শিরোনাম

South east bank ad

পেঁয়াজ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনবেন না : বাণিজ্যমন্ত্রী

 প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   মন্ত্রনালয়

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। পেঁয়াজ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনবেন না।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে পেঁয়াজের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে ক্রয়কৃত পেঁয়াজ যেগুলো সীমান্ত পার হওয়ার অপেক্ষায় আছে, সেগুলো দু-একদিনের মধ্যে দেশে আসবে। তুরস্ক ও মিসর থেকে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে, অল্প কিছু দিনের মধ্যে এগুলোও দেশে পৌঁছবে। টিসিবি এবার বড় ধরনের পেঁয়াজের মজুত গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের আগেই আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে এগুলো ক্রয় করা হয়েছিল। আশা করা যাচ্ছে এক মাসের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে। ভোক্তারা পেঁয়াজ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হলে কোনো সমস্যা হবে না।

তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় দেশে এবার প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয়েছে। আগে থেকেই পেঁয়াজের আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতি নজর রাখা হচ্ছিল। সে কারণে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা করা হয় এবং গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ টাকা মূল্যে দেশব্যাপী খোলাবাজারে বিক্রি শুরু করা হয়, যা আগামী মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

টিপু মুনশি বলেন, পেঁয়াজের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন বাজার মনিটরিং জোরদার করেছে। পেঁয়াজ রফতানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত বছরের মতো অন্যান্য দেশ থেকে এবারও প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। পেঁয়াজ সরবরাহে কোনো ঘাটতি হবে না। পেঁয়াজ নিয়ে অস্থির হওয়ার কোনো কারণ নেই।

ভারত হঠাৎ কেন পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলো অথচ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু যখন বাণিজ্য ক্ষেত্রে আসে তখন আমরা দেখতে পাই নানা সমস্যা, এতে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া মেনটেইনের কোনো বিষয় আছে কিনা জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথম হচ্ছে রাজনৈতিক কথা। গতবারও তারা পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করেছিল এবারও বন্ধ করেছে। কিন্তু গতবার বন্ধ করার আগে তারা মিনিমাম একটা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল। তারপর ২৯ সেপ্টেম্বর বন্ধ করেছিল। তখন ওদের দেশেও ১৫০ রুপিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। সে সময় পশ্চিমবঙ্গে রেশনের দোকানে পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, আমরা গতবারের অভিজ্ঞতা থেকে পেঁয়াজের দামের ফলোআপ করতে থাকি। এতে দেখা যায়, ১৫ দিন ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সেখানে ৩২-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। সে বিবেচনায় রফতানি বন্ধের আগেই মন্ত্রণালয় টিসিবিকে বলেছে এলসি ওপেন করে ফেলতে। আমরা ভেবেছিলাম দাম বাড়বে, ভাবিনি ভারত রফতানি বন্ধ করবে। যেদিন বন্ধ করলো সেদিন বিকাল পর্যন্ত আমার ধারণা ছিল তারা বন্ধ করবে না, হয়তো একটা মিনিমাম দাম নির্ধারণ করে দেবে। কিন্তু হঠাৎ বন্ধ করে দিল। ফলে আমরা একটা চাপে পড়েছি।

পেঁয়াজ নিয়ে গভীর কোনো রাজনীতি আছে কিনা জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি বাণিজ্য বুঁঝি। পেছনে কোনো গভীর রাজনীতি আছে কিনা সে উত্তর দিতে পারবো না। সেটা আমার কাজও নয়। আমরা ওই ঘটনার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নোট পাঠিয়েছেন বন্ধ কেন করা হলো। এছাড়া যে পেঁয়াজ বর্ডারে পড়ে আছে সেগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, একটা জিনিস দেখেছি ভারতেও পেঁয়াজের দাম বেড়ে ডাবল হয়েছে। এখন এ কারণে বন্ধ করেছে না অন্য কোনো কারণে বন্ধ করেছে সেটা আমি জানি না। তবে এটা বলতে পারি আমরা গতবারের চেয়ে এবার কিছুটা বেশি প্রস্তুতি নিয়েছি। তাদের বন্ধ করার কারণে আমাদের এক মাস খুব চাপ পড়বে। আমরা যদি অসাধু ব্যবসায়ীদের একটু চাপে রাখতে পারি। তাহলে আশা করছি এক মাসের মধ্যে অন্যান্য বাজার থেকে পেঁয়াজ এনে দাম স্বাভাবিক করতে পারবো।

দেশে পণ্যের দাম হুট করে বেড়ে যায় এক্ষেত্রে আমাদের বাজার মনিটরিং কি করছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রথম কথা এটা আন্দাজ করা যায় না যে ভারত বন্ধ করে দেবে। যেকোনো পর্যায়ে ভারত থেকে সস্তায় আমাদের দেশে পেঁয়াজ আনা সম্ভব। ভারত থেকে আনতে খরচ পড়ে প্রতি কেজিতে ২০-২১ টাকা আর তুরস্ক থেকে সেটা পড়ে ৩২-৩৫ টাকা। বাস্তবতা হচ্ছে যেখান থেকে সস্তা হবে সেখান থেকে ব্যবসায়ীরা আনবেন এবং ভোক্তারাও উপকৃত হবেন। যখন বন্ধ হয়ে গেল তখন দাম কোনো বিষয় নয়। কারণ আমাদের পেঁয়াজ লাগবে। ফলে আমরা যেখান থেকে পাই সেখান থেকেই আনবো। আমাদের এ বছর পেঁয়াজ উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় এক লাখ টন বেশি হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, অতিরিক্ত সচিব শরিফা খান, অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) মো. ওবায়দুল আজম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রি. জে. মো. আরিফুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

BBS cable ad

মন্ত্রনালয় এর আরও খবর: