শিরোনাম

South east bank ad

হিলির গুদামে পচছে পেঁয়াজ, ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি

 প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

‘ভারত থেকে অনেক পেঁয়াজ এনেছি। সেগুলো বন্দরের গুদামেই পচছে, বিক্রি করতে পারছি না। ৩ থেকে ৪ দিন ধরে পেঁয়াজ নিয়ে চরম বিপাকে আছি। নষ্ট হয়ে যাওয়া পেঁয়াজ মাত্র ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’

কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক মনোয়ার হোসেন চৌধুরী। দেশের পেঁয়াজের বাজারে যখন ঝাঁঝ, ঠিক তখনই পেঁয়াজ নিয়ে এ আমদানিকারকের কণ্ঠে হতাশার সুর।
শুধু মনোয়ার হোসেন চৌধুরী নয়, হিলি স্থলবন্দরের অধিকাংশ আমদানিকারকের গলার কাঁটা এখন ভারত থেকে আনা পেঁয়াজ। বেশি দামে আমদানি করলেও হঠাৎ দাম পড়ে যাওয়ায় ভারতীয় পেঁয়াজ কিনছেন না পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রচণ্ড গরমে গুদামেই পচছে ভারতীয় পেঁয়াজ।

জানা গেছে, গেল তিন সপ্তাহ ধরে দেশের বাজারে দাম বাড়ায় আমদানিকারকরা লাভের আশায় ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ কেনেন। কিন্তু এলসি করে পেঁয়াজ দেশে আনার আগেই কমে গেছে দাম। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করায় ভারতীয় পেঁয়াজের ক্রেতাও কমছে।

ফলে আমদানিকারকদের কাছ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ কেনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাতেই বিপাকে পেঁয়াজ আমদানিকারকরা। ‘স্পষ্ট’ লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা।

আমদানিকারকরা বলছেন, এলসি করে ভারত থেকে আনা পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম পড়েছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা সেই পেঁয়াজের দাম হাঁকছেন এখন কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা। এ দরে পেঁয়াজ বিক্রি করলে লোকসানে পড়তে হবে। ফলে দাম বাড়ার আশায় বন্দরের গুদামেই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করছেন তারা।
তবে প্রচণ্ড গরমে গুদামেই পচতে শুরু করেছে পেঁয়াজ। গত ৩ থেকে ৪দিন ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে গুদামগুলোতে পাইকারি ক্রেতাদের আনাগোনাও কমেছে। ফলে পচতে শুরু করা পেঁয়াজের দাম ‘সকাল থেকে বিকেল’ আরও কমছে। আগের দিন যে পেঁয়াজের দাম ৪৫-৪৬ টাকা হাঁকা হচ্ছে, পরদিন তা ৩০ থেকে ৩২ টাকা দরে গিয়ে ঠেকেছে।
গতকাল বুধবার ১৩ অক্টোবর বিকেলে হিলি স্থলবন্দরের বেশ কয়েকটি গুদাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি গুদামে প্রচুর ভারতীয় পেঁয়াজ রয়েছে। এসব গুদামে দিনরাত ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি দেখা যায়। তবে বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কমায় ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি কম।

হিলির পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। ৩ থেকে ৪ দিন আগে বাজারে এই দেশি পেঁয়াজই বিক্রি হয়েছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।

হিলি বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শাকিল হোসেন বলেন, ‘আমরা আমদানিকারকের কাছ থেকে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা দরে ভারতীয় পেঁয়াজ কিনে স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা দরে বিক্রি করছি। তারা হয়তো সেটা বাজারে ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ এখন কেউ কিনতে চাচ্ছেন না, সেজন্য বাজারে চাহিদা কম।’

তিনি বলেন, ‘বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০ থেকে ১২ টাকা কমেছে। আগামী কয়েকদিনে আরও কমতে পারে। তবে ৩ থেকে ৪ দিন আগেও হিলিতে দেশি পেঁয়াজের দাম ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি ছিল।’

তবে উল্টো সুর অনেক পাইকারি ব্যবসায়ীর। তারা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের দাম কমলেও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমাতে চাইছেন না আমদানিকারকরা। ফলে ভারতীয় পেঁয়াজের চেয়ে দেশি পেঁয়াজে ঝুঁকছে ক্রেতারা। সেজন্য পাইকারি ব্যবসায়ীরাও দেশি পেঁয়াজ কেনাবেচায় আগ্রহ দেখাচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, ‘দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত রোববার ১০ অক্টোবর ৪২ ট্রাক পেঁয়াজ হিলি বন্দরে আমদানি হয়েছে। চাহিদা তুলনায় আমদানি বেশি এবং দেশি পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় বন্দরে ক্রেতা কমে গেছে। ফলে পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক আমদানিকারক।’

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: