মাদারীপুরে হুমকির মুখে মৎস্য সম্পদ
আরাফাত হাসান, (মাদারীপুর) :
মাদারীপুরের নদ-নদী, খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে ‘চায়না দোয়ারি’ নামে এক প্রকার ঘন জালে সয়লাব হয়ে গেছে। জলাশয়ে এই বিশেষ ধরণের জাল পেতে অবাধে মাছ শিকার করছে জেলে ও মৎস্য শিকারীরা। এই জালে ধরা পড়ছে সব ধরণের ছোট-বড় মাছ ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাছের পোনা। ফলে হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্য সম্পদ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে একেবারে মৎস্য শূণ্য হয়ে পড়বে জেলার মৎস্য ভান্ডার। কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ‘চায়না দোয়ারি’ জব্দ ও অভিযুক্তদের জরিমানা করলেও থামছে জেলে ও মৎস্য শিকারীদের দৌরাত্ম। এখনই ‘চায়না দোয়ারি’ দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ না করা হলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে সরকারের কোনো উদ্যোগ কাজে আসবে না।
নদ-নদীতে থাকা মিঠা পানির সব ধরণের দেশি মাছ সূক্ষ্ম এই ‘চায়না দোয়ারি’ জালে ধরা পড়ছে। বিশেষ করে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির এই প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কৈ, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ প্রাকৃতিক সব মাছ এই সর্বশেষ প্রযুক্তির চায়না দোয়ারি জালে নিধন করা হচ্ছে। এমনকি মাছের ডিমও ছেঁকে ওঠে এই চায়না দোয়ারি জাল থেকে। এখনই এর ব্যবহার বন্ধ না করা হলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে সরকারের কোনো উদ্যোগ কাজে আসবে না বলে মনে করেন সচেতন মহল।
মাদারীপুর (সদর) সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তপন মজুমদার বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সহযোগিতায় নিষিদ্ধ ‘চায়না দোয়ারি’র বিরুদ্ধে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, উদ্বুদ্ধকরণ সভা, মোবাইল কোর্ট ও অভিযান অব্যাহত আছে। কোনভাবেই নিষিদ্ধ চায়না দোয়ারি দিয়ে কাউকে মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না।’
মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা বলেন, ‘অবৈধ ‘চায়না দোয়ারি’ বিল-বাওর, নদী-নালা, খাল ও মুক্ত জলাশয়ের মৎস্য সম্পদের জন্য হুমকি স্বরূপ। জেলার সর্বত্র মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, ব্যানার স্থাপন, উদ্বুদ্ধকরণ সভা, ১৭টি অভিযানে ২২২টি ‘চায়না দুয়ারি’ আটক ও বিনষ্ট করা হয়েছে। ১টি মামলা ও ১০হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।’