শিরোনাম

South east bank ad

কম দামে ১ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল কনডেনসেট রফতানি

 প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

কম দামে ১ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল কনডেনসেট রফতানি
আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে ব্যারেল প্রতি ০.৩৮ ডলার কম দামে (ডিসকাউন্ট) কনডেনসেট রফতানি করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান অলিভ সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছে এই ডিসকাউন্টে এক লাখ ২০ হাজার ব্যারেল (১৫ হাজার টন) কনডেনসেট বিক্রি করেছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। কিন্তু ডিসকাউন্ট ছাড়া বিক্রি করলে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা বেশি আয় হতো। দেশের গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদিত পেট্রোলিয়াম উপজাত কনডেনসেট দিয়ে পেট্রোল, অকটেন ও জেট ফুয়েল উৎপাদন করে সরকারি-বেসরকারি ১৪টি রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান। পরে সেই পেট্রোল, অকটেন ও জেট ফুয়েল বিপিসির কাছে বিক্রি করে। বিপিসি সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই অভ্যন্তরীণ চাহিদার অতিরিক্ত পেট্রোলিয়াম তৈরির কাঁচামাল কনডেনসেট রফতানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে বিপিসি। দেশের গ্যাসক্ষেত্র থেকে উপজাত হিসেবে বেরিয়ে আসে এ কনডেনসেট। ছয়টি প্রতিষ্ঠান কনডেনসেট রফতানির জন্য দরপত্র কিনলেও গত ৩ আগস্ট শেষ দিনে ফ্রান্সের ট্রাফিগোরা ও অলিভ সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড দরপত্র জমা দেয়। এদের মধ্য থেকে অলিভ সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডকে গত ১১ আগস্ট আন্তর্জাতিক মূল্যের চেয়ে প্রতি ব্যারেল ০.৩৮ ডলার ডিসকাউন্টে (কম দামে) রফতানির কাজ দেয় বিপিসি। বিপিসির চেয়ারম্যান এ এম বদরুদোজ্জা দ্য রিপোর্টকে বলেন, দরপত্র মূল্যায়ন করে সর্বোচ্চ দরদাতাকেই টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। অলরেডি কনডেনসেট-এর চালান ওই কোম্পানি চট্টগ্রাম ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ট্যাংক থেকে নিয়ে গেছে। বিপিসির পরিচালক (অপারেশন এ্যান্ড প্লানিং) মোসলেহ উদ্দিন দ্য রিপোর্টকে বলেন, গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে আসা পেট্রোলিয়াম উপাদান কনডেনসেট দিয়ে ইস্টার্ন রিফাইনারিসহ সরকারি বেসরকারি রিফাইনারি কেন্দ্রগুলো পেট্রোল, অকটেন ও জেট ফুয়েল উৎপাদন করে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে চাহিদার অতিরিক্ত পেট্রোলিয়াম উপজাত কনডেনসেট আসছে। তাই সেগুলো নষ্ট না করে রফতানির সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। সে সিদ্ধান্তের আলোকে পেট্রোবাংলা আমাদের (বিপিসি) এক লাখ ২০ হাজার ব্যারেল কনডেনসেট রফতানির জন্য বলেছে। আমরা তা টেন্ডারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দামের চাইতে প্রতি ব্যারেল ০.৩৮ ডলার ডিসকাউন্টে অলিভ সিঙ্গাপুর লিমিটেডের কাছে বিক্রি করেছি। তিনি বলেন, অলিভ সিঙ্গাপুর লিমিটেড ইতোমধ্যে (২৩-২৬ আগস্ট) ওই পরিমাণ কনডেনসেট বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে চাহিদা ও পেট্রোবাংলার নির্দেশনা অনুযায়ী কনডেনসেট বিক্রির জন্য আরও দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানান তিনি। জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশের গ্যাসক্ষেত্রে তিন লাখ ২১ হাজার টন কনডেনসেট উৎপাদিত হয়েছে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় তিন লাখ ৬০ হাজার টন। আর চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ হবে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টন। দেশের ১৪টি কেন্দ্রে এই বিপুল পরিমাণ কনডেনসেট পরিশোধনের সুযোগ থাকলেও দেশের বাজারে কনডেনসেট থেকে পরিশোধিত এ পরিমাণ পেট্রোল ও অকটেন ব্যবহারের সুযোগ নেই। জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১৪টি প্রতিষ্ঠান কনডেনসেট পরিশোধন করে পেট্রোল ও অকটেন তৈরি করছে। এর মধ্যে সরকারের চারটি পরিশোধন কেন্দ্র এসজিএফএল (সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড), বিজিএফসিএল (বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড), আরপিজিসিএল (রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড) ও ইআরএল (ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড) মিলিয়ে তিন লাখ ২৮ হাজার ৬৬৪ টন কনডেনসেট পরিশোধনের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু সরকারের এ চারটি প্রতিষ্ঠান গত এপ্রিল পর্যন্ত দুই লাখ ১১ হাজার ৩৪৫ টন পরিশোধন করেছে। অন্যদিকে ১০টি বেসরকারি কোম্পানির ক্ষমতা রয়েছে সাত লাখ ২৪ হাজার ৬৬৪ টন। তবে তারা গত এপ্রিল পর্যন্ত পরিশোধন করেছে দুই লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৫ টন। জানা গেছে, এখন দেশে দৈনিক গড়ে এক হাজার ৪৫০ টন কনডেনসেট উৎপাদিত হয়। তবে এখন দৈনিক এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টন কনডেনসেট পরিশোধন করছে। বাকিটা পুড়িয়ে ফেলতে হচ্ছে। যাতে করে দৈনিক ৩০ শতাংশ মূল্যবান এই পেট্রোলিয়াম পণ্য পুড়িয়ে ফেলা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এই মুহূর্তে দেশে পেট্রোল, অকটেন ও জেট ফুয়েলের চাহিদা তিন লাখের বেশি নয়। এই পরিমাণ উৎপাদনে কনডেনসেট প্রয়োজন তিন লাখ টনের কিছু বেশি। বাকি প্রায় দুই লাখ টন কনডেনসেট অতিরিক্তই থেকে যায়। এ পরিমাণ কনডেনসেট নষ্ট না করে তা রফতানির সিদ্ধান্ত নেয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়।  
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: