প্রতি হাজার জন মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা একটিরও কম
দেশের হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার দুর্দশার চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিদ্যমান শয্যা সংখ্যা বিবেচনায়, প্রতি হাজার মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা প্রায় ০.৩২টি । বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিদ্যমান শয্যা সংখ্যা বিবেচনায়, প্রতি হাজারে মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা প্রায় ০.৬৪টি। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সুপারিশকৃত প্রতি হাজার মানুষের বিপরীতে ৩.৫টি হাসপাতাল শয্যার চেয়ে অনেক কম।
সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল একত্রে বিবেচনা করলে, প্রতি হাজার জন মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা মাত্র ০.৯৬টি। অর্থাৎ একটিরও কম।
সোমবার (২১ জুন) নগরীর বিবিএস মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং উইংয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ‘সার্ভেস অ্যান্ড স্টাডিজ রিলেটিং টু জিডিপি রিবেইজিং ২০১৫-১৬’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান জরিপ ২০১৯ এর ফলাফলে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রকল্প পরিচালক আব্দুল খালেক বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মু. ইয়ামিন চৌধুরী, বিবিএস ডিজি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
জরিপে দেখা গেছে, প্রতি একজন চিকিৎসকের (ডেন্টাল সার্জন বাদ দিয়ে) বিপরীতে মাত্র ০.৮৫ জন সেবিকা রয়েছেন। ডেন্টাল সার্জনদের অন্তর্ভুক্ত করলে, প্রতি একজন চিকিৎসকের বিপরীতে সেবিকার সংখ্যা দাঁড়ায় ০.৮৩ জন। শয্যা ও সেবিকার অনুপাতে প্রতি ৩.৪৭টি শয্যার জন্য একজন সেবিকা দায়িত্ব পালন করছেন।
বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের আউটপুটের পরিমাণ মধ্যবর্তী ভাগে, মূল্য সংযাজন, কর্মসংস্থানের পরিমাণ, কর্মসংস্থান ব্যয় সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলির হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং জাতীয় অর্থনীতিতে এর অবদান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
জরিপে আরও দেখা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বেসরকারি খাতে নিবন্ধিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা জুন ২০১৮ পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ৯৭৯টি। এর মধ্যে রোগ নির্ণয় কেন্দ্র ১০ হাজার ২৯১টি (৬০.৬১ %), হাসপাতাল ৪ হাজার ৪৫২টি (২৬.২২ %) এবং মেডিকেল ক্লিনিক ১ হাজার ৩৯৭টি (৮.২৩ %)। অন্যদিকে ডেন্টাল ক্লিনিকের সংখ্যা ৮৩৯টি (৪.৯৯ %)।
৩০ জুন ২০১৮ তারিখে ১৬ হাজার ৯৭৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে মোট ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮০ জন কর্মী নিয়োজিত ছিলেন। এর মধ্যে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯৪১ জন (৮৫.৭২%) পূর্ণকালীন এবং ৫২ হাজার ৬৩৯ জন (১৪.২৮%) খণ্ডকালীন। মোট নিয়োজিত জনবলের মধ্যে, হাসপাতালে ৫৬.৩২%, রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে ৩৬.৭৯% এবং ক্লিনিকে ৫.৭% জনবল নিয়োজিত ছিল। ডেন্টাল ক্লিনিকে নিয়োজিত জনবল ১.১৯%।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অনুমিত হার ৯.২৭%; হাসপাতালসমূহের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ১২.১৬%। মেডিক্যাল ক্লিনিকসমূহের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ৫.৮৯%; রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ৫.৩১% এবং দন্ত ক্লিনিকসমূহে প্রবৃদ্ধি ০.৮২%।