শিরোনাম

South east bank ad

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান বন্ধ হয়নি বরং তা সাম্প্রতিক সময়েও অব্যাহত রয়েছে: র‍্যাব

 প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   র‍্যাব

গত বছর থেকে শুরু হওয়া ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান বন্ধ হয়নি বরং তা সাম্প্রতিক সময়েও অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

তিনি বলেন, গত বছর সারাদেশব্যপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র‍্যাব। রাজধানীতে আটটি ও বন্দর নগরীতে তিনটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে আনুমানিক ২৭০ কোটি টাকার মতো এফডিআর ও নগদ টাকা উদ্ধার হয়। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে র‍্যাব সদর দফতরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের এক বছর উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আশিক বিল্লাহ এসব কথা বলেন।

হঠাৎ করেই শুরু হওয়া শুদ্ধি অভিযান, একে একে ধরা পড়ে ক্ষমতাসীন দলের অনেক বড় নেতা। ক্যাসিনোকাণ্ডে তোলপাড় শুরু হয় গোটা দেশে। আগামীকাল ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পূর্ণ হতে যাচ্ছে এক বছর।

আশিক বিল্লাহ বলেন, আগামীকাল ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের এক বছর। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর প্রথম দিন। সারাদেশব্যাপী ক্যাসিনোবিরোধী যে অপারেশন বর্তমান সময়ে স্থগিত আছে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে র‍্যাবের ক্যাসিনোবিরোধী অপারেশন ফৌজদারি দণ্ডবিধি চলমান রয়েছে। এরমধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইনভিত্তিক ক্যাসিনো অপারেশন। এ ধরনের অভিযানও সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালনা করে আসছে। অর্থাৎ ক্যাসিনোবিরোধী যে অভিযান বর্তমানেও অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয় এগারোটি। এরমধ্যে রাজধানীতে আটটি ও চট্রগ্রামে তিনটি। ক্যাসিনো অভিযানে ৩২টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আদালত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে ১৪টি মামলা তদন্ত করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় র‍্যাব।

১৪টি মামলার মধ্যে ১৩টি মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেছে র‍্যাব। বাকি একটি মামলা আদালতের নির্দেশক্রমে চার্জশিট স্থগিত আছে।

তিনি বলেন, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযানে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে নিয়মিত মামলা প্রদান করা হয়।
ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার সম্রাট ও জি কে শামীমদের মতো গডফাদার বা তাদের প্রশ্রয়দাতাদেরও চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে বলে র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হলেও কার্যত দেখা যায় নি।

সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আশিক বিল্লাহ বলেন, মূলহোতা বা পৃষ্ঠপোষক এরকম একটি কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমেও এসেছে যা র‍্যাবের নজরে এসেছে। এখানে মূলত র‍্যাব পরিষ্কার করতে চায়,ফৌজদারি অপরাধভিত্তিক যে বিষয়গুলো থাকে সেগুলোতে র‍্যাব চার্জশিট দাখিল করেছে। চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। বিচার প্রক্রিয়ায় যদি এরকম কোনোকিছু উপস্থাপিত হয় সেটি আদালতের নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অনলাইন ক্যাসিনো কয়টা গ্রুপ অথবা কারা কারা পরিচালনা করছে তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য র‌্যাব জেনেছে কিনা জানতে তিনি বলেন, মূলত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন ভিত্তিক ক্যাসিনো সেটি র‍্যাবই সর্বপ্রথম আলোচনায় নিয়ে আসে এবং এর মূল আসামি কারা হেফাজতে আছে। এছাড়াও বর্তমান সময়ে ছোটখাটো যে অভিযোগগুলো পায় অনলাইনভিত্তিক কিন্তু তারা সেরকম কোনো বড় গ্রুপ নয় ছোটখাটো বিদেশি ডোমেইন থেকে মূলত এগুলা পরিচালিত করা হয়। এরকম বেশ কিছু বিষয় র‍্যাবের নজরে এসেছে এবং সে সকল বিষয় নিয়েও র‍্যাব কাজ করছে।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর প্রথম দিনই ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। ঐদিন সন্ধ্যায় গুলশানের বাসা থেকে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সীমান্ত এলাকা থেকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে।

শুদ্ধি অভিযানের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসে গণপূর্তের ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের টেন্ডার বাণিজ্য। জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ গণপূর্তের ৩ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন গ্রুপের কাজের টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণ করে। গ্রেপ্তার হন মোহামেডান ক্লাবের পরিচালক মো. লোকমান হোসেন ভূইয়া, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনো পরিচালনাকারী এনামুল হক আরমান, কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিফুল আলম ফিরোজ, অনলাইন ক্যাসিনোর প্রধান সমন্বয়কারী সেলিম প্রধান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান, মোহাম্মদপুরের ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা ময়নুল হক ওরফে মনজু। ক্যাসিনো অভিযান শুরুর পর অনেকেই গা ঢাকা দেন। কেউ কেউ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতে আত্মগোপন করেন।

BBS cable ad

র‍্যাব এর আরও খবর: