শিরোনাম

South east bank ad

হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ঢাক-ঢোল

 প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ঢাক-ঢোল
আগের মত আর দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের চাহিদা নেই। কষ্ট করে বাপ-দাদার জাত পেশা ধরে রাখার চেষ্টা করছি।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে কথাগুলো বলছিলেন রংপুর পৌর শহরের ফায়ার সার্ভিস মহল্লায় রতন দাস। রতন দাস জানান, সুরেশ দাস (৪৫) তার আরেক ভাই। তাদের নিবাস টাঙ্গাইল জেলায়। জন্মের পর থেকে বাবা রাজেন্দ্র দাস ও দাদুর কাছ থেকে তারা দেশীয় বাদ্যযন্ত্র তৈরি করতে শিখেছেন। ওই সময় দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের চাহিদা অনেক বেশি ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে তাদের ব্যবসা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তিনি জানান, স্বাধীনতার পর বাধ্য হয়ে বাবা রাজেন্দ্র দাস টাঙ্গাইল জেলা থেকে রংপুরের বদরগঞ্জে চলে আসেন। শুরু করেন দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ঢাক-ঢোল, করকা, তবলা, খোল, একতারা, খমর, খঞ্জুনি, দো-তারা, লাল, ঢোলক, ডমরুসহ সাইড ড্রাম তৈরি ও মেরামতের কাজ। পরে তাদের বাবা মারা যাওয়ার পর দুই ভাই রতন দাস ও সুরেশ দাস একসঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করলেও পরিবারের ভরণ-পোষণ কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে সুরেশ দাস গাইবান্ধা জেলার লক্ষ্মীপুরে বসতি গেড়ে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের ব্যবসা পরিচালনা করেন।   তিনি আরও জানান, কার্তিক মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের যে সমস্ত লোক গ্রামে গ্রামে কীর্তন করে বেড়ায় এরাই মূলত দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের ক্রেতা। এছাড়াও বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের লোকেরা কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্র কেনেন। এসব দেশীয় বাদ্যযন্ত্র বিক্রি হয় ২শ’ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। রতন দাসের মা আমাপতি দাস (৯০) জানান, ছেলেদের বলেছি, যত কষ্টই হোক বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতে। বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বিমলেন্দু সরকার জানান, দেশীয় বাদ্যযন্ত্রগুলো টিকিয়ে রাখতে হলে এর আধুনিকায়ন যেমন জরুরি, তেমন জরুরি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতাও। তা না হলে বাংলার ঐতিহ্য ঢাক-ঢোল, তবলা একতারা, দো-তারা একদিন হারিয়ে যাবে। বদরগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ঢাক-ঢোল আজ হারিয়ে যেতে বসেছে, কষ্ট করে হলেও দেশীয় এ ঐতিহ্য আমাদের টিকিয়ে রাখা উচিত।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: