আমরা যা ফেলনা ভাবি, সেগুলো অনেক দামি হতে পারে
মির্জা ইয়াহিয়া :
মাঝেমাঝে ঢাকার অনেক এলাকায় এক ধরনের ফেরিওয়ালার হাঁকডাক শুনি। ঘরে জমানো চুল কিনতে আসে যারা। তারা মূলত পরে যাওয়া লম্বা চুল কিনে থাকে। এই ফেরিওয়ালাদের আশায় তাই অনেকে ঝরে যাওয়া চুল ঘরে জমাতে থাকে। এগুলো বিক্রিও হয় অনেক টাকায়। কারণ এই চুল বা চুল থেকে তৈরি পণ্য রপ্তানি পর্যন্ত হয়। এতে বিদেশ থেকে বাংলাদেশ কোটি কোটি টাকা আয় করছে।
কয়েক দিন আগে বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন দেখে এসব তথ্য মনে পড়লো। সেখানে তারা জানিয়েছে, ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে তেঁতুলের বিচি। ইদানীং এভাবে আনা হয়েছে ৯০ টন বিচি। আমার খুব কৌতুহল হলো সামান্য তেঁতুল বিচি আমদানি করতে হবে কেন! সেই প্রতিবেদন পড়েই তাই উত্তর জেনে নিলাম। এই তেঁতুল বিচি নাকি পাটকল ও কাপড়ের মিলে সুতা রং করার কাজে লাগানো হয়। আবার কয়েল তৈরিতেও নাকি ব্যবহৃত হয়।
যে কোনো কিছুর ব্যবহার পরিবর্তন হলে, তার দাম বেড়ে যেতে পারে। এ জাতীয় আরো একটা কৃষিপণ্য হচ্ছে পাটকাঠি বা পাটখড়ি। এটা শুধু জ্বালানি হিসেবে বা বেড়া হিসেবে কাজে লাগতো। এখন এটা পুড়িয়ে চারকোল তৈরি করা হয়। যা চীনের মতো দেশে রপ্তানি হয়। পাটকাঠি এখন আর হেলাফেলার জিনিস নয়।
আমাদের কাছে একটা নিকৃষ্ট জিনিস ছিলো মাছের আঁশ। ময়লাওয়ালা বাসা থেকে এটা নিয়ে গেলেই বাঁচি। কিন্তু এই আঁশও এখন রপ্তানি হয়। ওষুধ, কসমেটিকস ও ফুড সাপ্লিমেন্ট তৈরিতে এটা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মাছের আঁশ রপ্তানি হয় জাপানের মতো দেশে। ইউরোপ-আমেরিকায় মাছের আঁশ দিয়ে অনেক দরকারি পণ্য তৈরি হয়।
আমরা যা ফেলনা ভাবি, সেগুলো অনেক দামি হতে পারে। কারণ সময়ের পরিবর্তনে অনেক কিছুর নতুন চাহিদা তৈরি হতে পারে।
(মির্জা ইয়াহিয়া,সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জনসংযোগ ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান। সিটি ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ, এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া।)