গফরগাঁওয়ে বাবার হাতে ছেলে খুন
এইচ কবীর টিটো, (গফরগাঁও) :
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন নিগুয়ারী ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামে বাবা, মা ও ভাইয়ের হাতে খুন হলো প্রবাসী ছেলে শারফুল ঢালী (২৮)নামে এক যুবক।বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬ টায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় মা হোসেনা আরা (৪৫)কে আটক করলেও অভিযুক্ত বাবা ইসহাক ঢালী(৫৫)ও ছোট ভাই আশরাফুল ঢালী(২৫) পলাতক রয়েছে।পাগলা থানার ওসি মোঃ রাশেদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে।
জানা যায়,উপজেলার চাকুয়া গ্রামের ইসহাক ঢালীর ছেলে প্রবাসী শারফুল দীর্ঘ ৮ বছর লেবাননে ভালো বেতনে চাকুরী করতো । গত ছয় মাস পূর্বে সে দেশে ফিরে আসে। প্রবাসে কর্মরত অবস্থায় আয়-রোজগারের সমস্ত টাকা সে তার পিতার নামে দেশে পাঠিয়ে দিতো। দেশে ফেরত আসার পর তার পিতা তাকে কোন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় । এ নিয়ে পিতা পুত্রের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। বুধবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে পিতা ইসহাক ঢালী, মা হোসেনা আরা ও ছোট ভাই আশরাফুল ঢালী লোহার রড ও শাবল দিয়ে শারফুল ঢালীর মাথায়, পা ও বুকে এলাপাথারী পিটিয়ে গুরুতর জখম করে প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় বসতঘরে তালাবন্ধ করে রাখে। শারফুল ঢালীর চিৎকারে স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করতে গেলে ইসহাক ঢালী, হোসনে আরা, আশরাফুল ঢালী ধারালো অস্ত্র নিয়ে এলাকাবাসীকে ধাওয়া করে। ওই দিন বিকালে খবর পেয়ে পাগলা থানা পুলিশ শারফুল ঢালীকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে পরিস্থিতির অবনতি হলে স্বজনরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারফুল ঢালীর মৃত্যু হয়।
নিহতের প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম মাস্টার জানান, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা নিয়ে ছেলে শারফুল ঢালীর সাথে তার পিতা-মাতার প্রায়ই ঝগড়া হতো। বুধবার সকালে ঝগড়ার এক পর্যায়ে আশরাফুল ঢালীকে তার মা,বাবা ও ভাই মিলে লোহার রড, শাবল দিয়ে এলাপাথারী পিটিয়ে গুরুতর জখম করে, অর্ধমৃত অবস্থায় ফেলে রেখে কেঁচি গেইটে তালা দিয়ে রাখে।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন জানান, নিহত শারফুল ঢালীর সাথে টাকা পয়সা নিয়ে পিতা,মাতা ও ভাইয়ের ঝগড়া হয়।তারা তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।প্রশাসনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
পাগলা থানার ওসি মোঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, হত্যা মামলা দায়েরে প্রস্ততি চলছে।অভিযুক্ত মা হোসনে আরা কে আটক করা হয়েছে।অভিযুক্ত বাবা ও ভাইকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।