র্যাব-৪ এর অভিযানে ভুয়া চাকুরিদাতা ১৪ প্রতারক গ্রেফতারঃ ৪৪ জন ভুক্তভোগী উদ্ধার
এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। সাম্প্রতিক কালে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ জনগনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র। জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি এসব প্রতারক চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা তৎপর।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ২০/০৯/২০২০ তারিখ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারা যায় যে, ‘‘দিকরা সিকিউরিটি এন্ড লজিস্টিক সার্ভিসেস লিমিটেড” নামক একটি কোম্পানী চাকুরীপ্রার্থী মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেওয়ার নাম করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল ২০/০৯/২০২০ তারিখ বিকাল ১৪.৩০ ঘটিকা হতে রাত ২২.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে (ক) ‘‘দিকরা সিকিউরিটি এন্ড লজিস্টিক সার্ভিসেস লিমিটেড”, পল্লবী, (খ) আনোয়ারা লজিস্টিক এন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড, সেনপাড়া, কাজীপাড়া (গ) আনোয়ার লজিস্টিক এন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড, আদাবর, মোহাম্মদপুর এ তিনটি শাখা হতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভুয়া চাকুরীদাতা প্রতারক চক্রের নিম্নোক্ত ১৪ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয় এবং ৪৪ জন ভুক্তভোগী চাকুরীপ্রার্থী উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলোঃ
১। মামুন হোসেন বিল্লাল (৩৬) জেলা-বরিশাল
২। মোঃ উজ্জল মিয়া (২৫), জেলা-নরসিংদী
৩। মোঃ শরিফুল ইসলাম (২২), জেলা-কুমিল্লা
৪। মোঃ সোহাগ খাঁন (২২) জেলা-টাংগাইল
৫। মোঃ আমানুল ইসলাম (২২) জেলা-পাবনা
৬। মোঃ জাকির হোসেন (২৪) জেলা-নোয়াখালী
৭। মোঃ রায়হান (২০) জেলা-ভোলা
৮। ফোরকান উদ্দীন (৩০) জেলা-চট্টগ্রাম
৯। মনিরুল ইসলাম (২৪) জেলা-ফরিদপুর
১০। মোঃ রাহাত হাওলাদার (২৪) জেলা-পটুয়াখালী
১১। মোঃ আহাদ (২৫) জেলা-লক্ষীপুর
১২। মোঃ আবু রায়হান (২২) জেলা-মুন্সিগঞ্জ
১৩। মোঃ সাহিবুর রহমান (২২) জেলা-রংপুর
১৪। মোঃ আলিফ হোসেন (২০) জেলা-বরিশাল।
এ সময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ২৪টি ভর্তি ফরম বই, ১০টি ভিডিটিং কার্ডের বক্স, ৭০ পাতার চাকুরির নিয়োগ ফরম,০৭টি ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নগদ মোট-৯৭,০০০/-টাকা, ৫ টি রেজিস্টার, ১ টি নোট বুক, ১ টি খাতা, ৫২ সেট চাকরীপ্রার্থীর জীবন বৃত্তান্ত, ৮ টি সিল, ২টি পরিচয়পত্র, ৫টি ভুয়া পোস্টিং ফরম জব্দ করা হয়।


প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া করে বিভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠান খুলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মধ্যশিক্ষিত বেকার ও নিরীহ যুবকদের চাকুরী দেয়ার নাম করে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে প্রতারক চক্রটি নিরীহ ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। আসামীদের আরো জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় এই প্রতারক চক্রের মুল হোতা মামুন হোসেন বিল্লাল (৩৬) জেলা-বরিশাল। তার তত্ত্বাবধানে উপরোক্ত ০৩টি ভুয়া প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হতো। মামুন ছাড়াও পলাতক আরও ৪/৫ জন এই প্রতারণার কাজে জড়িত। এছাড়াও পলাতকদের গ্রেফতারের জোড় প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উক্ত গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতারক চক্রদের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং গ্রেফতার করার জন্য গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতেও এইরুপ অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।