এলজিইডি ও সওজ’র ঠেলাঠেলির পরে রাজাপুরের ঝুকিপূর্ণ বেইলী সেতু সংস্কার করে দিলেন ওসি

মোঃ রাজু খান (ঝালকাঠি):
ঝালকাঠির রাজাপুরে বাগড়ি থেকে থানায় অথবা উপজেলায় যেতে বধ্যভূমি সংলগ্ন সংযোগকারী একমাত্র বেইলী সেতুর উত্তর প্রান্তের একটি পাত (স্লাব) ভেঙ্গে গর্ত হয়ে মরণ ফাঁদের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়িতই ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে সড়ক ও জনপদ বলছে সেতুটি তাদের আওতায় না। একইভাবে এলজিইডিও বলছে সেতুটি তাদের আওতায় না। দু’বিভাগের এমন ঠেলাঠেলিতে সংস্কার হচ্ছে না সেতুটি।
এনিয়ে এলাকাবাসির প্রশ্ন, তাহলে আসলে ব্রীজটি কার? এর অভিভাবক কে? সংস্কার করার দায়িত্ব কোন দপ্তরের? বড় কোন দুর্ঘটনা দেখার অপেক্ষায় আছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ? তাঁদের কি রক্ত অথবা মৃতদেহ প্রয়োজন? লাশ না হলে ব্রিজটি সংস্কার করা হবে না?
সকল প্রশ্নের সমাধান করে দিলেন রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সোমবার রাতে ব্রিজটি সংস্কার করে উপজেলাব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
সোমবার দুপুর থেকে ব্রিজের দুভোর্গের ছবি সচেতন মহল ফেসবুকে পোস্ট করেন। বিকেলের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। বিষয়টি নজরে আসে রাজাপুর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলামের। এরপর তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থানীয় ওয়ার্কশপের সাথে কথা বলে ব্রিজটি সংস্কার করে জনসাধারনের নির্বিঘ্ন চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন।
ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, জনসাধারনের চলাচলের সুবিধার্থে এবং দুর্ঘটনামুক্ত রাখতে মানবিক দিক থেকে সামান্য প্রচেষ্টা করেছি। যেহেতু ব্রিজটি থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকজন যাতায়াত করে তাই বিপদ মুক্ত থাকতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মেরামত করেছি। এটা বড় কিছু করতে পারি নাই।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রীজটির সকল পাত ভালো থাকলেও উত্তর প্রান্তের দুটি পাত বিভিন্ন স্থান থেকে অগনিত ছিদ্র হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছুদিন আগে ওই স্থানের মাঝের পাতটি ভেঙ্গে গর্ত হলে কয়েক দিন ভোগান্তির পরে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য তারিকুল ইসলাম তারেক ব্যক্তি উদ্যোগ ও খরচে মেরামত করেছিলেন। বর্তমানে আগের মেরামত করা স্থানটির পাশ থেকেই আগের মতোই একটি বড় গর্ত হয়েছে। এতে প্রায়ই রিক্সা, অটো ও মোটর সাইলের চাকা আটকে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন ওই বাহনের চালক, মালিক ও যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানান, ব্রীজটি দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন বাহনসহ হাজার হাজার মানুষ পারাপার হচ্ছেন। এটা রাজাপুর সদরের অত্যন্ত একটি গুরুত্বপুর্ণ ব্রীজ। এমনকি ব্রীজটি থানার সামনে হওয়ায় পুলিশের ঝালকাঠি জেলা সদরের সাথে দ্রুতভাবে যোগাযোগ করার একমাত্র উপায়। তাই ব্রীজটি ভালোভাবে মেরামত করা খুবই জরুরী। দিন দিন একটু একটু ছিদ্র মেরামত না করে ওই নষ্ট হওয়া পুরা পাত দুটি (স্লাব) পাল্টিয়ে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়রা দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে রাজাপুর এলজিইডি প্রকৌশলী মোঃ গোলাম মস্তফা জানান, সড়ক এলজিইডি’র হলেও ষ্টীল ব্রীজের দায় দায়িত্ব এলজিইডি’র নয়।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদের উপ-বিভাগিয় প্রকৌশলী মোঃ হুমায়উন কবির বলেন, সড়ক আমাদের নয়, তাই ষ্টীল ব্রীজের দায়দায়িত্বও আমাদের নয়।