চাঁদা দাবীর মামলায় ক্ষমতাসীন দলের ১২ নেতা কারাগারে
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :
বরগুনার আমতলীতে চাঁদা না পেয়ে কুপিয়ে হাত পা কেটে ক্ষত-বিক্ষত করার মামলায় আমতলী যুবলীগ সভাপতি, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতিসহ ১২ জনের জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলার বাকী দুই আসামী পলাতক রয়েছে ও একজন জামিনে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমতলীর ভারপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: নাহিদ হাসান এ আদেশ দিয়েছেন।
আসামীরা হলেন- জিএম মুছা ওরফে আবু মুছা, মোয়াজ্জেম হোসেন, জিএম ওসমানী হাসান, আল ফাহাদ, মতিন, তানজিল, রিয়াজ, রুবেল, আশিকুর রহমান আসলাম, মিরাজ মিয়া, কবির ও সবুজ। এরা সকলই আমতলী পৌরসভার বাসিন্দা।
এদের মধ্যে জিএম মুছা আমতলী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, জিএম হাসান আমতলী উপজেলার যুবলীগ সভাপতি ও মোয়াজ্জেম হোসেন আমতলী উপজেলার স্বেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি। এ মামলায় মালেক ও মো. হাচান পলাতক। রায়হান জামিনে রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- আমতলী পৌরসভার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে আমতলী থানায় জিএম মুছাসহ ১৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী আবুল কালাম আজাদ পেশায় একজন ঠিকাদার।
এ বছরের ২১ মে রাত ৮ টার দিকে বাদী আবুল কালাম আজাদ আমতলীর খুরিয়ার খেয়াঘাট হতে নোমরহাট পাকা রাস্তার উপর পৌঁছলে সকল আসামীরা বাদীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা বাদী করে। বাদী চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সকল আসামীরা রামদা ছেনা দিয়ে আবুল কালাম আজাদের দুই পা, দুই হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে। হাত পায়ের রগ কেটে ফেলে।
বাদীর মামা আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন- আমার ভাগ্নেকে সকল আসামীরা ২১ মে রাতে চাঁদার দাবীতে হত্যা করতে চেয়েছিল। আল্লাহ আজাদকে বাঁচিয়েছেন। আমার ভাগ্নে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে। হাত পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। আসামীরা আগাম জামিনের জন্য হাই কোর্টে গিয়ে জামিন নিয়েছিল। আমরা সুপ্রীম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছি। সুপ্রীম কোর্টের চেম্বার জজ আমতলী আদালতে এক সপ্তাহের মধ্যে হাজির হবার নির্দেশ দেয়। সে তথ্যও আসামীরা প্রতারনামূলক গোপন করেছিলো। আজ আদালতে হাজির হলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা এই জঘন্যতম ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি।
বরগুনার কোর্ট বারান্দায় আসামী জিএম মুছা বলেন- আমতলীর মেয়র রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। বাদীর ঘটনার দিন আমি আমতলী মাতৃছায়া কাপড়ের দোকানে ছিলাম। সিসি ক্যামেরায় তার প্রমান। এই ঘটনায় আমরা জড়িত না থাকলেও আমাদের জড়িত করা হয়েছে।
আসামী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জহিরুল হক নান্না ও রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন- পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) ভুবন চন্দ্র হাওলাদার।
আসামী পক্ষের আইনজীবী জহিরুল হক নান্না বলেন- আসামীরা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আসামীদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।