রায়েন্দা ফেরিঘাটের টোলঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধ জনতা
নইন আবু নাঈম, (বাগেরহাট):
বাগেরহাটের শরণখোলায় রায়েন্দা-মাছুয়া ফেরিঘাটে টোল আদায়ের জন্য খেয়াঘাটের ইজারাদার কর্তৃক নির্মিত বেড়া ও টোলঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। শনিবার ২০ নভেম্বর সকালে রায়েন্দা-বড়মাছুয়া ফেরিঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রায়েন্দা-বড়মাছুয়া খেয়া পারাপারে বাংলা ১৪২৮ সনের জন্য স্থানীয় বাসিন্দা আঃ সালাম হাওলাদার ইজারা নেন। সম্প্রতি প্রমত্তা বলেশ্বর নদের এ রুটে ফেরী চলাচল শুরু হলে আঃ সালাম ও তার বাহিনীরা ফেরিঘাট থেকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টোল আদায়ের জন্য পায়তারা শুরু করে। পরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্য্যালয়ের স্বাক্ষরিত একটি পত্র এবং স্থানীয় কতিপয় নেতাদের ম্যনেজ করে রাতের আঁধারে ফেরিঘাটের সড়কের উপরে বেড়া ও পাশে টোলঘর নির্মান করেন। এ ঘটনায় শরণখোলা ও মঠবাড়িয়া উপজেলার দুই পাড়ের হাজারো যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শনিবার সকালে টোল আদায়কে কেন্দ্র করে শতশত যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে ফেরিঘাটের বেড়া ও টোলঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। তবে, এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
মালিয়া রাজাপুর বাসিন্দা আঃ জলিল হাওলাদার বলেন, আমার মেয়ে-জামাই বাড়ি মঠবাড়িয়া উপজেলার সাফা গ্রামে। ফেরী চালুর আগে ৬০টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত খেয়া ভাড়া দিয়ে যেতে হত। কিন্তু ফেরি চালু হবার পরে ভাড়া ছাড়াই আমি পারাপার হই। আজ দেখি সেই খেয়ার লোকজনই আবার ফেরী ঘাটে টাকা তুলছে।
মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় মাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কাইয়ুম হাওলাদার (নাসির) জানান, এ ঘটনায় উন্নয়নশীল সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ ব্যাপারে রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা আঃ রশিদ আকন জানান, বাগেরহাট-৪ ও মঠবাড়িয়া-৩ আসনের মাননীয় সাংসদদ্বয় উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে দুই পাড়ের হাজোরো মানুষের উপস্থিতিতে যে সেতু বন্ধন সৃষ্টি করেছেন সেখানে টোল আদায়ের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। ফেরীঘাট এলাকায় বসবাসরত নারী পুরুষ গোসল করতে গেলেও তাদের কাছ থেকেও টাকা তোলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
ইজারাদার মোঃ আঃ সালাম হাওলাদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাতুনে জান্নাত বলেন, ফেরিঘাটে টোল আদায়ের ঘটনায় জনগনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ায় বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়কে অবহিত করা হলে তার নির্দেশনা অনুযায়ী জনস্বার্থে ১৯ নভেম্বর রাতে ইজারাদার সালাম হাওলাদারকে ফেরিঘাটে নির্মানাধীন স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।