সোনাতলায় শান্তি কমিটির সভাপতির ছেলে হলেন নৌকার মাঝি
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
বগুড়ার সোনাতলা পৌরসভা নির্বাচনে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকারী তৎকালীন শান্তি কমিটির সভাপতির ছেলে শহিদুল বারী খান রব্বানীকে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। তাকে দল থেকে মনোনীন করায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনা পাশাপাশি ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মনোনয়নের বিষয়টি সরাসরি কেন্দ্রে দেখায় বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। এদিকে এই মনোনয়নে স্থানীয় এমপি (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) সাহাদারা মান্নানের প্রশ্রয় রয়েছে উল্লেখ করে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান নামের একটি সংগঠন শনিবার দুপুরে শহেরর প্রেসক্লাবের সামনে মানব বন্ধন পালন করে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, সোনাতলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন জাকির গত শুক্রবার বিকালে আওয়ামীলীগ এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ সম্পর্কে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, শহিদুল বারী খান রব্বানীর বাবা মৃত সামছুল হক খান মহান মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতাকারী ও উপজেলা শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। উপজেলার রাজাকারদের তালিকাতেও তার নাম ১ নম্বরে রয়েছে। সেই পরিবারের সন্তান রব্বানীকে পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ায় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এই সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নসহ সাধারন জনগণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী রব্বানী খান দাবি করেন, তার বাবা কখনও পিস কমিটির সভাপতি ছিলেন না। তৎকালীন সোনাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। ষড়যন্ত্র করে এই নাম তালিকায় তোলা হয়েছে।
সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় এমপি সাহাদারা মান্নানের ছোট ভাই মিনহাদুজ্জামান লীটন বলেন, রব্বানীর বাবা কখনও রাজাকার ছিলেন না। বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আকন্দ নান্নু ষড়যন্ত্র করে রব্বানীর প্রয়াত বাবা সামছুল হক খানসহ অনেককে শান্তি কমিটির সভাপতি ও সদস্য বানিয়েছেন।
সোনাতলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন বুলু বলেন, স্বাধীনতার সময় রব্বানী খানের বাবা স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলেন। তিনি সে সময় পিচ কমিটির সভাপতি হওয়ায় তার নেতৃত্বে আমাদের বাড়ি ঘর সহ অন্যন্য মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি ঘরে আগুন লাগানো হয়। সোনাতলা পৌর এলাকায় ১৫জন রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধী’র নাম রয়েছে। এমন একটি নামের তালিকা ২৩শে সেপ্টেম্বর সোনাতলা পৌরসভার (৪৬.০০.১০৯৫.১০০.০১.২৬৬. ২০২১-৩৮৯) স্বারকে উল্লেখ রয়েছে।
আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান সংগঠনের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শহিদুল বারী খান রব্বানীকে নৌকা প্রতীক পাইতে দিতে স্থানীয় এমপি সাহাদারা মান্নান আগে থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে কেন্দ্রকে ভুল বুঝিয়ে এই ঘোষনা করানো হয়েছে। এখন সাধারন জনগন ও দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বিষয়টি বিবেচনা করে কেন্দ্র এই মনোনয়ন পরিবর্তন করবেন এমন দাবি তাদের।