শিরোনাম

South east bank ad

বরগুনা জেলা যুবলীগের নেতৃত্বে আসতে দৌড়ঝাঁপ শুরু

 প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা)

আগামী (২১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ বরগুনা জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। আর এ উপলক্ষে বরগুনা শহরের সড়ক ও মহাসড়কে ছেয়ে আছে নেতৃত্বে আসতে চাওয়া পুরাতন ও নতুন নেতাদের ফেস্টুন।

দীর্ঘ ১৭ বছর পরে বরগুনা জেলা যুবলীগের নতুন করে কমিটি ঘোষণা করা হবে। তৃণমূল থেকে শুরু করে সকলের মনে জল্পনাকল্পনায় ভরা কেবল একটাই প্রশ্ন; নতুন নাকি পুরাতনদের জায়গা হবে কমিটিতে! তাই কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি সম্বলিত ছোট-বড় ফেস্টুন ও বিলবোর্ড তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রিন্টিং প্রেস ও কাঠ মিস্ত্রী। জেলার প্রবেশ পথে রাস্তার আইলেনের মাঝে থাকা গাছেও স্থান পেয়েছে এসব ফেস্টুন। পদপ্রত্যাশী নেতারা শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ।

বরগুনা টাউন হলে নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চে (২১ ডিসেম্বর) হতে যাওয়া বরগুনা জেলা আওয়ামী যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণে বরগুনা সফর করছেন। বৈঠক করেছে জেলা যুবলীগ।

২০০৫ সালে সর্বশেষ জেলা যুবলীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে অ্যাড. কামরুল আহসান মহারাজ সভাপতি ও সাহাব উদ্দিন সাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। দীর্ঘ বছর পর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। কে হবে এবারের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক? রয়েছে অন্যান্য পদ নিয়েও প্রতিযোগিতা।

গত ১১ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ২৬ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জেলা যুবলীগে পদপ্রত্যাশীদের কাছে জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়। চার দিনে কেন্দ্রে ২৪০ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।

এরপর ১ ডিসেম্বর বরগুনা জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. মইনুল হোসেন খান নিখিল স্বাক্ষরিত চিঠিতে ২১ ডিসেম্বর সম্মেলনের তারিখ জানানো এবং এ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়।

সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরই শীর্ষ দুই পদের জন্য নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। কেন্দ্রে লবিং, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিশালাকৃতির ব্যানার, ফেস্টুন টানি।

জেলা যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, এবার কমিটির শীর্ষ দুই পদপ্রত্যাশীর অনেকেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এদের মধ্যে রয়েছেন সভাপতি পদপ্রত্যাশী বর্তমান জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু, সহসভাপতি রেজাউল করিম এ্যাটম ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।

এদের মধ্যে সাহাবুদ্দিন সাবু ছাত্রজীবনে কলেজ ও জেলা ছাত্রলীগের পদে ছিলেন। এরপর তিনি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন। ২০০৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবুল কালাম আজাদ। ২০১০ সাল পর্যন্ত ওই কমিটির তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর অনেকটা বছর পার হলেও জেলা যুবলীগের কমিটি না হওয়ায় তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। রেজাউল কবির এ্যাটম ২০০৫ সালের কমিটিতে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। সভাপতি পদপ্রত্যাশী জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাবু বলেন- 'আমার পেশাই রাজনীতি। এর বাইরে আমার আলাদা কোনো পেশা নেই। দীর্ঘ বছর দলের পক্ষে লড়তে গিয়ে মামলা-হামলার শিকার হয়ে জেল ও ওয়ান-ইলেভেনের সেনা শাসকদের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমার গোটা পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।'

জেলা যুবলীগে সভাপতি পদের আরেক প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন- 'ছাত্রলীগের রাজনীতি শেষে যুব রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার অপেক্ষায় দীর্ঘ বছর কেটেছে। সম্মেলনে আমি যোগ্য পদ পাবো বলে আশা রাখি।'

রেজাউল করিম এ্যাটম বলেন- ‘আমি দায়িত্ব চাই। পদ পেলে ঝিমিয়ে পড়া জেলা যুবলীগকে আবার সক্রিয় করে তুলব।'

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা যুবলীগের সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদুল আজাদ রিপন, বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সরিষামুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমাম হাসান শিপন, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন মোল্লা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুনাইদ জুয়েল, সাবেক ছাত্রনেতা শাওন তালুকদার, মাহমুদুল বারী রনি, রানা তালুকদার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসাইন রাসেল, সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান রকিব, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি যুবায়ের আদনান অনিকসহ আরও অনেকে।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে- ইমরান হোসেন রাসেল; জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লার মেয়ে বিয়ে করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন।

জেলা আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান সভাপতি ও পৌর মেয়র কামরুল আহসান মহারাজ বলেন- 'কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ ও পরামর্শে আওয়ামী যুবলীগের বরগুনা জেলা শাখার সম্মেলন ঘিরে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। যুবলীগ আমার প্রাণের সংগঠন। আমি দীর্ঘ বছর এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছি। আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যুবলীগ। আমি চাই এই সংগঠনে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তারাও একইভাবে সংগঠনকে ভালোবেসে এর সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে দেশ ও জাতির স্বার্থে রাজনীতি করবেন। ’

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম বলেন- 'যুবলীগ একটি আদর্শবাদী সংগঠন। এখানে লবিং বা তদবির কোনো কাজে আসবে না। যোগ্যতার ভিত্তিতেই নেতা নির্বাচিত করা হবে। হাইব্রিড ও বিতর্কিতদের এই দল করার কোনো সুযোগ নেই। ত্যাগী, যোগ্য ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তিসম্পন্ন নেতৃত্বই আমাদের কাছে প্রাধান্য পাবে।'

এসএমটি

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: