শিরোনাম

South east bank ad

‘বন্ধ পাটকল চালু করতে বস্তা ব্যবহার আইন প্রয়োগ জরুরি’

 প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০১৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

‘বন্ধ পাটকল চালু করতে বস্তা ব্যবহার আইন প্রয়োগ জরুরি’
বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) এর সচিব আব্দুল বারিক খান মনে করেন, পাটের বস্তা ব্যবহার আইন-২০১০ বাস্তবায়ন হলে বন্ধ পাটকলগুলো আবারও চালু করা সম্ভব হবে। আজ রোববার অর্থসূচককে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি। বিজেএমএ সচিব বারিক খান বলেন, ‘পাটের বস্তা ব্যবহার আইন-২০১০ বাস্তবায়িত না হওয়ায় স্থানীয় বাজারে ধস নেমেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পাটকল। তাই বন্ধ পাটকলগুলো চালু করতে হলে এ আইন বাস্তবায়ন জরুরি।’ প্রসঙ্গত, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আগামী ২৫-৩১ অক্টোবর দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করবে। গত ২০ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় বলা হয়, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ এর মাধ্যমে নির্ধারিত ৬টি পণ্য ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ আইন প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, রাস্তাঘাট ও উল্লিখিত পণ্যবাহী যানবাহনসহ সর্বত্র ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে। দেশের পাটকলগুলো বন্ধ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে নানা কারণ উল্লেখ করে বিজেএমএ সচিব বলেন, “দেশের মোট পাটপণ্য রপ্তানির ৮০ শতাংশ বেসরকারি মিলগুলো করে থাকে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ইরানে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, ইউরোজোনে অর্থনৈতিক মন্দার রেশ না কাটা এবং ভারত ও তুরস্কে ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতে পাটপণ্যের রপ্তানি বাজার অনেক কমেছে। “অন্যদিকে, পাটের বস্তা ব্যবহার আইন-২০১০ বাস্তবায়ন না হওয়াসহ রাজনৈতিক অস্থিরতা, শ্রমিক মজুরি, পরিবহন খরচ, বিদুৎ ও গ্যাসের মূল্য, ব্যাংক ঋণ সুদের হার এবং কাঁচা পাটের মূল্যবৃ্দ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারেও ধস নেমেছে”, যোগ করেন তিনি। বিজেএমএ সূত্র জানায়, ২০০৯ অর্থবছর থেকে এ পর্যন্ত সরকারি মিলগুলোকে সরকার প্রায় ৫৫০০ কোটি টাকার সহযোগিতা করলেও বেসরকারিগুলো সেরকম সহযোগিতা পাচ্ছে না। ফলে ইতোমধ্যে ৪৫টি মিল বন্ধ হয়েছে। বাকিগুলোও বন্ধ হওয়ার পথে। এ অবস্থায় গত মাসে সংগঠনটি বেসরকারি পাটশিল্পের গত ১০ বছরের ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ করে মূল ঋণ সুদবিহীন ব্লক অ্যাকাউন্টে রেখে ৫ বছরের মরেটরিয়ামসহ ১৫ বছরের জন্য রিসিডিউল করা এবং মিল চালু করতে কাঁচা পাট ক্রয়ের জন্য চলতি মূলধন বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। পাটের বস্তা ব্যবহার আইন ২০১০ সালে বাস্তবায়িত হলে আমাদের এসব পাটকল বন্ধ হতো না- দাবি করে পাটকল মালিকদের সংগঠন বিজেএমএ’র এই কর্মকর্তা বলেন, ঐ সময়ে আইনটি বাস্তবায়িত হয়নি বলেই অনেক মিল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমরা এখন আগের তুলনায় মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ উৎপাদন করতে পারছি। আর এসব কল বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়েছেন শত শত শ্রমিক। বারিক খান বলেন, “পাটের বস্তা ব্যবহার আইন-২০১০ বাস্তবায়িত হলে স্থানীয় বাজারে পাটের চাহিদা বাড়বে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভরশীলতা কমবে। এতে করে পাট শিল্পখাত আত্মনির্ভরশীল খাত হিসেবে গড়ে উঠবে। আর বন্ধ পাটকলগুলো চালু হওয়ার পাশাপাশি গড়ে উঠবে নতুন নতুন পাটকল।” বিজেএমএ সূত্র আরও জানায়, গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন (বিজেএমসি), বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন(বিজেএমএ), বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) মিলে মোট ৮ লাখ ১৬ হাজার ৯৯১ মেট্রিক টন পাট উৎপাদন করে এবং রপ্তানি করে ৭ লাখ ৮৫ হাজার ৬৩ মেট্রিক টন পাট ও পাটপণ্য। এর মধ্যে বিজেএমএ উৎপাদন করে ২ লাখ ১১ হাজার ৬০৪ মেট্রিক টন এবং রপ্তানি করে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৭০ মেট্রিক টন পাট ও পাটপণ্য।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: