বঙ্গবন্ধু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে পরিণত করেন : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
বিডিএফএন টোয়েন্টিফো্র.কম
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিলো একটি জনযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ ২৩ বছরে এ জনযুদ্ধ সংগঠিত করে পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলা ভাষাভিত্তিক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। জনযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় অস্ত্র ছাড়া –প্রশিক্ষণ ছাড়া শক্তিশালী পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে মাত্র নয় মাসের যুদ্ধে বাঙালীরা বিজয় অর্জন করতে পেরেছি। কিছু সংখ্যক চিহ্নিত রাজাকার, আলবদর, আলসামস ছাড়া এদেশের প্রতিটি মানুষ এই জনযুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশ গ্রহণ করেছিলো। এমনকি মা- বোনেরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্য দিয়ে, আশ্রয় দিয়ে, তথ্য দিয়ে যুদ্ধে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ ময়মনসিংহের ভালুকায়, ভালুকা মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে অনলাইনে সংযুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ঘাঁটি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমরা যে যে অবস্থানেই ছিলাম সেখান থেকেই মুক্তির লড়াইয়ে অংশ নিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ ডিসেম্বর ভালুকা শত্রুমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এ অঞ্চল শত্রুমুক্ত হওয়ার জন্য যে চেষ্টা করা হয়েছে তা ইতিহাসে অতুলনীয় হয়ে থাকবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সাধারণ জনগণের সহায়তা ছাড়া আমরা যুদ্ধে সফল হতাম না। তিনি এই বিজয়ে রণাঙ্গনের নেতৃত্বের জন্য মরহুম আফসার মেজরের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং হানাদার মুক্ত অভিযানে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার জন্য মা- বোনদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই দীর্ঘ চড়াই উৎরাই এবং নানা অশুভ ষড়ন্ত্রের কঠিন পথ অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা্ লাভ করেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, জাতির পিতা ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করে গেছেন। ৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুগান্তকারি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর রোপন করা ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজটি চারা গাছে রূপান্তর করেন। ২০০৯ সাল থেকে গত ১৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বয়কর অগ্রগতি অর্জন করেছে যা বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী ভারচুয়ালি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু মন্ত্রী মহোদয়ের পক্ষে বেলুন উড়িয়ে ভালুকামুক্ত দিবসের বিভিন্ন কর্মসুচীর শুভ উদ্বোধন করেন। স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃ্ন্দ, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ভালুকায় মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১১টায় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনুর নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় থেকে একটি বিজয় র্যালী বের হয়। র্যালিটি পৌর সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়। উল্লেখ্য একাত্তরর এই দিনে ভালুকা হানাদারমুক্ত হয়।