শিরোনাম

South east bank ad

সিসিটিভির আওতায় আসবে সব ভবন

 প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০১৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

সিসিটিভির আওতায় আসবে সব ভবন
নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রথম ধাপে ভিআইপি এলাকা গুলশান, বনানী ও বারিধারায় এসব ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ভবনকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। একটি কেন্দ্রীয় কক্ষ থেকে ক্যামেরাগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ (মনিটর) করা হবে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে ডিএনসিসি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা সংযোজনের আগ্রহ বেড়েছে নগরবাসীর মধ্যে। এ জন্য বাজারে সিসিটিভি ক্যামেরার চাহিদার পাশাপাশি দামও বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি নাগরিকের ওপর হামলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু অস্বাভাবিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে এমন আবহ তৈরি হয়েছে। ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক  জানান, পুলিশের পাশাপাশি নগরবাসীর নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনেরও। তাই ডিএনসিসি এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ ১০টি পয়েন্টে ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক বাড়িকে সিসিটিভির আওতায় এনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এ জন্য আনুমানিক সাত কোটি টাকা খরচ হতে পারে। আগামী বছরেই এটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। জানা গেছে, এ বিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়ে একাধিক বৈঠকও করেছেন মেয়র আনিসুল হক। গত ৬ অক্টোবর হোটেল লেকশোরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সঙ্গেও এ নিয়ে মতবিনিময় করেন মেয়র। ডিএমপি কমিশনার এ ব্যাপারে মেয়রকে সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন। গত ১২ নভেম্বরও মেয়র আনিসুল হক হোটেল ওয়েস্টিনে ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের নিয়ে আরেকটি বৈঠক করেন। ডিএনসিসির বিদ্যুৎ বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার। তবে আপাতত যানজট নিরসনের জন্য রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। যদিও এসব ক্যামেরা যানজট ছাড়া নগরবাসীর নিরাপত্তায়ও কাজে আসবে। সম্প্রতি ইডেন কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন এ তথ্য জানান। জানা গেছে, নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরার পাশাপাশি প্রতি ওয়ার্ডে ১০ জন করে কমিউনিটি পুলিশ নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ডিএনসিসির। এসব প্রসঙ্গে সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান  বলেন, নগরবাসীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছেন। জনস্বার্থে সিটি করপোরেশন কোনো সিদ্ধান্ত নিলে পুলিশ সহযোগিতা করবে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিরাপত্তা বৃদ্ধির নানা উদ্যোগ :দুই বিদেশিসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরেও আবাসিক ভবনগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে রাজধানীবাসীকে। এসব উদ্যোগের প্রথমেই রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন। এ ছাড়া অনেকে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যাও বাড়িয়েছেন তাদের স্থাপনায়। রাজধানীর ৪৬৩ পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ইউসুফ হোসেন বলেন, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই তিনি বাড়ির চারদিকে চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। এতে ভবনটির নিরাপত্তা যেমন বাড়বে, তেমনি আশপাশে কেউ কিছু করতে গেলে চিন্তা করবে। কেউ অনৈতিক কিছু করলেও ক্যামেরার ফুটেজ দিয়ে শনাক্ত করা যাবে। প্রায় একই অভিমত ব্যক্ত করেন বারিধারার বাসিন্দা হাসিবুর রহমান শাহিন। তিনি বলেন, তিনিও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের চিন্তা করছেন। অনেকেই এরই মধ্যে ক্যামেরা লাগিয়েছেন বলে জানান তিনি। এসব কারণেই বাজারে সিসিটিভি ক্যামেরার চাহিদা বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেই সুযোগে দামও কিছুটা বাড়তি। চাহিদা ও দাম উভয়ই বেড়েছে :সিসিটিভি বিক্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত রাজধানীর একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিসিটিভি ক্যামেরার বিক্রি অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়েছে। আগে সারা দিনে দু-তিনটি বিক্রি হলেও এখন ছয়-সাতটি বিক্রি হচ্ছে। স্টেডিয়াম মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, বায়তুল মোকাররম মার্কেটের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানগুলোতে দেখা গেছে সিসিটিভি ক্যামেরা ক্রেতাদের উপস্থিতি। আবার আগে যে ক্যামেরা সাত হাজার টাকায় পাওয়া যেত সেটির দাম এখন আট-নয় হাজার টাকা। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী ফরহাদ বলেন, তিন হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত একটি সিসিটিভি ক্যামেরার দাম। কিছু ক্যামেরায় এক মাসের ভিডিও ফুটেজও সংরক্ষণ করা যায়। কিছু ক্যামেরায় তিন-চার দিনের ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণে থাকে। কিছু ক্যামেরার ছবির মান খারাপ। এইচডি ক্যামেরাগুলোর ছবির মান ভালো। বর্তমানে এ ধরনের ক্যামেরার চাহিদা বেশি। তিনি জানান, ক্যামেরার মান অনুযায়ী ২০ থেকে ২০০ মিটার দূরের ছবিও স্পষ্ট ধরা পড়ে। সেগুলোর দাম বেশি। তবে ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে কোরিয়া ও চীনের তৈরি সিসি ক্যামেরারই আধিক্য। তবে তাইওয়ান, জার্মানির ক্যামেরাও পাওয়া যায়। চাহিদা বাড়ার সুযোগে নিম্নমানের চীনা সিসিটিভি ক্যামেরায় বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, আগে সিসি ক্যামেরা সম্পর্কে বোঝানোর জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হতো। কয়েকটি দুর্ঘটনার পর জনগণ আপনা-আপনিই বুঝে গেছে। বায়তুল মোকাররম মার্কেটের ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী ক্যামেরা ভিশনের কর্ণধার আবদুস সালাম ভালো মানের ক্যামেরা স্থাপনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, তা না হলে ক্যামেরায় ধরা পড়লেও অপরাধীকে শনাক্ত করা কঠিন।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: