শিরোনাম

South east bank ad

চাঞ্চল্যকর শিশু বাচ্চা গোলাম রব্বানী হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী সহ ০২জন আসামী গ্রেফতার

 প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   থানার কথা

জনাব বিপ্লব কুমার সরকার, বিপিএম-বার, পিপিএম, পুলিশ সুপার রংপুর এর দিক নির্দেশনায় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জনাব মোঃ কামরু জামান, (পিপিএম-সেবা) রংপুর এর তত্বাবধানে মিঠাপুকুর থানার একটি অভিযানিক টিম সুলুঙ্গা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার বিশেষ অভিযানে চাঞ্চল্যকর শিশু বাচ্চা গোলাম রব্বানী @ রাব্বী(৭) হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী সহ ০২জন আসামী গ্রেফতার!! হত্যাকান্ডে ব্যবহত ০১টি মোবাইল, ০৯টি সিম ও একটি প্লাষ্টিকের বস্তা উদ্ধার করেন।
২০/১১/২০২০ ইং তারিখ বেলা অনুমানিক ১০.০০ ঘটিকায় ভিকটিম রাব্বী তার বাড়ীর পাশের মাঠে খেলতে যায়। এরপর দুপুর গড়িয়ে গেলেও বাসায় না আসায় তার বাবা, মা ও প্রতিবেশীরা বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি শুরু করে। পরের দিন মিঠাপুকুর থানায় ভিকটিমের মা একটি জিডি করে যার নম্বর ১৩৬১ তারিখ-২১/১১/২০২০খ্রিঃ। এ ঘটনার পরের দিন শনিবার সন্ধ্যায় অপহরণকারীরা রাব্বীর বাবার মোবাইলে কল দিয়ে ৩০,০০০/-টাকা মুক্তিপন দাবী করে। তার বাবা মা টাকা জোগাড় করতে থাকে। এরই মধ্যে ২৩/১১/২০২০ তারিখ সকাল ০৯.০০ ঘটিকায় প্রতিবেশী জণৈক মোতাসেল এর ধান ক্ষেতে ভিকটিম রাব্বী এর লাশ পাওয়া যায়। উক্ত হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মিঠাপুকুর থানার মামলা নং-৩৮ তারিখ-২৪/১১/২০২০খ্রিঃ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড।
উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করে। এর প্রেক্ষিতে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে হত্যাকারীদের খুজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুতার সাথে তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এই ধারাবাহিকতায় মাত্র ১২ ঘন্টার মধ্যে মিঠাপুকুর থানার একটি অভিযানিক টিম সুলুঙ্গা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বর্নিত হত্যা কান্ডের সহিত জড়িত সংঘাতে জড়িত শিশু মোঃ আল আমিন হোসেন (১৬) এবং মোঃ মহিদুল ইসলাম @ মুসফিকুর (২৪) গ্রেফতার করে। ধৃত আসামী ও সংঘাতে জড়িত শিশু জিজ্ঞাসাবাদে বর্নিত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
১। মোঃ আল আমিন হোসেন(১৬), পিতা-মোঃ বাদল মিয়া, সাং-সুলুঙ্গা, থানা-মিঠাপুকুর, জেলা-রংপুর। সে স্থানীয় চেতনা পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। তিন ভাইবোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়।
২। মোঃ মহিদুল ইসলাম @ মুসফিকুর (২৪), পিতা-মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সাং-সুলুঙ্গা, থানা-মিঠাপুকুর, জেলা-রংপুর। সে রবি টাওয়ারে কাজ করতো। ব্যাটারী চুরি করার কারনে তার চাকুরী চলে যাওয়ায় সে জীবিকা নির্বাহের জন্য চুরি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মহিদুল ও আল আমিন প্রতিবেশী এবং তারা সর্ম্পকে চাচা ভাতিজা। আল আমিন আইপিএল জুয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং ২০,০০০/-টাকা ঋণগ্রস্থ হয়। উক্ত টাকা পাওনাদাররা বার বার চাওয়ার কারনে সে মহিদুলের কাছে টাকা ধার চায়। মহিদুল তখন তাকে বুদ্ধি দেয় যে তার কাছে কোন টাকা নাই সে বলে যে, ভিকটিমের বাবা রফিকুলের অনেক টাকা আছে। তাই তার বাচ্চা কে অপহরণ করতে পারলে বেশ কিছু টাকা আদায় করা যাবে। মহিদুল তাকে ০২টি ঘুমের ঔষধ দেয়। মহিদুলের পরামর্শে সে রাব্বীকে চকলেট দেওয়ার কথাবলে শুক্রবার ১১.০০ টার দিকে তাকে তার বাসায় আনে এবং চকলেটের সাথে কৌশলে উক্ত ০২টি ঘুমের ঔষধ সেবন করায়। ঘুমের ঔষধ সেবন করার পর ১৫ মিনিটের মধ্যে রাব্বী অচেতন হয়ে যায়। এরপর মহিদুলের পরামর্শে সে এবং মহিদুল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাব্বীকে বস্তার মধ্যে ভরে বাড়ীর পার্শ্বে খড়ের গাদায় রাখে এবং পর্যায়ক্রমে পাহারা দিতে থাকে। এরপর রাত ১১.০০ দিকে রাব্বী জেগে গেলে তাদেরকে চিনতে পারে এবং চিৎকার করার চেষ্টা করে। উপায় অন্ত না দেখে তারা তৎক্ষনাত ০২জন মিলে রাব্বীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুয়ায়ী তারা রাব্বীকে বস্তাতে ভরে পার্র্শ্বের মাঠে নিয়ে যায় এবং গলা টিপে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ধানে ক্ষেতে ফেলে রেখে চলে যায়।
এরপর তাদেরকে যেন সন্দেহ করতে না পারে সেই জন্য মহিদুলের পরামর্শমতে আল আমিন অপহরনকারী সেজে তার মোবাইল থেকে ভিকটিমের বাবা রফিকুলকে মুক্তিপনের টাকা দেওয়ার জন্য তার ছেলেকে হত্যার পরও কল দিতে থাকে। পরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় হত্যা কান্ড সংঘটনের পর ধৃত আসামীদ্বয় আটক হওয়ার পুর্ব পর্যন্ত মুক্তিপনের টাকা দাবী করা সহ স্বাভাবিক জীবন যাপন করিতে থাকে।

BBS cable ad

থানার কথা এর আরও খবর: