ডিজিটাল সংযুক্তির প্রসার ও প্রয়োগে সমন্বিত উদ্যোগে নিতে হবে: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল সংযুক্তির প্রসার ও প্রয়োগে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করে কাজ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেলে আন্তর্জাতিক সংস্থা এলায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেট আয়োজিত বাংলাদেশে অন্তর্ভূক্তিমূলক ডিজিটাল অর্থনীতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অবদান বিষয়ক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগাতে দক্ষ মানবসম্পদ অপরিহার্য। দেশব্যাপী উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ এবং ডিজিটাল সংযোগ সহজলভ্য করতে সরকার কাজ করছে। ডিজিটাল সংযুক্তির প্রসার ও প্রয়োগে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ কাজ করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতের ট্রেডবডিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেটকে শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, পৃথিবীর কোনো কোনো দেশ ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিযেছে।
তিনি বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কেবলমাত্র শহরের মানুষের জন্য নয় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজ চলছে। দেশের ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগের আওতায় আসছে। বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম অনেক কম। ৬০টাকায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়। অথচ ২০০৬ সালে এক এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিল ৭৮ হাজার টাকা, ২০০৮ সালে ২৭ হাজার টাকা এবং বর্তমানে একদেশ এক রেটের আওতায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায় মাত্র ৬০ টাকায়।
তিনি দেশে ইন্টারনেট প্রসারের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় ৪-জি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এরই মাঝে ৫-জি স্পেকট্রাম নিলাম করা হয়েছে এবং ৫-জি চালু করা হয়েছে।
তিনি একই সঙ্গে দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কানেক্টিভিটির প্রসারের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, এখন মধুপরের পাহাড় বা হাওরে বসে ইন্টারনেটের সহায়তায় তরুণ তরুণীরা বিদেশে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে পারে।
মোবাইল ইন্টারনেটের দাম তুলনামূলক একটু বেশি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টেলিটকের মাধ্যমে ব্যবসায়ী প্রতিযোগিতা তৈরি করে সেটিও গ্রাহকের স্বার্থের অনুকুলে আনার চেষ্টা আমরা করছি। এরই মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের আনলিমিটেড প্যাকেজও চালু হয়েছে। টেলিটক এটি প্রথম শুরু করে এবং অন্য অপারেটররাও সেটা কার্যকর করেছে। মোবাইলের কলড্রপ কমিয়ে আনতে অপারেটরসমূহকে সম্প্রতি অতিরিক্ত বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর থেকে গ্রাহকরা এ সুবিধা পাবে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশে গত চার বছরে সরকারের প্রযুক্তি বান্ধব নীতি কাজে লাগিয়ে স্যামসাংসহ ১৪টি ব্র্যান্ডের মোবাইল কারখানা স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে দেশের মোট চাহিদার শতকরা সত্তরভাগ এ সব কারখানার উৎপাদিত মোবাইল থেকে মেটানো সম্ভব হচ্ছে। তিনি মোবাইল কারখানার পাশাপাশি ল্যাপটপ ও কম্পিউটার কারখানা স্থাপনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।