এনবিআরের রাজস্ব আদায় তথ্যে ব্যাপক গরমিল

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের যে তথ্য দিয়েছে তার চেয়ে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছে মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক (সিজিএ) কার্যালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র। জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ের এ পার্থক্যের বিষয়ে সিজিএ কার্যালয় থেকে ইতিমধ্যে এনবিআরে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই উভয়পক্ষ আলোচনায় বসে চূড়ান্ত রাজস্ব আদায়ের হিসাব নির্ধারণ করবে। সূত্র বলছে, হিসাব পদ্ধতি ও ট্রেজারি চালান জমায় গরমিল হওয়ায় সিজিএর সঙ্গে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের পার্থক্য দেখা দেয়। এ প্রসঙ্গে এনবিআরের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতি বছর এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সিজিএর রাজস্ব আদায়ের পার্থক্য থাকে। মূলত হিসাব পদ্ধতির তারতম্যের কারণেই এমনটি হয়। সিজিএর হিসাব ও এনবিআরের হিসাবের সঙ্গে রাজস্ব আদায়ের পার্থক্য ১২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা থেকে ১৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার মধ্যে। সিজিএ দফতরে পাঠানো সিডির তথ্যে অনুযায়ী দুই সংস্থার মধ্যে রাজস্ব আদায়ের ব্যবধান ১৩ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। সিজিএ দফতরের সংযুক্ত তহবিলের প্রাপ্তি (কনসোলিডেটেড ফান্ড রিসিপ্ট) অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ পার্থক্য ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সিজিএর রিপোর্ট অনুযায়ী রাজস্ব আদায় দেখানো হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। এখানে পার্থক্যের পরিমাণ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। অথচ ১ জুলাই ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান দাবি করেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। তিনি জানান, আমদানি-রফতানি পর্যায়ে ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩৮ হাজার ২৩৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ের মূসক খাতে ৪৮ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪৮ হাজার ৬৩৮ কোটি ১ লাখ এবং আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে ৪৯ হাজার ২৬৪ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪৯ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাসিক রাজস্ব প্রতিবেদন অনুযায়ী গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। এ হিসাবে সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের দেয়া তথ্যের সঙ্গে রাজস্বের পার্থক্য ১২ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা। ওই সময় নজিবুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সুশাসন, আধুনিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে আদায় কার্যক্রম পরিচালনা ও সম্মিলিত প্রয়াসের ফলে লক্ষ্যমাত্রা শুধু অর্জনই করিনি, অতিক্রমও করেছি।