শিরোনাম

South east bank ad

পুঁজি নিয়ে আশঙ্কা ময়মনসিংহের গরু খামারীদের

 প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

এইচ এম জোবায়ের হোসাইন:

করোনা পরিস্থিতি আর চলমান লকডাউনে কোরবানির পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ময়মনসিংহের খামারিরা। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে তাদের আশঙ্কা ততই বাড়ছে। লাভের আশা দূরে থাক, এবার বাজারে কোরবানির পশু বিক্রি করে আসল তুলতে পারবেন কিনা- সেটাই এখন খামারিদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।
এ দিকে করোনার বিস্তার রোধে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পশু কেনাবেচার আহ্বান জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক।

তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার জেলা পর্যায়ে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস পর্যায়েও ফেসবুক পেইজে কোরবানির পশু বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম জানান, জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস একটি ওয়েবসাইট (য়ঁৎনধহরযধঃসুস.পড়স) চালু করেছে। জিনিয়া সফটওয়্যার প্রোভাইডারের কারিগরি সহযোগিতায় এই ওয়েবসাইটটিতে উপজেলাভিত্তিক খামারির মোবাইল নম্বর,

ঠিকানা ও কোরবানির পশুর ছবিসহ বিবরণ এবং গরু, ছাগল ও মহিষের সম্ভাব্য দাম (প্রতি কেজি) দেওয়া থাকবে। যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতা দরদাম করে পশু কিনতে পারবেন। বিক্রেতার সক্ষমতা অনুযায়ী গরু ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেয়ারও সুযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, খামারি, চাষি, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছেন। করোনার কারণে এবার অনেক পশু অবিক্রীত থাকতে পারে বলে খামারি ও কৃষকরা আশঙ্কা করছেন। সে ক্ষেত্রে তাদের বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চুরখাই বাজারে ভাই ভাই ডেইরি অ্যান্ড ফেডিং খামারের স্বত্বাধিকারী মো. বাদল মিয়া জানান, তার খামারে ৮৫টি গরু রয়েছে। তন্মধ্যে কোরবানির জন্য বিক্রিযোগ্য ৪৫টি। বর্তমানে সয়াবিন, ভুট্টা, খৈল, ভূষি, লালি, চালের কুড়াসহ গোখাদ্যের দাম অনেক বেশি। করোনার কারণে কোরবানির হাটে গরু তুলতে না পারলে তিনি লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

বাদল মিয়া জানান, সাড়ে ৩ শত কেজি ওজনের কোরবানির ষাঁড় গরু প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা দরে, ৩৫০-৪৫০ কেজি ওজনের গরু প্রতি কেজি ৩৭৫ টাকা, ৪৫০-৬০০ কেজি ওজনের গরু প্রতিকেজি ৪০০ টাকা এবং ৬০০ কেজির ঊর্ধ্বে কোরবানির গরু প্রতি কেজি ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনলাইনে বায়না করলে ক্রেতার বাড়িতে তিনি নিজস্ব পরিবহনে পৌঁছে দিয়ে বাকি টাকা পরিশোধের সুযোগ দেবেন।

ত্রিশাল চরপাড়া গ্রামের তাহা এগ্রোর মেহেদী কাওসার ফুয়াদ জানান, তার খামারে দেড় লাখ থেকে ৫ লক্ষাধিক মূল্যের দেশি ও বিদেশি জাতের গরু রয়েছে। করোনার পরিস্থিতিতে বাজারে গরুগুলো তুলতে পারবেন কিনা- এ নিয়ে খুবই চিন্তার মধ্যে আছেন।

ফুলবাড়ীয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের সরাতিয়া গ্রামের খামারি আবুবকর সিদ্দিক জানান, তিনি ধারদেনা করে ৩০টি ষাঁঢ় ও ৬টি বলদ লালন পালন করেছেন। ঈদ চলে এসেছে। কীভাবে গরু বিক্রি করবেন তার ওপর দেখছেন না। লকডাউন কতদিন থাকবে সেটা কেউ পরিষ্কার করে বলতে পারছেন না। ঈদে গরু বিক্রি করতে না পারলে কীভাবে ধারদেনা শোধ করবেন এ দুশ্চিন্তায় আছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র জানায়, এবার কোরবানির ঈদ সামনে রেখে জেলার সাড়ে ১০ হাজার খামারি প্রস্তুত করছেন ৪৬ হাজার ৫০০টি গরু। এ ছাড়া জেলার গ্রামাঞ্চলের অনেকে বাড়িতে গবাদিপশু পালন করেন। কৃষক পর্যায়ে আরও প্রায় ৮০ হাজার কোরবানির পশুসহ জেলায় মোট ১ লাখ ২৫ হাজার কোরবানির পশু রয়েছে। এবার জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: