জয়পুরহাটের মন্দিরে কবিরাজে কথায় গো মাংস ছিটিয়ে দুই জন গ্রেফতার
জেলা, প্রতিনিধি, জয়পুরহাট :
জয়পুরহাট জেলা আক্কেলপুরে উপজেলার পৌর শহরের বিহারপুর সার্বজনিন রাধা গোবিন্দ মন্দিরে সেবায়েতের উপস্থিতে অজ্ঞাত দুইজন যুবক মানতের কথা বলে একটি ব্যাগ সহ মন্দিরে প্রবেশ করে। গো মাংস ছিটিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করার চেষ্টা করলে দুই জন অজ্ঞাত যুবককে গ্রেফতার করেছে আক্কেলপুর থানার পুলিশ।
বুধবার ( ৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আক্কেলপুর পৌর শহরে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে মানতের অনুমতি চেয়ে কৌশলে কালক্ষেপণ করতে থাকে। একসময় সেবায়ত শ্রীমতি পপি গোস্বামী রাধা গোবিন্দের প্রসাদ তৈরি করার জন্য রান্না ঘরে যাওয়ার পর অজ্ঞাত দুই জন যুবক তরি-ঘরি করে মন্দিরে মাংসের টুকরো, কলা, সিদুর ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে । কিছু দূরে শ্বসানে একই কায়দায় মাংস ছিটানোর চেষ্টা করে। এমন সময়ে রাগা গোবিন্দ মন্দিরের সেবায়েত মন্দিরে প্রবেশ করে দেখে অজ্ঞাত যুবকরা মানতের ছলনায় মন্দিরে অসংখ্য সুচ ফোটানো গো-মাংস ফেলে রেখে চলে যায়। এই সংবাদ দ্রূত এলাকায় ছড়িয়ে পরলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ধাওয়া করে অজ্ঞাত ঐ ২ যুবককে আটক করে, এলাকাবাসী পৌর মেয়রের কাছে হস্থান্তর করে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই কাজের কারণ জানতে চাইলে আটককৃত শাহীন বলেন আমার মা দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ্য, জুলফিকার কবিরাজের কথা মতো বগুড়া শিবগঞ্জ থেকে এসে আক্কেলপুরের ৩-৪টি মন্দিরে মাংস ছিটিয়ে আসলে মায়ের রোগ মুক্ত হবে। তারা পরিচয় দিয়ে বলেন,আমাদের বাড়ি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার জাবেরপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের হারুনর রশিদের ছেলে রায়হান(২০) ও সিরাজুলের ছেলে শাহিন(২৭) ।
বিষয়টি আক্কেলপুর পৌর মেয়র মোঃ শহীদুল আলম চৌধুরী জানার পর তিনি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম হাবিবুল হাসান কে অবহিত করেন। নির্বাহী অফিসার পুলিশ ফোর্স সহ উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে দুই যুবককে পুলিশি হেফাজতে সোপর্দ করেন।
এঘটনায় এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এক চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বলেন, কোন প্রকার সাম্প্রদায়িক ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলে তা কোন ভাবে বরদাস্ত করা হবে না। তাদেরকে আইনের আওতায় নেওয়া হবে।
পৌর মেয়র শহিদুল আলম চৌধুরী বলেন, যে কোন সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি পরিবেশ নষ্ট করলে তা প্রতিহত করা হবে ।
পুলিশের নিকট জিজ্ঞাসাবাদে শাহিন জানায়, মা দীর্ঘ দিন অসুস্থ্য থাকায় কবিরাজ জুলফিকার কথা মতো আক্কেলপুরের ৩-৪টি মন্দিরে মাংস ছিটিয়ে আসলে তার মায়ের রোগ মুক্ত হবে।
রাগা গোবিন্দ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শ্রী বিদ্যুৎ গোস্বামী বলেন, আমাদের মন্দিরকে অপবিত্র করার লক্ষ্যে আটককৃত যুবকেরা গো- মাংস ছিটিয়েছে।
আক্কেলপুর থানার ওসি মোঃ সাইদুর রহমান জানান তদন্ত সাপেক্ষে দোষীব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাদের কাছ থেকে ১২টি দই, ৪টি কলা, ১টি টিস্যুর প্যাকেট, ১প্যাকেট মোমবাতি, ৪টি সুচ ফুটোনো মাংসের ছোট ছোট প্যাকেট, সুগুন্ধি তেল, সিন্দুর প্যাকেট, ৩টি তাবিজ, ২টি মোবাইল ফোন পুলিশ উদ্ধার করা হয়।
এবিষয়ে আক্কেলপুর থানায় এলাকার সাবেক মহিলা কমিশনার বন্দনা বাগচি বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাত্রি ৮ঘটিকায় একটি মামলা দায়ের করেন।