শিরোনাম

South east bank ad

আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি, সিভি নিয়ে ৮০০ লোকের সঙ্গে প্রতারণা

 প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

সাতশ’ থেকে আটশ’ লোককে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। এই চক্রটির মূল হোতা স্বামী-স্ত্রীসহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

র‌্যাব জানিয়েছে, চক্রটি ফেসবুকে এসএসসি পাস করা তরুণদের চাকরির প্রলোভন দিতো। বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেকার-তরুণদের টার্গেট করতো। এরপর বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করলে ট্রেনিংসহ বিভিন্ন খাতের নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করে জমা নেয়া হতো।

গ্রেফতারকৃতরা সাবেক সেনা কর্মকর্তার বডিগার্ড, বাসা বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী, সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন পদে চাকরি বিজ্ঞাপন দিতো। তাদের বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে জীবনবৃত্তান্ত জমা নেয়া হতো। কয়েক দিন পর যোগাযোগ করে বলা হতো, চাকরি হয়েছে। তবে বিভিন্ন খাতের নামে প্রার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা জমা নেয়া হতো। এরপর চাকরি না দিয়ে তাদের আরো চাকরি প্রার্থী সংগ্রহ করতে বলা হতো। চাকরি প্রার্থী সংগ্রহ করতে পারলে পার্সেন্টেজ হিসেবে জনপ্রতি ১১০০ টাকা দেওয়া হবে। মাসে অন্তত ১৪ জনকে সংগ্রহের টার্গেট দেওয়া হতো।

গ্রেফতারকৃতরা হলো— কথিত সিনথিয়া সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সামসুন্নাহার ওরফে মায়া (৩৩) ও তার স্বামী মো. জুয়েল ভূঁইয়া (২৬), কামরুজ্জামান ওরফে ডেনিস (২৪), ফারহানা ইয়াছমিন ওরফে সুবর্ণা আক্তার (২৩), মেহেদী হাসান (২১), আল মামুন ওরফে মাসুদ (২১) ও তাজবির হাসান ওরফে লোহান (১৯)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি ভুয়া নিয়োগপত্র, ৮০টি জীবনবৃত্তান্ত ফরম, ভিজিটিং কার্ড, টাকা আদায়ের রসিদ, ১০১টি ভর্তির ফরম ও অঙ্গীকারনামা, ১৫টি আইডি কার্ড, তিনটি রেজিস্টার, আটটি মোবাইল ফোন ও নগদ ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

গতকাল (২১ ফেব্রুয়ারি) সোমবার বিকেলে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

তিনি বলেন, আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর উত্তরখান থানার আটিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রটি সামাজিক ফেসবুকে আকর্ষণীয় বেতনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। আর এই চক্রের মূলহোতা স্বামী-স্ত্রী। প্রত্যেকের কাছ থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে আদায় করা হতো। এই চক্রটি এ পর্যন্ত সাতশ’ থেকে আটশ’ জনের সঙ্গে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।

লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এসএসসি পাস করা বেকার তরুণদের আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতারণা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ এমএলএম প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। চক্রটি তাদের কোম্পানিতে ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, তাদের অধীনে বিভিন্ন অফিস, ব্যাংক, এটিএম বুথ, থ্রি স্টার অ্যাপার্টমেন্ট, গার্মেন্টস-টেক্সটাইল, মিল-ফ্যাক্টরি, বিদ্যুৎ পাওয়ারপ্ল্যান্ট, মেট্রোরেল হেড অফিস, চায়না প্রজেক্টসহ আরও কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে কর্মচারী নিয়োগের জন্য তাদের ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিতো।

র‌্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা অর্থপাচারের কোনো তথ্য পাইনি। তবে এ অর্থ দিয়ে তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করতো। এছাড়া তাদের কোম্পানির প্রচারণা ও লোক নিয়োগের জন্য ফেসবুকে বুস্টিং করতো।

যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া কী হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১৭ জন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারাই এই মামলার বাদী হবেন। এছাড়া এই চক্রের আগের কোনও প্রতারণার তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কোম্পানির এমডি অর্থাৎ মায়া আগে অন্য আরেকটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে কাজ করতো। সেখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুনভাবে প্রতারণা শুরু করে সে। তারা আট মাস ধরে এই কাজ করে আসছিল।’

এমন অনেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান আছে যারা অল্প শিক্ষিত লোকদের টার্গেট করে এ ধরনের প্রতারণা করে আসছে। এসব চাকরি প্রার্থীদের উদ্দেশে আপনারা কী বলবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এর আগেও আমরা এরকম প্রতারণার জন্য গ্রেফতার করেছি। কিন্তু দেখা গেছে, তারা জামিনে বের হয়ে একই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। মিডিয়ার মাধ্যমে সারা দেশের মানুষকে বলতে চাই, বিজ্ঞান দেখে যাচাই-বাছাই না করে সেখানে যাবেন না।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: