ওয়ারলেস নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন, গ্রেফতার ৭

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

কখনো ডিজিএফআই কখনো সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা রমনা বিভাগ।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. মাসুদ রানা, মো. মাহফুজ হাসান, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. মনিরুল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম, মো. রুস্তম আলী ও মো. মনিরুল ইসলাম। তাদের রাজধানীর ভাষানটেকের একটি বাসা ও মিরপুর-১ এর সনি সিনেমা হলের পেছন থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।

এ সময় তাদের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর ক্যামোফ্লজ ব্যাগ, টি-শার্ট, সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআইয়ের ভুয়া আইডি কার্ড, সেনাবাহিনীর নকল সিল ও সই করা ভুয়া নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে এ সংক্রান্তে বিস্তারিত তুলে ধরেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ভুয়া ডিজিএফআই বা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১ আগস্ট ডিএমপির রমনা মডেল থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়। মামলাটি ছায়া তদন্ত করে গোয়েন্দা রমনা বিভাগ তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারদের প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, গ্রেফতাররা পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া ডিজিএফআই বা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সেজে চাকরিপ্রার্থী বা গ্রামাঞ্চলের সহজ সরল মানুষকে মিষ্টি ভাষায় বুঝিয়ে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরির কথা বলে। বিনিময়ে প্রতি পদের জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে। চাকরি প্রত্যাশীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে যোগাযোগ করলে ভুয়া নিয়োগপত্র পোস্ট অফিসের মাধ্যমে তাদের ঠিকানায় পাঠায়। এ চক্রের সদস্যরা নিজেরাই সিভিলে ওয়ারলেস সেট নিয়ে নিয়োগ প্রত্যাশীদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন করে বিশ্বাস যোগ্যতা বাড়ায়।

আরও বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জনের জন্য ক্যান্টনমেন্টের রজনীগন্ধা মার্কেটের ঠিকানা ব্যবহার করে। সেইসব ভুয়া নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিতে যোগদান করতে গেলে প্রতারকরা বলে যোগদানপত্রে একটু ভুল আছে, পরবর্তী সময়ে আবার নিয়োগ পত্র পাঠানো হবে। এভাবে কয়েকবার করার পর মোবাইলে কথা বললে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারদের কেউ কেউ এ চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে নিজেরাই এ প্রতারণার চক্রে যোগ দেয়। কেউ ডিবি বা অন্য কোনো সংস্থার পরিচয় দিয়ে যদি কারও কাছে যায়, তাহলে প্রথমে যাচাই-বাছাই করে তারা প্রকৃত ডিবি বা ডিজিএফআই বা এনএসআই কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন হারুন অর রশীদ। এছাড়াও যেকোনো বাহিনীর নামে আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

ডিবি প্রধান বলেন, চাকরির কথা বলে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আত্ততায় আনা হবে।