শিরোনাম

South east bank ad

নাব্য সংকটের কারণে ৩৫তম স্প্যান বসাতে দেরী হচ্ছে

 প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

পদ্মা সেতুর ৩৫তম স্প্যান বসাতে গিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের ৩০ অক্টোবর ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের ওপর ২-বি নামের স্প্যানটি বসানোর কথা ছিল। কিন্তু খরস্রোতা পদ্মা নদীর এই দুই পিলারের নিচে আকস্মিক নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় ৩২শ টন ওজনের স্প্যানটি নিয়ে পিলারের কাছে যেতে পারবে না স্প্যানবাহী ক্রেন ‘তিয়ান-ই’। তাই এখন অপেক্ষা ড্রেজিংয়ের জন্য।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ আব্দুল কাদের জানান, ৮ ও ৯ নম্বর পিলারগুলোর আশপাশে কয়েকদিন আগেও পানির গভীরতা ছিল ৭০ ফুটের বেশি। কিন্তু এখন সেখানে পানি আছে মাত্র ৭ ফুট।

এই পরিস্থিতিতে স্প্যান বহনকারী ‘তিয়ান-ই’ ক্রেনের পিলারের কাছে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই সেটি এখনও মাওয়া প্রান্তের ডকইয়ার্ডের জেটির কাছে অপেক্ষায় রয়েছে। ড্রেজিং করে নাব্য ফেরানোর পর ‘তিয়ান-ই’ রওনা হবে গন্তব্যে।
সেতু কর্তৃপক্ষের সিডিউল অনুযায়ী ৩০ অক্টোবর ৩৫ নম্বর স্প্যানটি বসানোর সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু নাব্য সংকটের কারণে ওইদিন হয়ত স্প্যানটি বসানো সম্ভব হবে না। তাই সিডিউলে ১ দিন বাড়িয়ে রাখা হয়েছে।

তারপরও একের পর এক দুর্যোগ কাটিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান হবে পদ্মা সেতু, এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
নাব্য ফেরানোর পর স্প্যাটি বসিয়ে দেয়া হবে নির্দিষ্ট পিলারের ওপর। আর এই ৩৫তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হবে পদ্মা সেতুর ৫ হাজার ২৫০ মিটার। তাই নাব্য সংকট নিরসনে নির্দিষ্ট স্থানে ড্রেজিং কাজ অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে পদ্মার তীব্র স্রোত, বন্যা ও করোনার কারণে দীর্ঘ ৪ মাস পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো বন্ধ ছিল। সকল দুর্যোগ কাটিয়ে চলতি মাসের ১১ তারিখে বসানো হয় ৩২তম স্প্যানটি। এর পর ১৯ ও ২৫ তারিখে বসানো হয় ৩৩ ও ৩৪তম স্প্যান। আর ৩০ তারিখে বসানোর কথা ছিল ৩৫তম স্প্যান।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা সেতুটি মোট ৪২টি পিলারের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২১টি ও জাজিরা প্রান্তে ২১টি পিলার রয়েছে। আর এই ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান।

ইতোমধ্যে ৩৪টি স্প্যান বসে গেছে। বাকি ৭টি স্প্যান মাওয়া প্রান্তে বাকি পিলারের উপর বাসার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ডক ইয়ার্ডে।

সেতু কর্তৃপক্ষের সিডিউল অনুযায়ী, ৩০ অক্টোবর ৮ ও ৯ নম্বর পিলারে ৩৫তম স্প্যান (স্প্যান ২-বি), ৪ নভেম্বর ২ ও ৩ নম্বরে ৩৬তম স্প্যান (স্প্যান ১-বি), ১১ নভেম্বর ৯ ও ১০ নম্বরে ৩৭তম স্প্যান (স্প্যান ২-সি), ১৬ নভেম্বর ১ ও ২ নম্বরে ৩৮তম স্প্যান (স্প্যান ১-এ), ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১ নম্বরে ৩৯তম স্প্যান (স্প্যান ২-ডি), ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারে ৪০তম স্প্যান (স্প্যান ২-ই) ও ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান (স্প্যান ২-এফ) বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্যদিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩৪টি স্প্যান।

প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেত নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলারে কাজ সম্পূর্ণ হয়ে মাথা উচুঁ করে দাড়িয়ে আছে পদ্মার বুক চিরে।

মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আব্দুল মোমেন গ্রুপ লিমিটেড। বহুমুখী এই সেতুর মূল আকৃতি হবে দ্বীতল যা কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।

BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: