আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৩০
শামীম আলম, (জামালপুর):
দেশের বৃহৎ ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা সার কারখানায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সার কারখানার শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও তারাকান্দি ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম মানিক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ট্রাক মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিকের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আজ (২৪ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ, সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫-৩০ জন আহত হয়েছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে।
কারখানার শ্রমিক-কমর্চারি ইউনিয়নের (সিবিএ) নির্বাচন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়। এর আগেই এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিতে মশিউর রহমান মোর্শেদের নেতৃত্বে রফিকুল ইসলামের লোকজন গতকাল বুধবার বিকেলে তারাকান্দি শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা আশরাফুল আলম মানিক গ্রুপের যুবলীগ কর্মী খোকন মিয়াকে (৩৫) বেধড়ক পেটায়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং মানিকের লোকজন জড়ো হয়ে রফিক গ্রুপের কামরুজ্জামানকে (৪০) পাল্টা মারধর করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। পরে খোকন ও কামরুজ্জামানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে রাত থেকে রফিকের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুনরায় অবস্থান নিলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকালে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। পাল্টাপাল্টি হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এ সময় এসআই ফয়জুর রহমান, এসআই সোহাগ, এএসআই আবু শামা, সংবাদকর্মী রাইসুল ইসলাম ও সোহেল রানা আহত হন। এছাড়া স্থানীয় আনিসুর রহমান (৪০), সাইফুল ইসলাম (৩২), মো. মন্ডল (২৫), শফিকুল ইসলাম (৩০), মিন্টু মিয়া (৩০) সহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়।
এ ব্যাপারে জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাকির হোসেন সুমন জানান, যমুনা সার কারখানার সিবিএ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।