সামাজিক মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখেই ত্রাণ পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান
দেশের চলমান এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ত্রান নিয়ে অসহায় গরীব দুঃখী ও কর্মহীন মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। ত্রান দেয়া এই কার্যক্রমে মানবিকতার চেয়ে অমানবিকতাও কম হয় নি। ঢাকঢোল পিটিয়ে মানুষ জড়ো করে ছবি তুলে কিছু সাহায্য করে দানবীর হতে চেয়েছেন অনেকে। এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে প্রচারনা চলছে। যে কারনে এসব ত্রান মানবিক না হয়ে হয়েছে অমানবিক। সামান্য একটু সাহায্যে পরিবারকে করেছে হেয় পতিপন্ন। যে কারনে সমাজে হেয় হওয়ার প্রশ্নে অনেক নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার অসহায়ত্বের কষ্ট সহ্য করছে। তবুও ত্রান সাহায্য পেতে বিকিয়ে দিচ্ছেন না তাদের সামাজিক মর্যাদাটুকু। যাদের কথা অনেককেই ভাবেন না কিংবা ভাবার সময়ও হয় না। কিন্তু সমাজের এই শ্রেনীর মানুষের কথা ভেবেছেন মহানগর পুলিশের কমিশনার মোঃ শাহবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার)।
যারা প্রকাশ্যে ত্রান বা সহযোগিতা পেতে বা চাইতে সংকোচ বোধ করেন তাদের জন্য এগিয়ে এসেছেন তিনি। বিশেষ পদ্ধতিতে গোপনে তিনি সেই সকল পরিবারকে ত্রান দিয়েছেন। এতে ত্রান নেয়া কোন পরিবারকে কোথাও জড়ো হতে হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে ত্রান নিতে আসা পরিবারের সদস্যদের নিজের চেহারাটি পর্যন্ত দেখাতে হয়নি। বিস্ময়কর উপহার হিসাবে অনেকে দরজা খুলেই দেখতে পেয়েছেন পুলিশ কমিশনারের মানবিকতার ত্রান।
মহানগর পুলিশ কমিশনারের এমন মানবিক ত্রান কার্যক্রম সফল করছেন অপরাপর পুলিশ সদস্যরা। যারা রাতের আধারে সাহায্য প্রার্থীর বাসায় পৌছে দিচ্ছেন এসব ত্রান সামগ্রী।
এ বিষয়ে পুলিশের স্টাফ অফিসার কাউনিয়া থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আবদুল হালিম বলেন, সমাজে কিছু শ্রেনী পেশার মানুষ আছে যারা প্রকাশ্যে ত্রান বা সহযোগিতা পেতে সংকোচ বোধ করেন। যারা জনসমাগম করে ত্রান নিতে চান না। বিশেষত তাদের কথা চিন্তা করেই কমিশনার স্যার এমন ত্রান বিতরন কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি বলেন, আমাদের ফেসবুক পেজ ম্যাসেঞ্জার কিংবা হট লাইন নম্বরে যারা ত্রান সহায়তা চেয়েছেন রাতের আধারে তাদের দরজায় পুলিশ সদস্যরা ত্রান পৌছে দিয়েছে। এমনও হয়েছে সহযোগিতা চাওয়ার পরে তাকে না জানিয়ে তার বাসার দরজায় ত্রান রেখে আসা হয়েছে। সকালে দরজা খুলে উপহার ত্রান সানন্দচিত্তে সেই পরিবার গ্রহন করেছেন। পরে ধন্যবান বার্তায় ত্রান পাওয়ার বিষয়টি পুলিশকে নিশ্চিত করেছেন পরিবার। তিনি আরো বলেন, শুধু এই সংকোচ বোধ করা পরিবারকেই নয়, সমাজের বিশেষ শ্রেনী বেঁদে, হিজড়া সম্প্রদায়কেও ত্রান সহায়তা করেছে পুলিশ কমিশনার। তিনি আরো বলেন, ত্রান সামগ্রীর মধ্যে ছিলো চাল, ডাল, তেল পিয়াজ ও আলু। কিন্তু কোন ব্যক্তি বা পরিবারের চাহিদা মোতাবেক শিশু খাদ্যও দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নগরীর প্রায় ৮’শ পরিবারকে ত্রান সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আর এ সব কিছু করা হয়েছে মহানগর পুলিশের নিজস্ব তহবিল থেকে। যারা ত্রান পেয়েছেন তারা ছাড়া আর কেউই জানতে পারেনি মহানগর পুলিশ কমিশনারের মোঃ শাহাবুদ্দিন খানের গোপন মহানুভবতার কথা।