শিরোনাম

South east bank ad

উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে মৌলবাদী বিতাড়িত করা সম্ভব

 প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০১৬, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে মৌলবাদী বিতাড়িত করা সম্ভব
অনেক লড়াই, সংগ্রাম করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। অসাম্প্রদায়িক এ দেশে ইদানিং মৌলবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশে আগুন নির্যাতন হত্যা বেড়েই চলেছে। যেকোন মূল্যে এসব বন্ধ করতে হবে। এ ধরনের নানান বাঙালি উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে মৌলবাদী বিতাড়িত করা সম্ভব।
‘আজি নবান্ন উৎসবে নবীন গানে/ আয়রে সবে আয়রে ছুটে প্রাণের টানে’ শ্লোগানে সোমবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর ডিসি হিলে আয়োজিত নবান্নে উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফী এসব কথা বলেন।
মুশতারী শফী আরও বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বাঙ্গালি উৎসবের আয়োজন কমে যাচ্ছে। মাইকে বাজিয়ে শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য আর মিলাদ মাহফিল হয় জোরেসোরে কিন্তু উৎসব হয় না। নবান্ন বাঙালির প্রাণের উৎসব, এ উৎসব যেন থেমে না যায়। যত বেশি করে পহেলা বৈশাখী, নবান্ন, পৌষ, বর্ষা আর বসন্ত উৎসব যত বেশি আয়োজন করা হবে, তত বেশি বাঙালি সংস্কৃতি লালিত হবে। যত উৎসব করব তত মৌলবাদী শক্তি দূর হবে। আজ যখন আমরা উৎসবে মিলেছি তখন সারাদেশে  ব্রাক্ষণবাড়িয়া, দিনাজপুর, রংপুরে কি হচ্ছে? এসব হত্যা আগুন আর হাহাকার বন্ধ করতে হবে। বাঙালির উৎসব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এসব উৎসব প্রাণ ছুঁয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আজকের নবান্ন উৎসবে আসতে পেরে আমি ধন্য। শিশু কিশোরদের এ ধরনের আয়োজন যাতে বন্ধ না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে দেশকে কালিমামুক্ত করতে হবে।
‘শিশুমেলা’ সংগঠনের আয়োজনে উৎসব উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ রীতা দত্ত।
বিশেষ অতিথি অধ্যক্ষ রীতা দত্ত বলেন, বর্তমানে শিশুরা বাঙালি ঐতিহ্য বাদ দিয়ে পাশ্চাত্য ভাবধারা অনুকরণ করছে। শিশুরা এখন মাছ পাখি ফুল গ্রাম চেনে না। বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে তবে বাঙলা সংস্কৃতিকে বিসর্জন দিয়ে নয়। নিজের সংস্কৃতিকে ধারণ করে মাটির কাছাকাছি থেকে মেধা মননে এগিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিশু কিশোররা আজ ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে। গ্রামে হাটেমাঠে ঘরে নবান্ন উৎসব হয়। এই সময়ে ফসল ওঠে। ঘরে ঘরে আনন্দ-পালাগান, যাত্রা গান হয়। সারাদিন আনন্দে থাকে মানুষ। আমাদের আনন্দের জের সন্ত্রাসবাদী জঙ্গীর থাবায় মলিন হতে বসেছে। এই হায়েনাদের পরাজিত করবে। এরকম উৎসব থেকেই আমাদের শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। উৎসব আয়োজনই পারে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করতে।
আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমুর সঞ্চোলনে সভায় বক্তব্য রাখেন সুরকার ও সংগীত পরিচালক বাসুদেব ঘোষ, উৎসব উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন ও সদস্য সচিব রুবেল দাশ প্রিন্স।
এর আগে বিকেল চারটায় বাংলার আবহমান কৃষিজ ও সংস্কৃতিকে শহুরে প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে আয়োজিত নবান্ন উৎসব বলেুন উড়িয়ে শুভ উদ্বোধন করেন নেজাম উদ্দিন, নিতাই দাশ ও সেলিম নামের তিনজন প্রান্তিক কৃষক। উদ্বোধনকালে বেজে উঠে ‘ধান ভাঙ্গা এই আঙ্গিনাতে জেগেছে চাঁদ/ কিষাণের ঘরে আজ ভেঙ্গেছে বাঁধ/ নবান্নে এই গানে কাটুক সারাবেল/ নতুন ধানের গন্ধে অঙ্গে লাগুক দোলা’ এ নবান্ন সংগীত। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করে শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফি।
পরে ভায়োলেনিষ্ট চিটাগাং এর শিল্পীরা বেহালা বাজিয়ে শোনান। এরপর দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন নিষ্পাপ অটিজম স্কুলের বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশু শিল্পীবৃন্দ।
নবান্ন উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবেশনায় অংশ নেয় তোরসা এবং কামাল, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী, স্কুল অব ওরিয়েন্টাল ডান্স, নৃত্যম একাডেমি।
এরপর দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন জনপ্রিয় শিল্পী ইলমা বিনতে বখতেয়ার, পূর্ণ চন্দ্র রায়, গীতা আচার্য্য ও চ্যানেল আই সেভেন আপ এমপিএলখ্যাত শিল্পী জনি বড়ুয়া।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: