শিরোনাম

South east bank ad

ভিক্ষা করে সংসার চালাচ্ছেন গ্রেনেড হামলায় পঙ্গু মামুন

 প্রকাশ: ২১ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মো. রাকিব হোসাইন রনি, (লক্ষ্মীপুর) :

ঢাকার মেট্রপলিটন পুলিশের বাস চালক হিসেবে কাজ করতেন মামুনুর রশিদ (৪৫)। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাসমাবেশে গ্রেনেড হামলায় দুই পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন তিনি। চলাচলের জন্য লাঠিই তার একমাত্র ভরসা। সেই লাঠির উপর ভর করে সপ্তাহে দুই দিন রায়পুর উপজেলায় ও লক্ষ্মীপুর শহরে ভিক্ষা করে নিজের ও পঙ্গু মায়ের চিকিৎসা, তিন সন্তানের লেখা-পড়ার খরচসহ সংসার চালাতে হচ্ছে মামুনকে। বর্তমানে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তিনি।

এখনও তার সে দিনের নারকীয় স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ১৭ বছর অতিবাহিত হলেও সে দিনের দুঃসহ স্মৃতি আজও কষ্ট দেয় তাকে। ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে নিহত ও আহত পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত দুই থেকে দশ লাখ টাকা অনুদান পেলেও পঙ্গু মামুনকে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসেনি।

পঙ্গু মামুনুর রশিদ (৪৫) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের আঠিয়াতলী গ্রামের বর্বরোচিত এ গ্রেনেড হামলার শিকার ঢাকার মেট্রপলিটন পুলিশের বাস চালক ছিলেন ।

শুক্রবার (২০ আগষ্ট) রায়পুর শহরে আসলে-কথা হয় মামুনুর রশিদের সঙ্গে, গত ২০০২ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের গাড়ী চালিয়ে আসছিলেন। যার গাড়ী নং- ঢাকা মেট্ট্রো চ-৭৫৭১, চ-৫২০২, চ-০০২২, লাইসেন্স নং- গপ-০৪৮৯৬২৮ম এবং পরিচয়পত্র নং-
১৯৭৫৫৫১১৪৩৬০৭৪৯২২২। গত ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট জনসভাস্থলে পুলিশের গাড়ী নিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন। এ সময় গ্রেনেড হামলার সাথে সাথে মাটিতে পড়ে গেলে মানুষের পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে মারাত্মক আহত হন। এতে তার মাজা, দুই পা, যৌনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। ওই সময় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করলে তখন উন্নত চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ী ফিরে আসে। তার সুচিকিৎসা নিতে ২০০৯ সালের ১ফেব্রুয়ারী লক্ষ্মীপুর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান রায়পুরের সাংসদ এড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সুপারিশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করলেও তা পাওয়া যায়নি। আজও সেই জখম বয়ে চলছে।

পঙ্গু মামুনুর রশিদ পঙ্গু মা, স্ত্রী, তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নিরুপায় হয়ে ভিক্ষা করে তিন সন্তানের লেখা-পড়া, নিজের ও পঙ্গু মায়ের চিকিৎসা ও সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যদি তার ও পরিবারের জন্য একটা বাসস্থানের ব্যবস্থা করতেন, তাহলে উপকৃত হতেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আবদুস শহিদ জানান, একুমে গ্রেনেড হামলার সময় মারাত্নক জখম হয়ে পঙ্গু মামুনুর রশিদ ও তার মাকে ৬ মাস পরপর পঙ্গু সরকারি ভাতা দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে তাকে ও তার পরিবারকে আরো সহযোগীতা করা হবে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম বলেন, গ্রেনেড হামলায় লক্ষ্মীপুরের মামুন আহত হওয়ার বিষয়টি পূর্বে জানা ছিলো না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তার খোজখবর নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসককেও অবহিত করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামুনের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: