শিরোনাম

South east bank ad

জাতিসংঘের 'রেসপনসিবিলিটি টু রিঅ্যাক্ট'

 প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সম্পাদকীয়

জাতিসংঘের 'রেসপনসিবিলিটি টু রিঅ্যাক্ট'
এহছান খান: রেসপনসিবিলিটি টু রিঅ্যাক্ট : যাবতীয় অমানবিকতা-বর্বরতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং প্রতিক্রিয়া জানানো জাতিসংঘ ও এর সদস্য রাষ্ট্রদের দায়িত্ব। রেসপনসিবিলিটি টু রিঅ্যাক্ট এর দফা গুলো ১) দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মহলের মীমাংসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। ২) নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ৩) যারা বা যে গোষ্ঠী গণহত্যা বা নির্মূলাভিযান চালাচ্ছে তাদের দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আদালতে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা। ৪) লুকোচুরি নয়, পরিস্কারভাবে এবং শুরু হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী এবং বিশ্বকে সম্ভাব্য গণহত্যার বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক করা। ৫) পঞ্চম দফায় বলা হয়েছে, গণহত্যা কিংবা সম্ভাব্য গণহত্যা নিরসনে দ্রুত এবং সরাসরি হস্তক্ষেপ। ১৯৯৪ সালে মধ্য আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডার গণহত্যাার সময় যেমন বিশ্ব ছিল ঘুমিয়ে ঠিক তেমনি রোহিঙ্গাদের এই মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের নিস্পৃহতা, নির্লিপ্ততা, প্রতিক্রিয়াহীনতা সাধারণ মানুষকে ভাবাচ্ছে। শুধু ত্রান পাঠিয়ে কিছুকিছু রাষ্ট্র তাদের দায়িত্ব শেষ বলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ হুতু সম্প্রদায় সরকারি বাহিনীর ইন্ধন ও সহযোগিতায় সংখ্যালঘু তুতসিদের উপর যে নারকীয়, পাশবিক ও নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে দশ লক্ষ জীবন নিভিয়ে দেয় মাত্র একশ দিনে। দেশছাড়া হয়েছিল বিশ লক্ষ মানুষ। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিশ্বমিডিয়া ছিল আশ্চর্যজনকভাবে নীরব। ঠিক তেমন আরেকটি গণহত্যার আয়োজন সম্পন্ন হচ্ছে মিয়ানমারে। টার্গেট পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃখী, অনুচ্চকণ্ঠী, ভূখণ্ডহীন, অধিকারহীন, প্রতিবাদঅক্ষম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। গত শতাব্দীর শুরু থেকেই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের দেশছাড়া করতে নিপীড়ন-নির্যাতনসহ নানান পন্থা-পরিকল্পনা করতে থাকে উগ্র বর্ণবাদী মৌলবাদী সরকার। নিরস্ত্র জনগোষ্ঠীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে, হত্যা করে উচ্ছেদ করতে বিশেষত বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার নীলনকশার শেষ দৃশ্য এখন মঞ্চস্থ হচ্ছে। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে নারী-পুরুষ-শিশুদের। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। প্রাণের ভয়ে উদভ্রান্তের মত পালাচ্ছে যে যেদিকে পারছে। পথেই মারা যাচ্ছে, ধরা পড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। এক শিশু আরেক শিশুকে কাঁধে নিয়ে দৌড়াচ্ছে, সন্তান ছুটছে বৃদ্ধ মা-বাবাকে ঘাড়ে নিয়ে।পালাচ্ছে শত শত গর্ভবতী নারী, আছে প্রতিবন্ধী, নবজাত শিশু। আছে চলৎশক্তিহীন অসুস্থ মানুষ, বৃদ্ধ, আহত জন। ফেরার পথ বন্ধ করতে সীমান্তে পোঁতা হচ্ছে স্থলমাইন। rohingya উল্লেখ্য আদিকাল থেকে গণহত্যার ধরন প্রায় একই রকম। অনেকদিন ধরে টার্গেটেড জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা; সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি যুবসমাজের মধ্যে ঘৃণা ছড়িয়ে দিয়ে টার্গেটের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া এবং বহির্বিশ্বের কাছে জনরোষ বলে চালিয়ে দেওয়া; টার্গেটেট গ্রুপকে মিলিশিয়া, সন্ত্রাসী বা জঙ্গি আখ্যায়িত করা বা তাদের দুর্বল প্রতিবাদ ও আত্মরক্ষার চেষ্টাটি বিশাল করে প্রচার করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গণহত্যার বিষয়ে অন্ধকারে রাখা। এহছান খান বার্তা সম্পাদক দৈনিক অর্থনীতির কাগজ
BBS cable ad

সম্পাদকীয় এর আরও খবর: