নিরাপদ সবজী উৎপাদনে আশার আলো জ্বেলেছেন নারী উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা
মিম জামান, (সাতক্ষীরা):
উন্নয়নের অভিযাত্রায় কৃষিক্ষেত্রে এক অনন্য অবদান অব্যাহত রেখেছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমা আক্তার। সাতক্ষীরার গ্রামীন জনপদে নিরাপদ সবজী উৎপাদনে আশার আলো জ্বেলেছেন তিনি।
কৃষি উৎপাদনের ২০ ধরণের কাজে নারীরা জড়িত। অনেকসময় তারা ফসল উৎপদানে মাঠে যেমন কাজ করেন, তেমনি মাঠের বাইরে উৎপাদন কাজেও তারা প্রধান ভূমিকা রাখেন। নারীদের একটি বড় অংশ বাস করেন গ্রামে। কৃষিকাজে পুরুষের পাশাপাশি তারাও সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।
ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে বীজ সংরক্ষণ থেকে শুরু করে মাঠে ফসল ফলানো, মাঠ থেকে ফসল আনার পরে সেটিকে প্রক্রিয়াজাত করে ঘরে তোলার ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়ায় নারীর ভূমিকা অনেক বেশি। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে নিরাপদ সবজী উৎপাদন, ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন করে কৃষকের চাহিদা পূরণে ভ‚মিকা রেখেছেন নারী উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমা আক্তার।
একজন নারীকর্মী হিসেবে সকল প্রতিক‚লতাকে উপেক্ষা করে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কৃষিখাতে অবদান রাখায় সুনামও কুড়িয়েছেন তিনি। নাজমা আক্তার আব্দুল লতিফের কন্যা। কৃষি বিভাগের যোগদানের পর নিজের কর্মদক্ষতায় কৃষকদের মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তি ছোঁয়া লাগিয়ে সাড়া ফেলেছেন। সদর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় ৫ একর ব্রি ধান ৭৫ জাতের আমন বীজ উৎপাদন ও করে কৃষক পর্যায়ে সংরক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় বীজ বিতরণের মাধ্যমে বীজের চাহিদা পূরণ করেছে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমা আক্তার।
কৃষক পর্যায়ে ভার্মি কম্পোস্ট ২৫টি পাকা চেম্বারের মাধ্যমে উৎপাদন করে স্থানীয় আগরদাঁড়ী মাঠে ব্যবহারের মাধ্যমে জৈব কৃষি প্রযুক্তির বিস্তারলাভ ঘটিয়েছে। বেগুনের মাজরা দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারের মাধ্যমে বিষ মুক্ত বেগুন উৎপাদন করে বাজারে সরবরাহের উদ্যোগ গ্রহণ করে নিরাপদ সবজী উৎপাদনে সফল হয়েছেন। আগরদাঁড়ীর ধলবাড়িয়া মাঠে জিকেবিএসপি প্রকল্পের আওতায় তেল জাতীয় বারি সরিষা-১৪,১৭ ও ১৮ জাতের প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করে সরিষার নতুন জাত সম্প্রসারণে ভ‚মিকা রেখেছেন। সরিষার বীজ সংরক্ষণ করে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে নতুন জাতের সম্প্রসারণ ঘটিয়েছেন।
কৃষকদের বাড়ির আঙিনায় গর্ত করে গোবর সংরক্ষণ করে জমিতে ব্যবহারের মাধ্যমে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি ঘটিয়েছেন। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় ফরিব এক মৌসুমে মাঠে ধৈঞ্চার আবাদের মাধ্যমে মাটিতে উদ্ভিদ জৈব সারের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করে সফল হয়েছেন।
নতুন নতুন ফল বাগান সৃজন করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। যেমন ড্রাগন ফল, কুল বাগান, থাই পেয়ারা বাগান ইত্যাদির ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটিয়েছেন এবং বিষমুক্ত ফল বাজারে সরবরাহের মাধ্যমে ফলের চাহিদা পূরণ করছেন।
এনটিপি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে দলীয়ভাবে কাজ করার প্রয়াস চালিয়ে সফল হয়েছেন। প্রত্যেকটি প্রদর্শনীর মাঠ দিবস পালনের মাধ্যমে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার উপস্থিত রেখে কৃষকদের উৎসাহ জুগিয়েছেন। আগরদাড়ী বøকে প্রত্যেকটি প্রকল্পের প্রদর্শনী ক্ষেত পরিদর্শনে প্রকল্প পরিচালক, অতিরিক্ত সচিব, অতিরিক্ত পরিচালক, উপ-পরিচালক, উপজেলা কৃষি অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসারসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ মাঠ পরিদর্শন করে নাজমা আক্তারের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।