মাছ ধরতে না পেরে ৩০০ জেলে পরিবারের দূর্বিষহ জীবন
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
বগুড়ার ধুনটে বৈরী আবহাওয়ার কারণে যমুনা নদী থেকে মাছ ধরতে পারছে না হতদরিদ্র মৎস্যজীবী পরিবারের সদস্যরা। এতে করে কর্মহীন হয়ে দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদী। যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ৪৪ বছরে হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বসত বাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়ে তারা আজ নি:স্ব।
অনেকে মাতৃভূমির মায়া ত্যাগ করে এলাকা ছেড়ে শহর কিংবা অন্যত্র চলে গেছে। অনেক পরিবারের লোকজন নাড়ির টানে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বাঁধে আশ্রিত অধিকাংশ পরিবারের লোকজন যমুনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে।
শৈত্য প্রবাহের কয়েক দিন ধরে সূর্য্যরে দেখা মিলছে না। কুয়াশার বৃষ্টি ঝরছে। কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বের হচ্ছে না। টানা শৈত্যপ্রবাহে যমুনা নদীতে মাছ শিকারিদের দুর্ভোগ বেড়েছে। সূর্য্যরে আলোবিহীন দিন আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা রাত। মাছ শিকারিদের কষ্টের যেন শেষ নেই।
জেলেরা সারা রাত নদীর বুকে নৌকা বয়ে তারা জাল দিয়ে বিভিন্ন জাতের মাছ ধরে। সকাল হওয়ার সঙ্গে ওই মাছ নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারি আড়তে নিয়ে যায়। মাছ বিক্রির টাকায় চলে ওদের সংসার। হাঁসি খুশিভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে স্বচ্ছলভাবে দিন কাটতো তাদের।
কিন্তু প্রকৃতির এই বৈরী আচরণে জেলেদের মুখে নেই হাসি। পরিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন মহা সংকটে। কিভাবে চলবে তাদের সংসার। এদিকে নেই কোন সরকারি বেসরকারী অনুদানও। কোনো কারণে মাছ ধরতে না পারলে সেদিন ওদের উপোষ থাকতে হয়। যমুনা তীরের মৎস্যজীবী প্রায় ৩০০ পরিবারে নিত্য দিনের এমন চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাছ শিকারিদের নৌকাগুলো শহড়াবাড়ি ঘাটে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। কুয়াশার কারণে রাতের বেলায় নদীতে নৌকা চালানো যায় না। মাছ শিকারিরা নদীর গতিপথ ও দিক নির্নয় করতে পারছে না। ফলে নদী থেকে মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। যমুনা নদীর ঘাটে নৌকা রেখে তারা দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
মৎস্যশিকারি বানিয়াজান গ্রামের কোরবান আলী, বানিয়াজানের কিরণ চন্দ্র হাওয়ালদার, ভান্ডারবাড়ির করিম বক্স জানায়, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে তারা কয়েক দিন ধরে নদী থেকে মাছ ধরতে পারছে না। ফলে তারা খুবই অভাবে পড়েছে। ঋণের টাকায় সংসার চালাতে হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা অতিকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
উপজেলার গোসাইবাড়ি বাজরের পাইকারি আড়তদার নরেশ কুমার জানায়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে নদী থেকে মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাজারে মাছের আমদানিও কয়েকগুণ কমে গেছে।