১৪ মাসে ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে এক কোটি ৩২ লাখ

দেশে কভিড-১৯ মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পাশাপাশি হোম অফিস ও ই-কমার্সের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহার বিপুলহারে বেড়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ মাসেই গ্রাহক বেড়েছে প্রায় এক কোটি ৩২ লাখ। তবে দেশে এই বিপুলসংখ্যক গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহারের আওতায় এলেও ব্যয় কমেনি।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্যমতে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী গ্রাহক ছিল প্রায় ৯ কোটি ৩৭ লাখ। আর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এসে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী গ্রাহক বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি ২৩ লাখ ৫৩ হাজার। এছাড়া ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে গ্রাহক বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি ৩১ লাখ। অর্থাৎ এই সময়ে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী গ্রাহক বৃদ্ধি পায় প্রায় ৯৪ লাখ।
এদিকে ২০১৯ সালে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারী গ্রাহক ছিল প্রায় ৫৭ লাখ ৪২ হাজার। আর ২০২০ সালে গ্রাহক বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৯৫ লাখ ২২ হাজার। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতেও গ্রাহকসংখ্যা একই রয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে ব্রডব্যান্ড গ্রাহক বাড়ে প্রায় ৩৮ লাখ আট হাজার।
জানতে চাইলে আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, কভিড-১৯-এর আগে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহাকারী সংখ্যা ছিল প্রায় ৬৫ লাখের মতো। আর বর্তমানে গ্রাহকসংখ্যা প্রায় এক কোটি ১০ লাখের মতো। হয়তো বিটিআরসির কাছে সর্বশেষ তথ্যটি নেই।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার বিপুলহারে বাড়লেও তা সাশ্রয়ী হচ্ছে না। আবার গ্রামে একদিকে ইন্টারনেট ব্যয় বেশি, অন্যদিকে সেবাও মানসম্পন্ন নয়। ইন্টারনেট ব্যয়কে আরও সাশ্রয়ী করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার এগিয়ে আসা উচিত।
তাদের মতে, দেশে ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন্স ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) প্রতিষ্ঠান বাড়ানো উচিত। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স প্রদানে বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ানো গেলে এর মূল্য অনেকটাই সাশ্রয়ী হবে। গ্রাহকও মানসম্পন্ন সেবা পাবে।
মূল্য ব্যাপারে জানতে চাইলে ইমদাদুল হক বলেন, ‘মূল্য যে অবস্থায় আছে, সেখানে খুব বেশি কিছু করার নেই। কেননা মিনিমাম যে কস্ট আছে, তার নিচে গেলে গ্রাহকসেবা ভালো পাওয়া যাবে না। তবে কোয়ালিটি অব সার্ভিস আশানুরূপ ভালো নয়, এটি যেমন সত্যÑএনটিটিএন লাইসেন্স বাড়ানো না গেলে, অর্থাৎ বাজার প্রতিযোগিতা বাড়ানো না গেলে কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিত করাও ততটাই মুশকিল।
তিনি বলেন, মূল্য নিয়ে ঢাকায় প্রতিযোগিতা প্রচুর। কারণ ঢাকায় অনেক আইএসপি প্রতিষ্ঠান থাকায় সার্ভিসও ভালো দিতে হয়। আবার মূল্য বেশি নেয়ারও সুযোগ নেই। গ্রামের বিষয়ে কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। তবে গ্রামে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদানে ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি। এটির প্রধান কারণ এনটিটিএন প্রতিষ্ঠান। কেননা এনটিটিএন প্রতিষ্ঠান মনোপলি হচ্ছে। এ খাতে সরকারের নজরদারি বাড়ানো উচিত। এনটিটিএন প্রতিষ্ঠান বাড়লে গ্রামেও এর সুবিধা বাড়বে, ব্যয়সাশ্রয়ী হবে।