পৌরসভা নির্বাচনে আ. লীগের প্রার্থী তালিকায় বর্তমান মেয়রের নাম নেই
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
আগামী ২ নভেম্বর বগুড়ার সোনাতলা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন ভোটারদের কাছে গিয়ে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করছে। তবে নির্বাচনে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি এ নিয়ে ভোটারদের মাঝে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। কারণ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ নান্নুর নাম না থাকায় এই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন বগুড়ার সোনাতলাসহ দেশের ১০টি পৌরসভা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে। তফশিল অনুযায়ী আগামী ৯ অক্টোবর মনোনয়নপত্র দাখিল, ১১ অক্টোবর মনোনয়নপত্র বাছাই, ১২ থেকে ১৪ অক্টোবর আপিল নিষ্পত্তি, ১৭ অক্টোবর প্রার্থীতা প্রত্যাহার, ১৮ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ ও ২ নভেম্বর ভোট গ্রহণ করা হবে।
তফশিল ঘোষণার পর মেয়র পদে আওয়ামী লীগের চার জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন। তাঁরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ নান্নু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শাহিদুল বারী খান রব্বানী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ড. এনামুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান আলী খন্দকার। তবে বিএনপি দলীয়ভাবে পৌরসভা নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণায় এখন পর্যন্ত বিএনপি মনোনিত কোন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে না। তবে বিএনপির সাবেক এমপি মরহুম হাবিবুর রহমানের ছেলে শাকিল রেজা বাবলা নির্বাচন করতে ইচ্ছুক। দল চাইলে তিনি প্রার্থী হবেন।
এদিকে হোটেল রেস্তোরা চায়ের দোকানগুলোতে এখন ভোটের খোশ গল্পে মেতে উঠেছে ভোটাররা। কে কাকে ভোট দিবেন? কে কার পছন্দের প্রার্থী। কোন প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজ কেমন। গত ৫ বছরে কেমন উন্নয়ন হয়েছে তা নিয়ে এক শ্রেণির ভোটারা চায়ের টেবিল গরম রেখেছে।
২০০১ সালের ২৬ এপ্রিল সোনাতলায় পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১২ দশমিক ৩৭ বর্গ কিলোমিটারের এই পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ২১ হাজারের অধিক। ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট ওই পৌরসভায় প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী শাহিদুল বারী খান রব্বানী মাত্র ৮৮ ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ নান্নুর কাছে পরাজিত হয়।
সোনাতলা পৌরসভা নির্বাচনে কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন তা নিয়ে এখন ভোটারদের মধ্যে চুলচেরা বিশ্নেষণ চলছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের আয়োজনে স্থানীয় ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজে প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষে এক বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জিয়াউল করিম শ্যাম্পুর সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান। সেই সভায় ৩ জন প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহিদুল বারী খান রব্বানী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. এনামুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক, সোনাতলা পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান আলী খন্দকার। এই তালিকায় বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ নান্নুর নাম দেওয়া হয়নি।
সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক বলেন, বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ নান্নু গত পৌরসভা নির্বাচনে দলের গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তাই দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক তিনি দলীয় মনোনয়নের জন্য অর্ন্তভুক্ত হবেন না। এজন্য তার নাম জেলা কমিটিতে পাঠানো হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম নান্নু বলেন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বা সহসভাপতিকে বাদ রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিকে সভাপতি দেখিয়ে দলীয় প্রার্থীর তালিকা করা হয়েছে। যা নিয়মের মধ্যে পড়ে না। পৌর আওয়ামী লীগের যে প্রার্থী তালিকা করেছে তাতে আমার নাম প্রথমে রয়েছে। তাই দলীয় মনোনয়ন তিনিই পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।