শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে মাদারীপুরে আলোচনা সভা
মাদারীপুর প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস। এ উপলক্ষে শুক্রবার (১১ জুন) বিকেলে মাদারীপুর শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনয়াতনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান।
সভায় মাদারীপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন সেলিম এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান, মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সৈয়দ আবুল বাসার,জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান,সাবেক কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিলুর রহমান সোহাগ তালুকদার, মস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদ্দুস মল্লিক, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ এজাজ আকন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাজাহান খান বলেন, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকালে গ্রেফতার হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।ঐ সময় বেশ কয়েকটি মামলায় প্রায় ১১ মাস কারাবন্দি ছিলেন তিনি। পরে জরুরি অবস্থার মধ্যেই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন ও প্রতিবাদের মুখে এবং উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে আট সপ্তাহের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। মুক্তি পেয়েই চিকিৎসার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই তার অস্থায়ী জামিনের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়।২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফিরলে স্থায়ী জামিন দেওয়া হয় তাকে।
পরে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়ের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগসহ মহাজোট সরকার গঠিত হয়। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারসহ চতুর্থ বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, যেদিন থেকে আওয়ামীলীগ সরকার পুনরায় নির্বাচিত হন সেদিন থেকে দেশের মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন।এছাড়া প্রধানমন্ত্রী তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর আদর্শকে বুকে ধারন করে তার স্বপ্নকে একে একে বাস্তবায়ন করে চলেছেন।তাই বাংলাদেশ আজ দেশ-বিদেশে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।এ সবই তার অবদান।তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই।
এসময় শাজাহান খান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা তার বাবাকে নিয়ে যে কটুক্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন,আমার পিতা মৌলভী আচমত আলী খান মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সভাপতি ছিলেন।এছাড়া তিনি মাদারীপুরে সংসদ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠসহচর ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন।শাহাবুদ্দিন মোল্লা আমার পিতার পদক পাওয়া ও মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভুমিকা নিয়ে সমলোচনা করেছেন আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন, আমার পিতা যখন রাজনীতি করেন তখন তার জম্নই হয়নি।তিনি আমার পিতার মূল্য বুঝবেন কিভাবে।তাই আমার পিতাকে নিয়ে যেই ভুল মন্তব্য করেছেন তার জন্য প্রকাশ্য দিবালোকে তাকে মাফ চাইতে হবে।সেই সাথে তার পদ থেকে অব্যাহতি দাবি জানাচ্ছি।আর তানা হলে আমাদের প্রতিবাদ চলবেই।
শাজাহান খান আরও বলেন, এক সভায় শাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেছেন, আমি নাকি ঢাকায় গিয়ে খালেদা জিয়াকে গালি-গালাজ করে মাদারীপুর ফিরে এসে বিএনপি-জামাতকে পূর্নবাসন করি এবং তাদের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করি। আমি কখনোই বিএনপি-জামাতকে পূর্নবাসনতো দুরের কথা বরং তাদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে আগুণ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলাম।তারা কি দাড়িয়েছিল ? দাড়িয়েছিলাম আমি। জীবনের ঝুকি নিয়ে তখন ফাইট করেছিলাম। তারা তখন কোথায় ছিল।তিনি বলেন,এই শাহাবুদ্দিন মোল্লা বিগত বিএনপি চারদলীয় জোট ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে হাওয়া ভবনের কর্নধার তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাথে ঘনিষ্টতা করে তাদের সাথে ব্যবসা করেছিলেন।এটা সবাই জানে।যারা মিথ্যের উপর ভিত্তি করে রাজনীতি করে তারা সবই মিথ্যা বলে, এই রাজনীতি বেশিদিন টিকবে না।
অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।