ভারসাম্যহীন তরুণকে নিয়ে গণমাধ্যমের দায়িত্বহীন সংবাদ
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমে গত কয়েকদিনের রসালো খবর হয়ে উঠেছিলো উড়ন্ত একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশি এক তরুণের অনভিপ্রেত আচরণ। প্লেনের ভিতরে গায়ের কাপড় খুলে ওই তরুণ নগ্ন হয়েছিলেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্লেনটি ঢাকায় অবতরণের পরপরই তাকে আটক করা হয়।
মানসিক ভারসাম্যহীন ওই তরুণকে পরবর্তীতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এরই মধ্যে তরুণটিকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ গণমাধ্যমের দায়িত্বহীনতার প্রকাশ বলে উল্লেখ করেছেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আজম মিয়া মঙ্গলবার (০৬ মার্চ) বলেন, ছেলেটি মানসিকভাবে অসুস্থ। আমাদের কাছে যতক্ষণ ছিলেন ততক্ষণ নগ্ন অবস্থায়ই ছিলেন। পরে বিমানবন্দরের কোর্টে দিলে তাকে সেখান থেকে ছাড়িয়ে তার পরিবারের সদস্যরা নিয়ে গিয়ে সেদিনই হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন।
ওসি বলেন, ছেলেটির বাবা আমাদের জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় থাকার সময়ই তার মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা শুরু হয়। দিন দিন এটা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ কারণে চিকিৎসার জন্যে তাকে ঢাকায় দ্রুত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়।
তবে এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের গণমাধ্যম থেকে শুরু করে মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমে ছেলেটিকে নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলেটির ছবি ছড়িয়ে দিয়ে মন্তব্য করতে থাকেন মানুষজন। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও।
কিছু কিছু গণমাধ্যমে ছেলেটির ছবির সঙ্গে তার গ্রামের বাড়ি, তার নগ্ন অবস্থার ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। যা ভবিষ্যতে ছেলেটির স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসায় প্রভাব পড়তে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত শনিববার (৩ মার্চ) মালিন্দো এয়ারের ওডি-১৬২ ফ্লাইটে করে কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকা আসছিলেন ওই তরুণ। গণমাধ্যমের সংবাদে বলা হয়েছে, প্লেনটি আকাশে ওড়ার পর এক পর্যায়ে নিজের ল্যাপটপ খুলে সেখানে পর্নোগ্রাফ দেখতে থাকেন এবং নিজের কাপড় খুলে পুরো নগ্ন হয়ে যান। এ সময় তিনি স্টুয়ার্টদের প্রধানকেও কাপড় খুলতে বলেন। বিমানের অন্য যাত্রী, এমনকি কো-পাইলটের কথাও শুনছিলেন না ওই তরুণ।