মুদ্রানীতি কঠোর করার কথা ভাবছে ব্যাংক অব ইন্দোনেশিয়া
চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি আসছে ইন্দোনেশিয়ার। প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির লক্ষণ দেখা গেলে নিজেদের মুদ্রানীতি আরও কঠোর করবে ব্যাংক ইন্দোনেশিয়া। আগামী বছর থেকে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি সুদহারে কিছু পরিবর্তন নেওয়ার উদ্যোগের কথাও ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল শুক্রবার এমনটা জানান ব্যাংকের গভর্নর প্যারি ওয়ারজিও। খবর ব্লুমবার্গ।
গভর্নর প্যারি জানান, ব্যাংকের এক্সিট স্ট্র্যাটেজি অনুসারে আর্থিক পদ্ধতিগুলোয় ব্যাংক অব ইন্দোনেশিয়া ক্রমাগতভাবে তাদের তারল্যের হার কমিয়ে আনছে। এরপর আগামী বছরের শেষ নাগাদ সুদহারেও পরিবর্তন আনবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে এ পরিকল্পনা অনেকটা অনিশ্চিত বলেও জানিয়েছে প্যারি ওয়ারজিও।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ব্যাংক ইন্দোনেশিয়া তাদের সুদহার সবচেয়ে কম পরিমাণ রেখেছে। বর্তমানে ব্যাংকটির বেঞ্চমার্ক সুদহার ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়ার ফলে হাসপাতালগুলোয় পরিস্থিতি অবনতির দিকে। এমন অবস্থায় সুদহারে এমন হ্রাস এনেছে ব্যাংকটি।
সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া সরকার তার অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধির হার অনেকটাই কমিয়ে এনেছে। চলতি বছর সরকারের পূর্বাভাস অনুযায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৩.৭০ শতাংশ থেকে ৪.৫০ শতাংশ পর্যন্ত। এর আগে সরকারি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি-বিষয়ক পূর্বাভাসের পরিমাণ ছিল ৪.৫০ শতাংশ থেকে ৫.৩০ শতাংশ।
আগের চেয়ে হারের পরিমাণ আরও হ্রাস করে আনার পাশাপাশি ওয়ারজিও জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহারের এ স্বল্পতা বজায় রাখবে। ব্যাংকটি এ অবস্থার মধ্যেই পরিচালিত হবে বলেও জানান প্যারি ওয়ারজিও।
তিনি জানান, আমরা বর্তমানে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদ্ধতি অণুসরণ করার জন্য চাপ দিয়েছি। আমরা বর্তমানে আমাদের নীতিমালার প্রয়োগ ও এর প্রভাব বাস্তবায়নের দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়েছি।
করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বাড়ার ফলে বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ইন্দোনেশিয়াকে নিম্নমধ্যবিত্ত আয়ের দেশে পরিণত করেছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে বর্তমানে বড় বাজেট প্রণয়ন করতে হবে। বড় আকারের বাজেট বরাদ্দের ফলে ঝুঁকি নেওয়া ও প্রণোদনা দেওয়া এবং বিলম্বিত কর দেওয়ার মতো পরিস্থিতির মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে তা সরকারকে সহযোগিতা করবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ওয়ারজিও আরও জানান, অর্থনীতিতে সহায়তা করার জন্য বছরজুড়ে সুদের স্বল্প হার ও তারল্য বজায় রাখার দিকে মনোযোগ দেবে ব্যাংক অব ইন্দোনেশিয়া। একই সঙ্গে একটি স্থির পরিবর্তন হারও বজায় রাখবে ব্যাংক প্রশাসন।