শিরোনাম

South east bank ad

ভারতীয় গরু আর বৃষ্টির ভয়ে খামারিরা

 প্রকাশ: ২৮ অগাস্ট ২০১৭, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

পাবনার সুজানগর উপজেলা থেকে আটটি গরু নিয়ে ঢাকায় এসেছেন খামারি মো. সাঈদ। সর্বনিম্ন ৭০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকার গরু আছে তার কাছে। গড়ে প্রতি গরুর পরিবহন খরচ পড়েছে তিন হাজার টাকা। রাজধানীর আফতাব নগর হাটের মাঝামাঝি স্থানে গরুগুলো বেঁধে রেখেছেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনেকেই তার গরুর দাম জিজ্ঞেস করেছেন। তবে একটিও বিক্রি হয়নি। মো. সাঈদ বলেন, `তিন বছরে একটা গরু বড় করতে আমার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। গাড়ি ভাড়াই তিন হাজার। গরু বিক্রির আগ পর্যন্ত তিন ভাই পাঁচ-ছয়দিন ঢাকায় থাকব, খরচ আরও বাড়বে। অথচ একজন ক্রেতা ৬০ হাজার টাকা দাম বলে গেল। সবাই এ ধরনের দাম বলছে। জানি এবার গরু বিক্রি করে লাভ করতে পারব না, তারপরও ঢাকায় এসেছি। আর গরুর ব্যবসাই করব না। আসল টাকা তুলতেই ঢাকায় আসা। ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র পাঁচদিন। ইতোমধ্যে রাজধানীর হাটগুলোতে পশু নিয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে দেশের বিভিন্ন জেলার খামারিরা। তবে প্রত্যেকের চোখে-মুখেই উদ্বিগ্নতার ছাপ। দেশে ভারতীয় গরুর প্রবেশ আর অতিবৃষ্টি ভাবাচ্ছে তাদের। শনিবার রাত ও রোববার সকাল থেকে আফতাব নগরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু আসা শুরু হয়। আগেভাগে এসে হাটের ভালো জায়গা নিচ্ছেন অনেকে। তবে বেশ কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা বলে শোনা গেল তাদের হতাশার কথা। এ বছর গরু ব্যবসায় লাভের আশাই করছেন না তাদের কেউ। দিনাজপুর জেলার হাকিমপুরের খামারি জাকির হোসেন বলেন, সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরুর আসা এবং রাস্তাঘাট ভাঙা থাকার কারণে গরু ব্যবসায়ীরা দেশি গরু কিনতে আগ্রহ দেখায়নি। তাই বাধ্য হয়ে গরু ঢাকায় নিয়ে আসতে হলো। মনে হচ্ছে না এবার লাভ হবে। এদিকে রোববার সকাল থেকে রোদের তীব্র তাবদাহ থাকলেও দুপুরের পর থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজেছে অনেক গরু। গত বছর বৃষ্টির কারণে আফতাব নগরে মারাও গেছে অনেক গরু। মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা খামারি মো. ঢালী বলেন, বৃষ্টিতে গরু দীর্ঘক্ষণ ঢেকে রাখতে হয়। তা না হলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু গরু ঢেকে রাখলে আবার ক্রেতারা দেখতে পারেন না। গরু বিক্রি করতে দেরি হয়। সব দিক থেকেই বিপদ। এবারের গরুর বাজার কেমন যাবে জানতে চাইলে ঢালী বলেন, গরুর মাংসের মণ ২০ হাজার টাকা। কোরবানির সময় তিন মণের গরু ৮০ থেকে ৯০ হাজারে বিক্রি হওয়ার কথা। তবে দু-তিনদিন পর বাজার দেখলে আসল চিত্র বোঝা যাবে। কিন্তু এমনিতে পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে এবার আমাদের লাভ হবে না বলেই মনে হচ্ছে। যেসব স্থানে বসছে পশুর হাট ঢাকার ২২টি পশুর হাটের মধ্যে ১৩টি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতায় পড়েছে। সেগুলো হচ্ছে- মেরাদিয়া বাজার, উত্তর শাহজাহানপুর-খিলগাঁও রেলগেট বাজার সংলগ্ন মৈত্রী সংঘ মাঠ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠ, কমলাপুর স্টেডিয়ামের আশপাশের খালি জায়গা, জিগাতলা-হাজারীবাগ মাঠ, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন জায়গা, আরমানিটোলা খেলার মাঠ ও আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠ, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠ এবং সাদেক হোসেন খোকা মাঠ সংলগ্ন ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল ও সংলগ্ন খালি জায়গা। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন হাটগুলোর মধ্যে রয়েছে- কুড়িল, বসিলা, মিরপুর ডিওএইচএস, উত্তরার ১৫নং সেক্টর, খিলক্ষেত বনরূপা, আশিয়ান সিটি, ভাটারার সাঈদনগর, আফতাবনগর ও মিরপুরের ৬নং সেকশন।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: