সব তার মাটির নিচ দিয়ে নেয়া হলে ঢাকা শহরের আকাশ জঞ্জালমুক্ত হবে
মির্জা ইয়াহিয়া : চারশো বছরের ঐতিহ্যবাহী শহর আমাদের রাজধানী ঢাকা। কিন্তু এই নগরের সর্বত্রই এখন পরিকল্পনার অভাব লক্ষণীয়। শহর থেকে স্বাধীনভাবে আকাশ দেখারও পন্থা নেই। চারদিকে ভবনের জঙ্গল। খালি রাস্তায় চোখে পড়ে তারের জঞ্জাল।
আশির দশক পর্যন্ত রাস্তায় ছিলো শুধু বৈদ্যুতিক খুঁটি। আর ছিলো অল্প করে টেলিফোনের ছোট খুঁটি। তাই এই দুই ধরনের তারই ছিলো রাস্তায়। নব্বই দশকের শুরু থেকে ডিশের লাইনের তারের সূত্রপাত হয়। বাড়তে বাড়তে এগুলো জঞ্জালের আকার ধারণ করে। নতুন শতকে নতুন করে যুক্ত হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের তার। আকাশ ঢেকে রাখা তার নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছিলেন। কিন্তু সমাধান করা হচ্ছিলো না।
আশার কথা হলো অবশেষে নগরের আকাশ তারমুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন ঢাকার দুই মেয়র। তবে শুরুটা ভালো ভাবে হয়নি। কারণ বিকল্প ব্যবস্থা না করেই তার কাটা শুরু হয়েছিলো। এর কারণে ঢাকার কিছু এলাকায় ইন্টারনেট ও ডিশ এন্টিনা সেবা বন্ধ হয়ে পড়ে। প্রতিবাদ করে ধর্মঘটের হুমকি দেয় ডিশ ও ইন্টারনেট প্রোভাইডাররা। শেষ পর্যন্ত বিষয়টির সুরাহা হয়েছে। সিটি করপোরেশন কোনো তার কাটবে না। প্রোভাইডাররা নিজেরাই তার কাটবে। এই কাজের আগে তারা নতুন লাইন টানবে মাটির নিচ দিয়ে। এটাই আসলে সঠিক পন্থা।
এর কয়েক বছর আগে আমরা দেখেছি ঢাকার আকাশ ঢেকে রাখা ঝুকিপূর্ণ বিলবোর্ড সরানো হয়েছিলো। যা তখনকার মেয়রদের তৎপরতার কারণেই সম্ভবপর হয়। বিলবোর্ডের বিকল্প হিসেবে বসানো হয়েছে পরিকল্পিত ও ঝুঁকিমুক্ত ডিজিটাল বিজ্ঞাপনী বোর্ড।
তেমনি ডিশ এন্টিনা, ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইনের সব তার মাটির নিচ দিয়ে নেয়া হলে ঢাকা শহরের আকাশ জঞ্জালমুক্ত হবে। আবার রাস্তা দখল রাখা খুঁটিও কমবে। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও হ্রাস পাবে। চলতি বছরের মধ্যে তার মাটির নিচে চলে যাবে- আশা করি মেয়র মহোদয়দের এই আশ্বাস বাস্তবায়ন হবে।
(মির্জা ইয়াহিয়া ,সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জনসংযোগ ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান। সিটি ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ, এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া।)