মানুষ একা চলতে পারে না, কোনো দেশও একা চলতে পারে না
মির্জা ইয়াহিয়া : মানুষ একা চলতে পারে না। তেমনি কোনো দেশও একা চলতে পারে না। আর প্রতিবেশি দেশ হলে তো কথাই নেই। পোশাক, খাদ্যাভ্যাসসহ সংস্কৃতির নানা কিছুতে মিল থাকে। প্রতিবেশি বাড়ির সাথে আবার যেমন ঝগড়া থাকে তেমনি পাশের রাষ্ট্রের সাথে বৈরিতাও বিরাজ করে। আবার তার সাথে সম্পর্কও থাকে। বেশি দিন দূরেও থাকা যায় না।ভারতের সাথে আমাদের বাংলাদেশের সম্পর্কটাও ঠিক এমনি।এখন এটা কিন্তু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদনের সাথে আমাদের বাংলাদেশের বিশাল সম্পর্ক আছে। পরপর দুই বছর প্রমাণিত হলো। অন্যদিকে পশ্চিম বঙ্গের বাঙালিরা ইলিশের জন্য আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। প্রথমে পেঁয়াজের বিষয়ে বলি। আমাদের যে চাহিদা তার অনেকাংশ পূরণ করতে হয় ভারত থেকে আমদানি করে। ফলে ভারতে দাম বাড়লে বা রপ্তানি বন্ধ করলে আমাদের দেশে দাম অনেক বেড়ে যায়। গতবছরের মতো এই বছরও সেটা দেখা যাচ্ছে। আগের বছর মিয়ানমার, মিশর, চীন থেকে আমদানি করেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। ভারত রপ্তানি চালু করার পর দাম কমে আসে। আগের অভিজ্ঞতার আলোকে এবার আগেই বিকল্প কিছুর প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ ছিলো। এখন মনে হচ্ছে সেটা করা হয়নি।তবে একটা ভালো দিক হলো ভারত যা বন্ধ করে সেটার উৎপাদনে বাংলাদেশ জোর দেয় এবং সাফল্য অর্জন করে। গরুর ক্ষেত্রে এটা হয়েছে। দু-এক বছরের মধ্যে পেঁয়াজেও হবে বলে আমি মনে করি।এবার ইলিশে প্রসঙ্গে বলি। আমাদের দেশে ইলিশের উৎপাদন বেশি। স্বাদও অনেক বেশি। সারাবছর এই ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকে। যখন উৎপাদন অনেক বেশি থাকে এবং কলকাতায় দুর্গাপূজার সময় আসে, তখন ভারতে কিছু ইলিশ রপ্তানি করা হয়। এই বছর তা শুরু হয়েছে।ঘটনা এই সোমবারের। ইলিশের চালান গেলো ভারতে। একই দিন বন্ধ হলো ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি। তাই পেঁয়াজের বাজার রাতারাতি চড়া হয়ে যায়। এই কারণে বাংলাদেশের মানুষ স্বাভাবিকভাবেই রাগান্বিত হয়। যা চোখে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।সম্পর্কের মাঝেও প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব থাকে। আমরা ইলিশ রপ্তানি করবো। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবো। তবে শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য দিয়েই হবে না। একে অপরের বিপদে পাশে থাকবে। ভারতকে সেভাবেই চায় বাংলাদেশ। এই হিসাব না মিললেই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে। এটুকু সব পক্ষকে গ্রহণ করতে হবে।
(মির্জা ইয়াহিয়া,সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জনসংযোগ ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান। সিটি ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ, এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া।)