ঝালকাঠিতে টিসিবির পণ্য কিনতে গ্রাহকদের বিড়ম্বনা

মোঃ রাজু খান (ঝালকাঠি) :
মাহে রমজান উপলক্ষে ঝালকাঠিতে নিত্যপণ্য বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিপিবি)। শরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে খেজুর-ছোলাসহ ছয়টি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। বিক্রয়কাজে ডিলারের নিয়োজিত ব্যক্তিদের ইচ্ছে মতো পণ্য না কিনলে গ্রাহকদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। ৬টি পণ্য একত্রে না কিনলে তাকে দেয়া হচ্ছে না খুচরা কোন পণ্য। তবে অভিযোগ উঠেছে পূর্ণ প্যাকেজ ছাড়া অনেক পয়েন্টেই এ নিত্যপণ্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে না। যদিও এমন কোনো নিয়ম বেঁধে দেয়নি টিসিবি। যার যে পণ্যটি প্রয়োজন তিনি সেই পণ্যটিই টিসিবির বিক্রয় পয়েন্ট অথবা ট্রাক থেকে কিনতে পারবেন। কিন্তু কতিপয় ডিলার নিজ ব্যবসায়িক স্বার্থে সাধারণ ক্রেতাদের প্যাকেজ কিনতে বাধ্য ও জিম্মি করছেন। শহরের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, মাহে রমজান উপলক্ষে টিসিবির পণ্য দিচ্ছে সরকার। চিনি, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, খেজুর, ছোলা, পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। পুরো রমজান পর্যন্ত টিসিবির এ বিক্রি কার্যক্রম চলবে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে, জেল গেইট, ফায়ারসার্ভিসের সামনে, পুরাতন কলেজ খেয়াঘাট, পৌরসভার সামনে, থানার মোড়, সাধনার, কলেজ মোড়, আড়দ্দারপট্টিসহ বিভিন্ন টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে। তবে কারও তেল, চিনি, ডাল প্রয়োজন, পেঁয়াজের দরকার নেই। আবার কারও পেঁয়াজ প্রয়োজন, অন্য পণ্য লাগবে না। কিন্তু টিসিবি ডিলারদের ট্রাক থেকে পণ্যগুলো এভাবে আলাদা করে কিনতে পারছেন না। একসঙ্গে প্যাকেজের মতো তাদের সবই কিনতে হচ্ছে ৯শত টাকা দিয়ে। এতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে গ্রাহকদের মধ্যে। নিজেদের ব্যবসায়িক সুবিধায় ডিলাররা এভাবে ইচ্ছেমতো পণ্য বিক্রি করছেন। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নিম্নআয়ের ক্রেতারা। অথচ ‘প্যাকেজ’ করে পণ্য বিক্রির কোনো নিয়ম নেই। অভিযোগ উঠার পর টিসিবি কর্মকর্তারা মৌখিকভাবে ডিলারদের সতর্ক করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না! কেউ শুধু একটি বা দু’টি পণ্য চাইলে তাকে ফেরত দিচ্ছে। ঝালকাঠি শহরের সড়কে নিকি এন্টারপ্রাইজ নামে টিসিবি ডিলার পাঁচটি পণ্য দিচ্ছে ন্যায্যমূল্যে। এগুলো হচ্ছে- তেল, চিনি, ডাল, ছোলাবুট ও পেঁয়াজ। খেজুর বিক্রির শুরুতেই নাকি শেষ হয়েছে বলে জানান ডিলার নিয়োজিত টিসিবি পণ্য বিক্রেতা কবির হোসেন। খেজুর সহ ৬টি পণ্য একত্রে প্যাকেজ করে ৬০০টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে। পাঁচটি পণ্য প্যাকেজ করে ৮১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। লম্বা লাইনে দাঁড়ানো ক্রেতারা জানান তাদের প্রয়োজন তেল ও পেঁয়াজ। কিন্তু প্যাকেজ না নিলে ডিলার কোনো পণ্য দিচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই তাই অতিরিক্ত টাকা গুনতে হলো তাদের। এদিকে ৯০০ টাকা না থাকায় লাইনে দাঁড়ানো অনেকেই পণ্য কিনতে না পেরে ফেরত গেছেন। এ প্রসঙ্গে ডিলারের প্রতিনিধি কবির হোসেন বলেন, আমাদের সব মালপত্র চলে না এভাবে প্যাকেজ না করলে। তাই এভাবে বিক্রি করছি। এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক ইদ্রানী দাস বলেন, আমি যতদূর জানি, টিসিবির সব পণ্য বিক্রি করতে বলেছে জেলা প্রশাসন। তাই হয়তো ডিলাররা এ পদ্ধতিতে পণ্য বিক্রি করছেন। তাই প্রশাসনের সঙ্গে কথা না বলে কিছুই করতে পারব না। ডিলারদের প্যাকেজ পদ্ধতিতে পণ্য বিক্রির বিষয়টি অবগত হয়ে টিসিবি’র বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী কার্যনির্বাহী (অফিস প্রধান) পদে দায়িত্বে থাকা শাহিদুল ইসলাম জানান, আমি এ মুহ‚র্তে ঘটনাস্থলে যেতে পারছি না। তাই বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা ঘটনার সত্যতা পেলে ডিলারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। তবে প্যাকেজ করে পণ্য বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ ও অন্যায়।