শিরোনাম

South east bank ad

জর্জিয়ার সিনেট নির্বাচনে বাংলাদেশি শেখ রহমানের জয়

 প্রকাশ: ২৬ মে ২০১৮, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সফলতার অনুপ্রেরণা

জর্জিয়ার সিনেট নির্বাচনে বাংলাদেশি শেখ রহমানের জয়
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ডিস্ট্রিক্ট-৫ নির্বাচনী এলাকা থেকে স্টেট সিনেটর প্রার্থী হিসেবে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রাইমারি নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশি শেখ চাদ রহমান। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি ৪ হাজার ২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম অপর ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী কার্ট থম্পসন পেয়েছেন ১ হাজার ৮৮৫ ভোট। বেসরকারি মাধ্যমগুলো জানায়, শেখ রহমান ৬৮ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এলাকায় তিনি শেখ রহমান নামে পরিচিত। আগামী নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে রিপাবলিকান বা অন্য কোনো দল থেকে কোনো প্রার্থী নেই। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনিই হতে যাচ্ছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ইতিহাস সৃষ্টিকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বাংলাদেশি স্টেট সিনেটর। নরক্রস, লিলবার্ন ও লরেন্সভিল শহর নিয়ে গঠিত এই এলাকায় গত ৮ বছর ধরে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষ থেকে কার্ট থম্পসন সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এবার বাংলাদেশি শেখ রহমানের কাছে প্রাইমারি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ফলে তার সিনেটর পদটি দীর্ঘদিন পর হারাতে চলেছেন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় রিপাবলিকান পার্টির কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন না বলে অভিজ্ঞ রাজনিতিবিদ কার্ট থম্পসন এত দিন সহজেই বিজয়ী হয়েছেন। এবার এই আসনটি হারানোর ঘটনা তার জন্য একটি অপ্রত্যাশিত পরাজয় বলে মনে করছেন অনেকে। এর আগে ২০১৪ সালে জর্জিয়ার ডিস্ট্রিক্ট-২০ থেকে সিনেটর এবং ২০১২ সালে ডিস্ট্রিক্ট-১৫০ থেকে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস পদে নির্বাচন করে রিপাবলিকান প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন শেখ রহমান। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শেখ রহমান এই বিজয়কে বাংলাদেশিদের বিজয় বলে উল্লেখ করেন। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে বাংলাদেশি ও এশিয়ান ভোটারসহ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সংগঠক ও সদস্যরা যেভাবে পরিশ্রম করেছেন সে জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’ শেখ রহমানের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার আলী হোসেন জানান, জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ডিস্ট্রিক্ট-৫ এর সিনেটর আসনটিতে তার বিজয় সহজ ছিল না। কিন্তু সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং নির্বাচনী এজেন্ডায় মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে তার বিশেষ অঙ্গীকারের কথা জনগণ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, আগামী ৬ নভেম্বর জর্জিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে ডিস্ট্রিক্ট-৫ এ সিনেটর পদে রিপাবলিকান দলের কোনো প্রার্থী নেই। অন্য কোনো ব্যক্তি বা দল থেকেও এ আসনে কেউ নির্বাচন করছে না। ফলে শেখ রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্টেট সিনেটর নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি। নিউইয়র্কের মার্কিন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এই প্রাইমারি নির্বাচনে শেখ রহমানকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। এছাড়া নিউইয়র্ক ও জর্জিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিও তাকে সমর্থন এবং তার নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। শেখ রহমানের বিজয়ে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অ্যাসাল-এর ন্যাশনাল কমিটির প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, নভেম্বরে চূড়ান্ত নির্বাচনে তার বিজয়ী হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। শেখ রহমান ১৯৬০ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ১৯৮১ সালে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সে বছরেই তিনি ভর্তি হন সেন্ট্রাল পিডমন্ট কমিউনিটি কলেজে। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে তিনি জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকোনমিকস অ্যান্ড গ্লোবাল স্টাডিজে বিবিএ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি রেস্টুরেন্টের ডিশ ওয়াশার থেকে শুরু করে ম্যানেজার এবং পরবর্তীতে পিৎজা হাটের কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ও রেন্টাল প্রোপার্টিজের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। শেখ রহমানের দাম্পত্য জীবনে এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। দুই বছর আগে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য নির্বাচিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সবার নজরে আসেন শেখ রহমান।
BBS cable ad

সফলতার অনুপ্রেরণা এর আরও খবর: