শিরোনাম

South east bank ad

সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন না পোশাক শ্রমিকরা

 প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন না পোশাক শ্রমিকরা
জীবিকার তাগিদে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসে কারখানায় কাজ নেন পোশাক শ্রমিকরা। আর্থিক টানাপড়েন থেকে মুক্তি মিলবে— এমন আশায়দিনরাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন কর্মস্থলে। কিন্তু সে অনুযায়ী মেলে না মজুরি। এত পরিশ্রমের পরও সাধ ও সাধ্যের মধ্যে থেকে যায় বিস্তর ফারাক।এভাবে একটা সময় গিয়ে সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাই ছেড়ে দেয় পোশাক শ্রমিকদের অনেকেই। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, লিঙ্গভেদে পোশাক শিল্প শ্রমিকদের ২ থেকে ৫ শতাংশ সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে।‘ওয়ার্কার্স ভয়েস রিপোর্ট-২০১৬: দ্য ওয়ার্কিং কন্ডিশনস ইন বাংলাদেশ আরএমজি ইন্ডাস্ট্রি আফটার রানা প্লাজা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি যৌথভাবে তৈরিকরেছে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আওয়াজ ফাউন্ডেশন এবং হংকংভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কনসাল্টিং সার্ভিস ইন্টারন্যাশনাল (সিএসআই)।১ ডিসেম্বর প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ভবন ধসের ভয়াবহ ঘটনার পর কেটে গেছে সাড়ে তিন বছর। এ দুর্ঘটনার পর কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নেয়াহয়েছে অনেক উদ্যোগ। অন্যদিকে মজুরি বৃদ্ধির মাধ্যমে শ্রমিকের জীবনযাপন উন্নত করার বিভিন্ন প্রচেষ্টাও বাস্তবায়নাধীন আছে। কিন্তু এরকোনোটিই পোশাক শ্রমিকদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখাতে পারছে না। ৩৩৩টি কারখানার ১ হাজার ৭ জন শ্রমিকের ওপর জরিপ চালিয়ে শ্রমিকদেরএমন মানসিকতা পর্যবেক্ষণ করেছে আওয়াজ ফাউন্ডেশন ও সিএসআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোশাক শিল্পে কর্মরতদের মধ্যে একটি বড় অংশ নিম্নহারে মজুরি পান। এদের অধিকাংশই আর্থসামাজিক দুরবস্থার কারণে এপেশায় কাজ শুরু করেছেন।  শিক্ষার অভাব ও নিজস্ব অঞ্চলে কাজের সুযোগ না থাকার কারণেই পোশাক কারখানায় কাজে যোগদান করেনশ্রমিকরা। ভীতিকর কর্মপরিবেশ সত্ত্বেও বাংলাদেশে শুধু পোশাক শিল্পই আছে, যেখানে খুবই কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নিয়মিত বেতন পাওয়ারসুযোগ পাচ্ছেন শ্রমিকরা। প্রতিবেদনের জন্য করা জরিপে সব শ্রমিককে তৈরি পোশাক শিল্পে কাজ করার কারণ জানতে চাওয়া হয়। ৫ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক জানিয়েছেন, সুন্দরভবিষ্যতের আশায় তারা পোশাক শিল্পে যোগদান করেছেন। নারী শ্রমিকদের মধ্যে ২ শতাংশ এ কারণ দেখিয়েছেন। অন্যদিকে ২ শতাংশ পুরুষ শ্রমিকজানিয়েছেন, জীবননির্বাহের তাগিদে তারা পোশাক কারখানায় যোগ দিয়েছেন। নারীদের মধ্যে ১ শতাংশ এ কারণটি জানিয়েছেন। প্রতিবেদনেজরিপের ফলাফল ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের মতে পোশাক কারখানায় যোগদানের এ দুটি কারণেই বোঝা যায়— জীবনযাপনের ব্যয়নির্বাহে খুবইসামান্য আর্থিক সঙ্গতি তৈরি করতে পারলেও শ্রমিকদের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতে পারছে না পোশাক শিল্প। আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার এ প্রসঙ্গে বলেন, পোশাক শিল্প শ্রমিকদের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতে পারছে না। কারণএ শিল্পের মজুরি শ্রমিকের জীবনযাপন উন্নয়নকে উত্সাহ দেয় না। বছর দুই হলো মজুরি বেড়েছে। কিন্তু তা জীবননির্বাহের খরচের সঙ্গেঅসামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসে শ্রমিকরা বস্তিতে বসবাস করেন। এ শিল্পে ৫ বা ১০ বছর কাজ করার পরও একই ধরনের আবাসনে বসবাসকরেন তারা। সেখানে স্বপ্ন দেখার সুযোগ কোথায়? জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ৪৭ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দিচ্ছেন পরিবারকে সহায়তার জন্য। ৬৭ শতাংশ নারীশ্রমিকের কাজে যোগদানের কারণও এটি। পারিবারিক সংকটকে পোশাক কারখানায় যোগদানের কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন ৮ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক।৭ শতাংশ নারী শ্রমিক এ একই কারণে কাজে যোগ দেন। কর্মসংস্থানের অভাব পোশাক শিল্পে যোগদানের কারণ বলে জানিয়েছেন ৯ শতাংশ পুরুষশ্রমিক। নারীদের ক্ষেত্রে এ একই কারণ ৫ শতাংশের। শিক্ষার অভাব বা শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘাটতিতে পোশাক শিল্পে কাজে যোগ দিয়েছেন জরিপে অংশ নেয়া ৯ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক। ৫ শতাংশ নারীশ্রমিক কাজে যোগদানের ক্ষেত্রে এটিকে কারণ হিসেবে জানিয়েছেন। সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য পোশাক শিল্পে যোগ দিয়েছেন ৪ শতাংশ নারী শ্রমিক।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: