শিরোনাম

South east bank ad

সরিয়ে দেয়া হলো বাপেক্সের এমডিকে

 প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০১৬, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

সরিয়ে দেয়া হলো বাপেক্সের এমডিকে
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদ থেকে প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামানকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই পদে তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন অনিয়মের দায়ে অপসারিত তিতাস গ্যাসের সাবেক এমডি নওশাদ ইসলাম। আর আতিকুজ্জামানকে বদলি করা হয়েছে গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডে (জিটিসিএল)। গত বৃহস্পতিবার এক চিঠিতে এ রদবদলের সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। একটি বিদেশী কোম্পানিকে কাজ দেয়া নিয়ে মতবিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাপেক্স এমডিকে বদলি করা হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত জুন মাসের ১৯ তারিখ ভোলা জেলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রে দুটি কূপ খননের ইচ্ছা প্রকাশ করে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও বাপেক্সের কাছে চিঠি দেয় রাশিয়ার গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ জুলাই বাপেক্সের কাছ থেকে জরুরি ভিত্তিতে মতামত জানতে চায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। নিজেদের মতামতে গ্যাজপ্রমের কাজের মান ও ব্যয়ের বিষয় তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটিকে গ্যাসকূপ খননের কাজ না দেয়ার বিষয়ে মত জানায় বাপেক্স। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম কূপ খননের কাজ নিলেও প্রকৃতপক্ষে তৃতীয় পক্ষ দিয়ে কাজ করিয়ে থাকে তারা, আর নিজেরা পালন করে পর্যবেক্ষকের ভূমিকা। এ কারণে তাদের খনন করা কূপ থেকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় গ্যাস ও তেল পাওয়া যায় না। বরং নিম্নমানের কারণে এর আগে তাদের খনন করা কূপের অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। গ্যাজপ্রম কর্তৃক ২০১২ সালের এপ্রিলে বাপেক্স, বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড ও সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতাধীন এলাকায় খননকৃত ১০টি কূপের মধ্যে পাঁচটি কূপ বিভিন্ন কারিগরি ত্রুটির কারণে এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। অনুমোদিত প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুযায়ী ওই ১০টি কূপ থেকে দৈনিক ২২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বর্তমানে পাঁচটি কূপ থেকে মাত্র ৮৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে। অন্যদিকে বাপেক্স কর্তৃক প্রতিটি কূপ খননের ব্যয় ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নসহ আনুমানিক ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। আর ভাড়াকৃত রিগের মাধ্যমে খনন করলে আনুমানিক ব্যয় ১০০ থেকে ১১০ কোটি টাকা। যদিও গ্যাজপ্রম কর্তৃক খনন করলে প্রতিটি কূপের আনুমানিক ব্যয় ২৫০ কোটি টাকারও বেশি হয়। এসব কারণে গ্যাজপ্রমকে নতুন করে গ্যাস কূপ খননের কাজ দেয়ার বিরোধিতা করে বাপেক্স। এদিকে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের প্রভাবশালী দু-একজন গ্যাজপ্রমকে কাজ দিতে আগ্রহী। কিন্তু বাপেক্স এমডি সেখানে বাধা দেয়ায় তারা তা স্বাভাবিকভাবে নেননি। যে কারণে গত জুলাই থেকে জ্বালানি বিভাগ ও বাপেক্সের এমডির মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে একাধিকবার বাপেক্স ব্যবস্থাপনা পরিচালককে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেয় জ্বালানি বিভাগ। কিন্তু রাষ্ট্রীয় এ গ্যাস অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালীকরণ ও রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমানোর বিষয়ে অটল থাকেন বাপেক্স এমডি। কোনো উপায় না দেখে অবশেষে তাকে বদলির সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি বিভাগ। এরই মধ্যে বদলির চিঠিও বাপেক্সে পৌঁছেছে বলে বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন বাপেক্সের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামানকে জিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আর জিটিসিএলের বর্তমান এমডিকে পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) করা হয়েছে। অন্যদিকে বাপেক্সের এমডি পদে তিতাস গ্যাসের সাবেক এমডি নওশাদ ইসলামকে পদায়ন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল থেকে বাপেক্সের এমডির দায়িত্ব পান প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামান। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বাপেক্সকে কারিগরি দিক থেকে শক্তিশালী করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেন তিনি। সম্প্রতি তিনটি নতুন গভীর খনন রিগ কেনাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাপেক্স কর্তৃক ১০৮টি কূপ খনন এবং ৩০০০ লাইন কিলোমিটার দ্বিমাত্রিক সিসমিক জরিপ কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: