খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে অনিয়মে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্দ জনতা
মোঃ রাজু খান, (ঝালকাঠি) :
ঝালকাঠির রাজাপুরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল বরাদ্দে অনিয়মের প্রতিবাদে ক্ষুব্দ এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে।
শুক্রবার উপজেলার উত্তমপুর বাজারে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে প্রায় তিন শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্ররা অংশ নেয়। ৫নং বড়ইয়া ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিতরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
জানাগেছে, গত ১০ আগস্ট উপজেলা খাদ্য অদিধপ্তর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা হালনাদাগ করতে ইউপি চেয়ারম্যানদের নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশের আলোকে চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের সাথে আলোচনা না করেই পুরাতন তালিকায় থাকা অস্বচ্ছল, দুস্থ, প্রতিবন্ধী সুবিধাভোগীদের নাম কর্তন করে নতুন করে তালিকা তৈরি করেন। নতুন তালিকায় চেয়ারম্যান তার নিজের আত্মীয় স্বজন ও তার অনুসারিসহ মৃত, প্রবাসী, ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভূক্ত করেন।
এছাড়াও একই পরিবারে একাধিক নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আবার অনেকের নামে ভিজিডি থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে।
অস্বচ্ছল ব্যক্তিদের অধিকার ফিরে পেতে সুবিধাভোগীদের সাথে তিন ইউপি সদস্য একাত্বতা ঘোষনা করে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য ও সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলাম মামুন, ইউপি সদস্য মো. নাসির সিকদার, মো. দেলোয়ার হোসেন। বঞ্চিত সুবিধাভোগীদের মধ্যে মো. মজিবর রহমান, মো. সোহরাব হোসেন, মো. দেলোয়ার হোসেন, শাহিদা বেগম প্রমূখ।
এছাড়াও মানববন্ধনে অংশ নেয়া রাবিয়া বেগম, কুলসুম, জাহানারা, হনুফা, খাদিজা সালেহা, মরিয়ম, রোজিনা, লিপি, ডালিম, মমতাজ, ফাতেমা, রানু, আ. রাজ্জাক, আ. হক, আসমা, প্রিয়া, আব্বাস মোল্লা, হাফেজ সিকদারও জানান তাঁদের অসহায়ত্বের কথা। "চেয়ারম্যান আমাগো নাম কাইট্টা দেছে, এখন না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। আমাগো এহোন আর কোন উপায় নেই। আমরা উচিত বিচার চাই।" সবার একই ধরনের অভিযোগ ছিলো মানববন্ধনে।
বক্তরা তাদের বক্তব্যে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন সুরু মিয়া যাচাই-বাছাই না করে তালিকা থেকে অস্বচ্ছলদের নাম বাদ দিয়ে তার নিকটআত্মীয়, প্রতিবন্ধী, মৃত, স্বচ্ছল, প্রবাসী ব্যক্তিকে নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছে। খেটে খাওয়া এই মানুষগুলো করোনার মধ্যে হঠাৎ চাল না পেয়ে অর্ধহারে অনাহারে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। তাদের অধিকার ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও তারা আকুতি জানায়।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন সুরু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো নাম বাদ দেই নায়। ইউপি সদস্যদের দেয়া তালিকাই রাখা হয়েছে। এদের পিছনে দুই রাঘব বোয়াল রয়েছে তারাই জামেলা তৈরি করছে। এক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান দুই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজু।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজু বলেন, এটা তার ইউনিয়নের ব্যাপার তিনি আমার নামে মিথ্যা দোষারোপ করছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান বলেন, আমি কিছুই জানিনা, এটা ইউনিয়ন পরিষদের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এরমধ্যে বাহিরের কারো কথা বলার সুযোগ নেই। আমার জানামতে উপজেলা আওয়ামীলীগ তাদের নিয়ে একটা বৈঠক করেছে। আশা করি শীঘ্রই এর সমাধান হবে।