পুঁজিবাজারের লেনদেন তলানিতে হতাশ বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারের লেনদেন ফের তলানিতে নেমে এসেছে। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে দুইশ কোটি টাকার ঘরে। যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সমন্বয়ের কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এমন আশঙ্কাতেই বাজারে এ পতন। বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে পরিস্থিতি বিবেচনা করছেন। তাই শেয়ার ক্রয়ের চেয়ে প্রতিদিনই বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। এতে কমে যাচ্ছে সূচক। আর বিনিয়োগের আগ্রহ কম থাকায় কমে যাচ্ছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যে দেখা গেছে, গতকাল রবিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২২১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত ৮ মাসের মধ্যে এটিই ডিএসইর সর্বনিম্ন লেনদেন। এর আগে ডিএসইতে চলতি বছরের ১৯ মার্চ সর্বনিম্ন ১৬৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। বাজারে লেনদেন কমে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের লেনদেন কমে যাওয়ার কারণেই বাজারের লেনদেন কমে গেছে। এছাড়া ধারাবাহিক দর পতনের কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও কমে গেছে। ফলে লেনদেন কমে গেছে। এ অবস্থায় বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরকে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তবে ব্যাংকের বিনিয়োগ সমন্বয়ের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া না হলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে আসতে চাইবেন না।
এদিকে গতকাল অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ব্যাংকের বিনিয়োগের সমন্বয় সীমা দুই বছর বাড়ানো হবে।
জানা গেছে, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সমন্বয়ে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাছাড়া আগে ব্যাংকগুলো তার দায়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারত; কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে এটি মূলধনের ২৫ ভাগে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ কারণে এমনিতেই শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সক্ষমতা অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় ব্যাংকগুলো শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করলে শেয়ারবাজারের উপর বড় ধরনের চাপ পড়তে পারে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এজন্য ডিএসই এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পক্ষ থেকে ব্যাংকের বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময় বাড়ানোর দাবি করা হয়। বিএসইসিও এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এদিকে বিনিয়োগকারীরা দাবি করছেন, ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সীমা পূর্বের মতো দায়ের ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা প্রয়োজন। তাছাড়া ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসেবে না ধরারও দাবি বিনিয়োগকারীদের।