ী সুজা উদ্দিন চক্রের জালে আটকা পড়েন।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টম হাউজ শাখার ব্যবস্থাপক নাজমুল আজম বলেন, ভল্টের রক্ষিত টাকায় এ ধরনের অনৈতিক ব্যবসার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি আমার সম্পর্কে এ ধরনের কোনো অভিযোগ করে থাকে, সেটি সত্য নয়।

শুধু সোনালী ব্যাংকের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টম হাউজ শাখায় নয়, অসৎ কর্মকর্তাদের ভয়ংকর সিন্ডিকেট বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এরপরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর মনিটরিংয়ের অভাবে অবৈধ এ কারবার বন্ধ করা যাচ্ছে না।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী ভল্টের টাকার গরমিল থাকলে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে হয়। কিন্তু গত ১৬ বছর ব্যাংকের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। যে যার ইচ্ছামতো চলেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ভল্টের টাকা কোনোভাবেই অন্য কাউকে দেওয়ার সুযোগ নেই। সেই সুরক্ষিত ভল্টের টাকা দিয়েই কিছু অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে অবৈধ ব্যবসা করছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে এমন অনেক ঘটনা ধরাও পড়েছে।

BBS cable ad

ব্যাংক এর আরও খবর: