আপন আলোয় আলোকিত প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নাদভী

মানুষ যে আপন আলোয় আলোকিত হতে পারেন সাংসদ প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নাদভী তারই প্রমাণ। তিনি একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ব্যক্তিত্ব। একাধারে তিনি একজন শিল্পপতি, রাজনীতিক, কলামিস্ট, সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী। এমনি একজন স্বনামখ্যাত মানুষ। তিনি দলমতের উর্ধ্বে উঠে একজন জাতীয় নেতা।
ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নাদভী সদা কর্মচঞ্চল, মানবদরদি ও দানশীল ব্যক্তিত্ব। সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন যদি কেউ এমন কোনো আদর্শবান রাজনীতিবিদ কিংবা সমাজসেবীর নাম বলতে চান তাহলে নিঃসন্দেহে তার নাম বলতে হবে। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাহায্যের হাত বাড়ানো এবং অসহায় মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে একজন উঁচুমাপের সমাজসেবক হিসেবে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। অসম্ভব মেধা, প্রচ- আত্মবিশ্বাস ও সময়োপযোগী কর্মোদ্যগের মাধ্যমে বহু আগেই তিনি গড়ে তুলেছেন অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নাদভী প্রথম কোন ব্যক্তি যে কিনা চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে রেকর্ড পরিমাণ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার রয়েছে একটি ইতিহাস। ব্রিটিশ শাসনামলে প্রশাসনিক ও বিচার কাজের স্বার্থে এই এলাকায় আদালত ভবন স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে বর্তমানে অবস্থিত আদালত ভবনের নামে ০৭ কানি ভূমি (৪০ শতকে ১ কানি) জনৈক পেটান নামক এক জমিদার সরকারের অনুকূলে হস্তান্তর/দান করায় তখন হতে এ উপজেলার নামকরণ সাতকানিয়া হয় মর্মে জনশ্রুতি আছে। উল্লেখ্যে ঐ সময় হতে বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলা নিয়ে সাতকানিয়া সার্কেল নামে পরিচিত ছিল। সার্কেলকে আপগ্রেড করে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষে পৃথক পৃথক উপজেলা সৃজনের মাধ্যমে আজকের সাতকানিয়া একটি স্বতন্ত্র উপজেলায় পরিগণিত হয় ১৯৮৩ সালে। আর লোহাগাড়া উপজেলা এক সময় সাতকানিয়ার অধীনে ছিল। ১৯৮১ সালে লোহাগাড়া থানা আলাদা থানায় রূপান্তরিত হয় এবং ১৯৮৫ সালে উন্নীত হয় উপজেলায়।
স্থানীয় সাংসদ ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নদভীর মতে, ব্যবসায়ী ও পীর আউলিয়ার এলাকা হিসাবে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু এলাকাটি স্বাধীনতা বিরোধীদের ঘাঁটি হিসাবে দেশব্যাপি একটি অপবাদ ছিল। এখন আমরা সে অপবাদ থেকে মুক্ত। আমার বিজয়ের মাধ্যমে সাতকানিয়া-লোহাগাড়াবাসী কলংকমুক্ত হয়েছে। আমার পরিকল্পনা সাতকানিয়া-লোহাগাড়াকে উন্নয়নের দিক থেকে পুরো দেশের মধ্যে মডেল হিসেবে গড়ে তোলা।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের বিখ্যাত মক্কারবাড়ীর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৬৮ সালে প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আল্লামা আবুল বারাকাত মুহাম্মদ ফজলুল্লাহ (১৮৯৮-১৯৭৯) ভারত উপমহাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ছিলেন।
ড. আবু রেজা নদভীর দাদা মরহুম মাওলানা নূরুল হুদা একজন সুপ্রসিদ্ধ আলেম ও আধ্যাত্মিক সাধক ছিলেন। শরীয়ত সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য সাধারণ মানুষ ছাড়া ও তৎকালীন বড় বড় আলেমগণ তাঁর শরণাপন্ন হতেন।
গোঁড়ামীমুক্ত উদার ধর্ম চর্চার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযোদ্ধে ড. আবু রেজা নদভীর পরিবারের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। তাঁর সহোদর বড় ভাই আবু জিয়া মুহাম্মদ শামছুদ্দিন ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা। আজীবন তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে সংগ্রাম করেছেন।
একজন কীর্তিমান মানুষের জীবন্ত প্রতিভূ ড. আবু রেজা নদভী। পরশ পাথরতুল্য এ মানুষটি কর্মজীবনে যেখানেই পা রেখেছেন সেখানেই সফল হয়েছেন। যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই উন্মোচিত হয়েছে নতুন কোন দিগন্ত। তার কর্মময় জীবনের সূচনা হয়েছে শিক্ষকতার মাধ্যমে। বাংলাদেশের কওমী মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন ও সংস্কারের প্রত্যয় নিয়ে বিখ্যাত আরবি সাহিত্যিক আল্লামা সুলতান যওক নদভী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল ইসলামিয়ার আরবি সাহিত্য ও হাদিসের শিক্ষক হিসেবে শুরু হয় ড. আবু রেজা নদভীর কর্মজবিন। শিক্ষকতার পাশাপাশি এখানে তিনি ‘ইসলামী সাংস্কৃতি ফোরাম’ নামে একটি প্লাটফর্ম গড়ে তুলেন। যা ছিল সে সময়ের জন্য কওমী মাদরাসা শিক্ষা জগতে একটি সম্পূর্ণ নতুন ও ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাথে তিনি উতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। বিশ^বিদ্যালয়টির দাওয়া অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতার পাশাপাশি তার ওপর অর্পিত হয় বিদেশ বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব। নব প্রতিষ্ঠিত এ বিশ^বিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতকরণ ও আরব বিশে^র বৃহত্তম দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি ও আস্থা অর্জনের মাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা, অবকাঠামোগত উন্নয়নের এক কঠিন সংগ্রামে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। আন্তরিক প্রচেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রমের ফলে অতি অল্প সময়ে তিনি এ সংগ্রামে সফল হন। মুসলিম বিশে^র শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্বদের বিশ^বিদ্যালয়ের ট্রাস্টি ও সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচিত করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সিতাকুন্ড উপজেলার কুমিরায় আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠাসহ বিশ^বিদ্যালয়ের নানামুখী উন্নয়নে তিনি ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নি¤œরূপ:
১. সংসদ সদস্য: চট্টগ্রাম-১৫, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোয়নে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত)
২. গভর্নর: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
৩. সদস্য: ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
৪. সদস্য: ইমাম ও মোয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৫. চেয়ারম্যান: শরীয়া সুপারভাইজারী কমিটি, ইউনিয়ন ব্যাংক লিঃ।
৬. সদস্য: শেখ যায়েদ বিন সুলতান আলে নাহিয়ান ট্রাস্ট, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
৭. প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান: আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন (এনজিও ব্যুরো নিবন্ধিত একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান)।
৮. সদস্য: শরীয়া সুপারভাইজারী কমিটি, অগ্রণী ব্যাংক লিঃ।
৯. চেয়ারম্যান: দারুল হিকমা এডুকেশন ফাউন্ডেশন ও চিটাগাং ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কার্য নির্বাহী কমিটি।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষত: আরব বিশে^ ড. আবু রেজা নদভী ব্যাপকভাবে সমাদৃত ও পরিচিত একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি মুসলিম বিশে^র বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে:
১. সদস: আন্তর্জাতিক ইসলামী সাহিত্য সংস্থা, জেদ্দা।
২. প্রতিষ্ঠাতা সদস্য: ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন পর মুসলিম স্কলার, কাতার।
৩. ভাইস চেয়ারম্যান, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক রিলিফ অর্গানাইজেশন, বাংলাদেশ অফিস।
৪. সদস্য: ওয়ার্ল্ড ইসলামিক কল সোসাইটি, ত্রিপলী, লিবিয়া।
৫. সদস্য: সৌদি সরকার কর্তৃক গৃহীত ‘হজ¦ বিশ^কোষ’ রচনা কমিটি।
এছাড়াও যেসব আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে, তা হচ্ছে:
অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ও.আই.সি), ইসলামিক সলিডারিটি ফান্ড-জেদ্দা, রাবেতা আল আলম আল ইসলামী (মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগ) মক্কা মোকাররমা, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি), ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক চেরিটেবল অর্গানাইজেশন-কুয়েত, ফেডারেশন অব ইসলামিক অর্গানাইজেশন ইন ইউরোপ, ইউরোপ গবেষণা ও ইফতা পরিষদ-লন্ডন, জাকাত হাউজ-কুয়েত, শেখ যায়েদ বিন সুলতান আলে নাহইয়ান ফাউন্ডেশন-আবুধাবী, কুয়েত ন্যাশনাল কমিটি ফর ডুনেশন কালেকশন, কুয়েত পাবলিক ফাউন্ডেশন, শেখ আবদুল্লাহ নূরী চ্যারিটি সোসাইটি-কুয়েত, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি-আবুধাবী, কাতার চ্যারিটি-কাতার, কাতার অথরিটি ফর চ্যারিটি-কাতার, সুন্নাহ ও সীরাত গবেষণা সেন্টার-কাতার, শারজাহ চ্যারিটি হাউজ-সংযুক্ত আরব আমিরাত ইত্যাদি।
তিনি প্রায় শতাধিক আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রধান আলোচক ও গবেষক হিসেবে অংশ গ্রহণ করেছেন। পরিদর্শন করেছেন বিশ^বিখ্যাত শতাধিক বিশ^বিদ্যালয়। ভ্রমণ করেছেন বিশে^র ৪৫টির বেশি দেশ। আন্তর্জাতিক কোন সম্মেলনে অংশগ্রহণ, কোন বিশ^বিদ্যালয় বা দাতা সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা বা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে তিনি বিম্বের যেসব দেশ ভ্রমণ করেছেন তা হচ্ছে: কুয়েত সরকারের রাজকীয় আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হয়ে কুয়েত সফর (ফেব্রুয়ারি-২০১০)। মাননীয় পধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর (২০১১)। এছাড়াও সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মান, বেলজিয়াম, সুইডেন, লুক্সেমবার্গ, ফিনল্যান্ড, হল্যান্ড, কানাডা, মিশর, ভারত, সিরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওমান, কাতার, লিবিয়া, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, শ্রীলঙ্কা, ব্রুনাই, বাহরাইন, মালদ্বীপ, সেনেগাল, তুরস্ক, মরক্কো, বার্মা ইত্যাদি।
ড. আবু রেজা নদভী তাঁর স্বনামধন্য পিতা মরহুম আবুল বারাকাত মুহাম্মদ ফজলুল্লাহ এর নামে ধর্মীয় উন্নয়ন ও বহুমুখী সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বেসরকারি সেবা ও সাহায্য সংস্থা ‘আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন’। এটি এন.জি.ও ব্যুরো (রেজিঃ নং-১৭৭০) ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত। তিনি এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এ পর্যন্ত সারা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে প্রায় ৫৫০০টি জনকল্যাণমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন।
নি¤েœ তার একটি সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান তুলে ধরা হল:
* বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৫৮০টি মসজিদ নির্মাণ।
* ৮০০টির বেশি অজুখানা নির্মাণ।
* ২৫০০-এর বেশি গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন।
* ৭০টির বেশি বিশ^বিদ্যালয়, মাদরাসা, হিফজখানা ও এতিমখানা ভবন নির্মাণ।
* ২০০ জনের বেশি গরীব ও মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়মিত মাসিক বৃত্তি প্রদান।
* দরিদ্র ও অসহায় লোকদের সাহায্য প্রদান।
* বন্যাদুর্গত এলাকার এবং শীতার্থ মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ।
* প্রতিবছর লক্ষাধিক মুসলমানের মধ্যে ইফতারি ও কোরবানি গোশত বিতরণ।
* প্রতিবছর ২ থেকে ৬ জন গরীব মানুষকে হজ্জ্ব করার সুযোগ প্রদান।
* দরিদ্র লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা (বিশেষ করে সেলাই মেশিন ও রিকশা বিতরণ এবং দোকান ঘর তৈরি) ইত্যাদি।
* গ্রামীণ গরীব মহিলাদেরকে কারিগরী শিক্ষা যথা এম্ব্রয়ডারি, বুটিক, বাটিক ইত্যাদি প্রশিক্ষণপূর্বক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।
* সুদবিহীন ঋণ বিতরণ কর্মসূচী প্রক্রিয়াধীন আছে। ইতিমধ্যে কুয়েতের একটি দাতা সংস্থার সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। খুব শিগগিরই প্রকল্পটি শুরু হবে।
* ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ও এতিম-দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণের জন্য কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন।
* চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানাধীন পদুয়া জনকল্যাণ শিক্ষা কমপ্লেক্স নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের বৃহৎ এতিম প্রতিপালন ও শিক্ষা কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। জানুয়ারি ২০০৮ সাল থেকে এ কমপ্লেক্সে শিক্ষা ও আবাসন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন এ কমপ্লেক্সে অবস্থানরত ৩০০ জন এতিম ছাত্র/ছাত্রীর ভরণ-পোষণ, শিক্ষা উপকরণসহ যাবতীয় প্রয়োজন নির্বাহ করে থাকে।
* চিকিৎসা, গরীব ও এতিমদের বিবাহ উপলক্ষে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়ে থাকে।
* বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক ঘূর্ণিঝড় “সিডর” আক্রান্ত দুর্গত এলাকায় (বাগেরহাট, আমতলী, মোড়েলগঞ্জ) গৃহহীনদের জন্য “আমীরাত পল্লী” নামে ৭২টি ঘর, একটি দাতব্য চিকিৎসালয়, একটি স্কুল ও একটি মাদরাসা সম্বলিত একটি আদর্শ পল্লী নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ও.আই.সি’র অর্থায়নে মাদারীপুর জেলায় আরো ৪২টি ঘর ও একটি সুরম্য মসজিদ সম্বলিত “ওআইসি পল্লী” নামে আরেকটি আদর্শ পল্লী নির্মাণ কাজ সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে।
* ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বিভিন্ন গভেষণামূলক, দাওয়াতী ও মননশীল গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এ লক্ষে ‘মডারেশন সেন্টার ফর রিচার্চ এন্ড ট্রান্সল্যাশন’ নামে একটি আরাদা বিভাগ কাজ শুরু করেছে। এ বিভাগের তত্ত্বাবধানের ইতোমধ্যে ১৫টির মত আরবি গ্রন্থ বাংরায় অনুদিত হয়েছে। যার মধ্যে ১টি গ্রন্থ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। আরো ৫টি বই প্রকাশের পথে।
গবেষণা ও গ্রন্থ রচনায় ড. আবু রেজা নদভী:
বহুমুখী প্রতিভার আধার ড. আবু রেজা নদভীর আরেকটি অন্যতম পরিচয়-তিনি একজন ভাষাবিদ, গবেষক, লেখক ও ইসলামি চিন্তাবিদ। আরবি, উর্দুতে পূর্ণ পান্ডিত্যের পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজী, হিন্দি ও ফার্সীতে রয়েছে তার উল্লেখযোগ্য দক্ষতা। তিনি সর্বপ্রথম সৌভাগ্যবান বাংলাদেশী যার লিখিত আরবি গ্রন্থ কুয়েতের আওকাফ অ্যান্ড ইসলামিক এফেয়ার্স মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়াও তার কয়েকটি অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। আর কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশের পথে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে তার প্রায় ২২ি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নি¤েœ তার গবেষণা প্রবন্ধ ও প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেয়া হল:
গ্রন্থাবলী:
১. হাদীসে নবুবীর আলোকে ফিক্হ ও ফিক্হ শাস্ত্রের মূলনীতি, ১২৮ পৃষ্ঠা, কুয়েত ওয়াকফ ও ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রকাশিত। (আরবি)।
২. মুআলিমুল ইন্শা (১ম খন্ড): (অনুদিত)-আরবি রচনা ও অনুবাদ শিক্ষার অনন্য গ্রন্থ, লেখক: আবদুল মাজেদ নদভী, যা অসংখ্য সরকারি ও কওমি মাদরাসার পাঠ্য তালিকাভূক্ত, পৃষ্ঠা সংখ্যা-১৩৬।
২. মুআলিমুল ইন্শা (২ খন্ড): (অনুদিত)-আরবি রচনা ও অনুবাদ শিক্ষার অনন্য গ্রন্থ, লেখক: আবদুল মাজেদ নদভী, পৃষ্ঠা সংখ্যা-২৩০।
৩. আমাদের কাঙ্খিত শিক্ষা ব্যবস্থা কিরূপ হওয়া উচিত (আরবি)
৪. ভ্রাতৃত্বের পয়গাম (১ম খন্ড): (আরবি থেকে অনুদিত)
লেখক: শেখ নাদের আবদুল আযিয আল্ নূরী, কুয়েত।
৫. ভ্রাতৃত্বের পয়গাম (২য় খন্ড): (আরবি থেকে অনুদিত)
লেখক: শেখ নাদের আবদুল আযিয আল্ নূরী, কুয়েত।
৬. বাংলাদেশ ইসলামী দাওয়াতের ক্রমবিকাশ (আরবি) ভারতের প্রখ্যাত লেখক ও ইসলামি চিন্তাবিদ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভীর ভূমিকাসহ, পৃষ্ঠা-৭৫। (যন্ত্রস্ত)
প্রবন্ধ-নিবন্ধ:
১. বস্তুর প্রকৃতি পরিবর্তন ও ফিক্হর বিধানে তার প্রভাব (আরবি)
২. রাসূল (সা.) এর যুগে শিক্ষা ব্যবস্থা এবং ইহার ৩টি অধ্যায় (আরবি)
৩. কবি মুহাম্মদ ইকবাল ও তাঁর কবিতার দর্শন (আরবি)
৪. জ্ঞান, শিক্ষা ও তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য (আরবি)
৫. আমাদের কাঙ্খিত শিক্ষা ব্যবস্থা কিরূপ হওয়া উচিত (আরবি)
৬. ইসলাম তালাক দেয়ার অধিকার পুরুষের ওপর কেন অর্পন করল (আরবি)
৭. দক্ষিণ আফ্রিকায় ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির ইতিহাস (আরবি)
৮. আখেরাত (উর্দু)
৯. বিশ^ায়নের যুগে সউদী আরব (আরবি)
১০. খাদেমুল হারামাইন বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আযিয এর বহুমুখী অবদান (আরবি)
১১. সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী: জীবন ও কর্ম
১২. আল্লামা ইবনে খালদুন এবং তাঁর মুকাদ্দিমার ওপর একটি পর্যালোচনা
১৩. ইসলামী অর্থনীতিতে ক্রেডিট (আরবি)
১৪. ইসলামে বায়তুল মাকদিস (আরবি)
১৫. প্রবাসী কবিদের কবিতায় রম্য গল্পের চিত্রায়ন (আরবি)
১৬. ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা ও অন্যান্য শিক্ষা ব্যবস্থা: একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা (আরবি)
১৭. সমকালিন সামাজিক সমস্যা ও ইসলামে তার সমাধান (আরবি)
১৮. ইসলামে মানবিক মূল্যবোধের উৎসসমূহ (আরবি)
১৯. আরবি কবিতায় মানবিকতা (আরবি)
২০. সালাফিয়্যাত: মর্ম ও প্রভাব (আরবি)
২১. ইসরাইলী রেওয়ায়েতসমূহ ও এক্ষেত্রে মুসলিম আলেম ও প্রাচ্যবিদদের ভূমিকা (আরবি)
২২. মক্কা ও মদীনায় বাংলাদেশী মুসাফেরখানাসমূহ: ঐতিহাসিক পর্যালোচনা (আরবি)
একজন সফল মানুষের জীবন্ত প্রতিভূ ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী। জীবনের ষাটতম বসন্ত ছুঁই ছুঁই করলেও এখনো তিনি অদম্য কর্মশক্তি ও তারুণ্যে ভরপুর একজন সংগ্রামী মানুষ।